২০ নভেম্বর। অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রর জীবনে একটি বিশেষ দিন। আজ তাঁর বাবার জন্মদিন। একই সঙ্গে এই দিনেই ২০০৩-এ বিয়ে করেছিলেন তিনি। সে দাম্পত্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। একমাত্র মেয়েকে কোপেরেন্টিংয়ের মাধ্যমে বড় করে তুলছেন তিনি। কিন্তু বাবাকে ছাড়া এই প্রথম বাবার জন্মদিন। বাবার না থাকাটা, বাবার চলে যাওয়াটা এখনও পর্যন্ত মেনে নিতে পারছেন না অভিনেত্রী।
TV9 বাংলাকে শ্রীলেখা বললেন, “বাবা অম্বর রেস্তোরাঁয় যেতে খুব পছন্দ করত। খুব ভাল খাবার, এই, ওই… বলত। বাবা আমারই মতো। সবাইকে নিয়ে একটু ভাল থাকতে চাইত। প্ল্যান করত, অম্বরে একটা প্ল্যান করব… টুম্পা, তুই, অমুক, তমুক…। ভাইয়ের বউ বলল, দিদিয়া চলো তা হলে অম্বরে আমরা যাই। মাইয়ার আইসিএসসি… ও বলল চলো।”
বাবার জন্মদিনেই বিয়ে করেছিলেন শ্রীলেখা। তা কি ঘটনাচক্রে? শ্রীলেখা বললেন, “হ্যাঁ, ওটা একেবারেই কোইনসিডেন্স। ওটা প্ল্যান করে করিনি।” এ দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বিয়ের দুটি শেয়ার করেছেন শ্রীলেখা। একটিতে কনের সাজে তিনি। আর একটিতে তাঁর সঙ্গে বাবা। শ্রীলেখা সোশ্যাল ওয়ালে লিখেছেন, ‘কোনও কোনও দিন জীবনে চিরস্থায়ী দাগ রেখে যায়…। ২০০৩-এ ২০ নভেম্বর আমি বিয়ে করেছিলাম। ২০ নভেম্বরই বাবার জন্মদিন। দুটোই আমার জীবনে অতীত। আমিই থেকে গেলাম…।’
বাবাকে হারিয়েছেন কিছুদিন আগে। এখনও সেই ব্যক্তিগত ক্ষতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি শ্রীলেখা। এখনও তাঁর সোশ্যাল ওয়ালে বাবাকে নিয়েই হাহাকার। প্রতি মুহূর্তে বাবার কথা মনে পড়ছে তাঁর। বাবাকে মিস করছেন। সেই অনুভূতি ভাগ করে নিচ্ছেন ভার্চুয়াল দুনিয়ায়। এর মধ্যেই ধীরে ধীরে কাজেও ফিরেছেন বটে। কলটাইম, মেকআপ, শুটিংয়ের বাস্তব দুনিয়ায় নিজেকে অভ্যস্ত করে তুলছেন। কাজে বেরনোর মুহূর্ত ভাগ করে নিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সদ্য ফেসবুকে শ্রীলেখা লিখেছিলেন, ‘এখনও ভয়েজ রেকর্ড করে পাঠাচ্ছি বাবার ফোনে। ‘হ্যাঁ বাবা শুটিংয়ে পৌঁছে গিয়েছি। শরীর ঠিক আছে। খুব ভাল হচ্ছে শুটিং’, ইত্যাদি ইত্যাদি…। বাবা হিসেবে দেখতে চাইতো মেয়ের ভাল কাজ, মেয়ের প্রশংসা চারদিকে। বলেছিলাম ‘একটু ওয়েট করো বাবা। ‘ওয়ান্স আপঅন আ টাইম ইন ক্যালকাটা’ রিলিজ করতে দাও।’ বাবা বলেছিল, ‘তোর এই ছবিটা দেখার জন্য বোধহয় এখনও বেঁচে আছি।’ একরাশ আফসোস আর আক্ষেপ নিয়ে আমার বেঁচে থাকার পালা যতদিন না…।’
মাকে কয়েক বছর আগেই হারিয়েছিলেন শ্রীলেখা। এ বার চলে গেলেন বাবাও। কার্যত একা হয়ে পড়লেন তিনি। মা, বাবার ছবি শেয়ার করে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘আমার আইডল আমার মা, বাবা, আমার সব কিছু, আমি হারিয়ে ফেললাম।’ কখনও বা বাবার ফেসবুক পেজের লিঙ্ক শেয়ার করে শ্রীলেখার আকুতি, ‘আমি তোমায় ছেড়ে বাঁচবো কী করে বাবা, আমি তো পারছি না বাবা, আমায় নিয়ে যাও।’ মা চলে যাওয়ার পর বাবাকে আগলে রাখতেন শ্রীলেখা। বাবা তাঁর বন্ধুর মতো হয়ে গিয়েছিলেন। গত ২৮ জুলাই বাবার সঙ্গে শেষ ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন শ্রীলেখা।
আরও পড়ুন, Sudipta Chakraborty: করোনার পরে বাংলা ছবিতে হাউজফুল আমাদের কাছে বড় ব্যাপার: সুদীপ্তা চক্রবর্তী