আন্তর্জাতিক ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবের রেড কার্পেটে অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। পরনে বাংলার ঐতিহ্যবাহী শাড়ি। স্লিভলেস ব্লাউজ, খোলা চুল, মানানসই গয়না এবং মেকআপে নিজেকে সাজিয়েছেন শ্রীলেখা। এত সম্মানিত উৎসবে যেখানে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছেন শ্রীলেখা, সেখানে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁর ফ্যাশন সেন্স নিয়েও আলোচনা হওয়া স্বাভাবিক। যে শিল্পীর শাড়িতে তিনি সেজেছেন তিনি অর্পণ দেবনাথ। সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রীলেখার প্রতি নিজের কৃতজ্ঞতার কথা জানালেন তিনি।
অর্পণ লিখেছেন, ‘একজন শিল্পীর কাছে তার কাজের স্বীকৃতি ঠিক কতটা, তার মাপকাঠি আমার জানা নেই। তবে কর্ম জীবনের একটা মাইল স্টোন হয়ে থাকবে এই অধ্যায়টা। একজন বাঙালি হিসেবে খুব গর্ব বোধ করি যখন আর একজন বাঙালি শ্রীলেখা মিত্র কোনও ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যাটফর্মে (78th venice flim festivals 2021…. Red carpate ) আমার দেওয়া শাড়ি পরে আমার কাজের মান্যতা দেন। শিল্পী হিসাবে এটা আমার একটা বড় পাওনা।’
আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্তের তৃতীয় ছবি, ‘ওয়ানস আপন এ টাইম ইন কলকাতা’ ৭৮ তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান করে নিয়েছে। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন শ্রীলেখা। এই ছবির জন্য বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে সম্পূর্ণ অচেনা মানুষদের কাছ থেকে প্রশংসা পেয়ে আপ্লুত শ্রীলেখা। সেই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। উৎসব প্রাঙ্গনে ঘুরে ঘুরে প্রচুর সেলফি তুলেছেন শ্রীলেখা। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তা শেয়ারো করে দিয়েছেন অনুরাগীদের সঙ্গে। কখনও বা সঙ্গে পেয়ে গিয়েছেন ইতালিয়ান অভিনেত্রী মিরিয়ামকে। ভারত থেকে যাওয়ার পর প্রথমে জুরিখে বেশ কিছুদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়েছিল শ্রীলেখাকে। নিজের মতো করে শহর ঘুরেছেন তিনি। ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যাওয়ার সব খরচ একাই বহন করেছেন বলেও ফেসবুক লাইভে জানিয়েছিলেন শ্রীলেখা। কখনও ফ্যাশনেবল পোশাকে সেলফি, কখনও অচেনা শহরে সারমেয় প্রেম, কখনও নিজের সঙ্গে কফি ডেট, কখনও বা সেই শহরের সাইকেলে চড়ে প্রতিবাদ মিছিল- সবই ফ্রেমবন্দি করেছেন শ্রীলেখা।
কখনও ট্রোলিংয়ের জবাব দিচ্ছেন নিজস্ব ভঙ্গিতে। বিদেশ সফরে যাওয়ার আগে ‘নির্ভয়া’র ডাবিং করেছেন। নিজের প্রথম ছবি ‘বিটার হাফ’-এর কাজও শেষ করেছেন। কখনও বা রাস্তার কুকুর দত্তক নিলে কফি ডেটে গিয়েছেন। কখনও আবার ব্যস্ত থেকেছেন শুটিংয়ে। এরই মধ্যে পরবর্তী ছবির পরিচালনার জন্যও তৈরি হয়েছেন। সব মিলিয়ে কাজের মধ্যে থাকতে চান অভিনেত্রী। এই বিদেশ সফর তাঁর কাজের, তাঁর সাফল্যের স্বীকৃতি।
শ্রীলেখার জীবনে স্ট্রাগল কম নেই। স্পষ্ট কথা স্পষ্ট ভাবে বলেন তিনি। বহুবার ট্রোলিং সামলাতে হয়েছে। কিন্তু কোনও কিছুতেই ভেঙে পড়া তাঁর স্বভাব নয়। বরং পজিটিভ থাকতে ভালবাসেন। অনুরাগীদেরও সেই পজিটিভ থাকার বার্তাই দেন। প্রতিটি কাজে নিজেকে নতুন করে ভাঙেন। নিজের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। নিজের পারফরম্যান্স কী ভাবে আরও ভাল করা যায়, তার নিরন্তর প্রয়াস থাকে শ্রীলেখার। বিদেশ সফরের আপডেট দেওয়ার মধ্যেও তাঁর সেই পজিটিভিটির খোঁজ পেয়েছেন দর্শকের বড় অংশ।