AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Ziaul Faruq Apurba: শাহরুখ খান খুবই মোটিভেটিং… সবসময় এটাই মনে হয়, কপি না করে ফেলি: জ়িয়াউল ফারুক অপূর্ব

Ziaul Faruq Apurba: কাঁটাতারটা না থাকলে তিনি এপারেরই হতেন। কিন্তু দেশ ভাগের কারণে ওপারেই থেকে গেলেন বাংলাদেশি অভিনেতা জ়িয়াউল ফারুক অপূর্ব। এপারে এসেছেন বাংলা সিনেমায় কাজ করতে। এই প্রথম বড় পর্দায় কাজ করবেন ছোট পর্দার তারকা। তাঁর আগমনে দারুণ উচ্ছ্বসিত কলকাতাবাসী। অপূর্বর সঙ্গে আড্ডা জমল TV9 বাংলার।

Ziaul Faruq Apurba: শাহরুখ খান খুবই মোটিভেটিং... সবসময় এটাই মনে হয়, কপি না করে ফেলি: জ়িয়াউল ফারুক অপূর্ব
কলকাতায় বাংলাদেশি অভিনেতা জ়িয়াউল ফারুক অপূর্ব (ছবি: সংগৃহীত)
| Updated on: Oct 04, 2023 | 7:25 PM
Share

স্নেহা সেনগুপ্ত

ইউটিউবে স্ট্রিম হওয়া নাটক কিংবা টেলি নাটক থেকেই তাঁর কেরিয়ারের উত্থান। কেবল বড় পর্দাই নয়, আপাতদৃষ্টির ছোট-ছোট মাধ্যম থেকেও যে খ্যাতির আসমান স্পর্শ করা যায়, তা প্রমাণ করেছেন এই ব্যক্তি— অভিনেতা জ়িয়াউল ফারুক অপূর্ব। এপারে বাস না হলেও, এপারের হাজার-হাজার দর্শকের মনে গেঁথে গিয়েছে তাঁর নাম। তাই তো তাঁর আগমনে হইচই পড়ে গিয়েছে কলকাতায়। তিনি এসেছেন বাংলা সিনেমায় অভিনয় করতে। এই প্রথম তাঁর আগমন ঘটছে বড় পর্দায় এবং তা ঘটছে এপার বাংলাতেই। এমন ঘটনা সম্ভব করেছেন পরিচালক প্রতিম ডি গুপ্ত এবং প্রযোজক ফিরদাউসুল হাসান। প্রতিমের নতুন বাংলা ছবি ‘চালচিত্র’তে এক পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করছেন অপূর্ব। বাংলাদেশি নাটকের ‘ইনটেন্স’ রোম্যান্টিক হিরো হলেন এপারের ভিলেন। তাঁর সঙ্গে কথোপকথনে TV9 বাংলা।

প্রশ্ন: আপনি কি জানেন এখানে আপনার কত্ত-কত্ত ভক্ত?

অপূর্ব: সক্কলকে আমার হয়ে ‘হ্যালো’ বলতে চাই।

প্রশ্ন: কলকাতায় এসে কেমন লাগছে?

অপূর্ব: খুব ভাল লাগছে। দেখেই বুঝতে পারছেন, সবাই এত ভালবাসা দিচ্ছেন, সম্মান দিচ্ছেন, এত আন্তরিক সবাই… অ্যামেজ়িং!

প্রশ্ন: আপনি কি জানেন, আপনার সঙ্গে যে অভিনেত্রীরা কাজ করেছেন, তাঁরা নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করেন…

অপূর্ব: তাই নাকি! এটা ওঁদের উদারতা… কী আর বলব!

প্রশ্ন: এ দেশে অনেক দেরিতে এলেন কাজ করতে, আগে তো অনেকে চলে এসেছেন… কিছুদিন আগে আরফান নিশো এসেছিলেন। মোশারাফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, তাসনিয়া ফারিন, জয়া আহসান আগেই এসেছেন…

অপূর্ব: কীভাবে বোঝাব! ব্যস্ততার কারণে হয়ে ওঠেনি আসলে। ভাগ্যেরও ব্যাপার থাকে একটা। আর আমি বিশ্বাস করি প্রত্যেক জিনিসেরই একটা সময় থাকে। হয়তো আমার ভাগ্যে এই সময়টা ছিল। যখন যেটা হওয়ার কথা, তখনই সেটা হবে। আমি খুব লাক-এ বিশ্বাস করি আর কী!

কলকাতায় বাংলাদেশি অভিনেতা জ়িয়াউল ফারুক অপূর্ব। (নিজস্ব চিত্র)

প্রশ্ন: রোম্যান্টিক গল্পে এবং পারিবারিক ছবিতেই আপনাকে দেখা গিয়েছে বরাবর। অ্যাকশন করেননি খুব একটা। আপনি নিজেও পারিবারিক ড্রামা বেশি পছন্দ করেন…

অপূর্ব: ঠিকই বলেছেন আপনি। পারিবারিক গল্পই আমার বেশি ভাল লাগে। অনেকটা রিলেট করতে পারি।

প্রশ্ন: প্রতিমের ‘চালচিত্র’-এ তো সেটা হল না। সেখানে তো আপনি একজন পুলিশ অফিসার…

অপূর্ব: পরিবারের বাইরে আসলে কোনও গল্পই নেই। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের মধ্যেই সে বাস করে। অনেকগুলো পরিবার থাকে। ‘চালচিত্র’-র গল্পটাও কিন্তু পরিবারের বাইরে নয়।

প্রশ্ন: ‘চালচিত্র’-এ চরিত্রে নাম কী আপনার?

অপূর্ব: এটা আসলে বলতে চাই না। দর্শক এখন খুব স্মার্ট। আর এটা থ্রিলার গল্প। একটু বলে দিলেই অনেক কিছু বুঝে নিতে পারেন। সিনেমা রিলিজ় করার সময়ই দর্শক দেখুক এবং জানুক পুরোটা—সেটাই চাই।

কলকাতায় বাংলাদেশি অভিনেতা জ়িয়াউল ফারুক অপূর্ব। (নিজস্ব চিত্র)

প্রশ্ন: বাংলাদেশের নাটকেও আপনি অ্যাকশন করেছেন এবং সেটা দেখে খুব রিয়্যালিস্টিক মারামারি বলে মনে হয়েছে…

অপূর্ব: আমরা চেষ্টা করি রিয়্যালিস্টিক করতে ব্যাপারটা। একটু রনেস (rawness) রাখতে চাই।

প্রশ্ন: এখানেও কি সেই রনেস দেখা যাবে?

অপূর্ব: আছে। ‘চালচিত্র’-তেও আছে সেটা।

প্রশ্ন: কাজের অভিজ্ঞতার দিক থেকে ওপার বাংলা এবং এপার বাংলায় কি কোনও পার্থক্য আছে?

অপূর্ব: আমার কাছে সবকিছু একই রকম লাগছে। সেটার ক্রেডিট আমি দেব ছবির টিমমেটদের। ওরা খুব ভাল। সারাক্ষণই মনে হচ্ছে, আমি ওদের পরিবারেরই অংশ। এটা কিন্তু একটা বিশাল পাওনা।

প্রশ্ন: প্রতিমের আগের কাজ দেখেছেন?

অপূর্ব: দেখেছি। ‘টুথপরি’ দেখেছি। ‘মাছের ঝোল’ দেখেছি। খুব ভাল পরিচালক। দারুণ কিছু কনসেপ্টের উপর কাজ করছেন।

প্রশ্ন: আর কাদের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা আছে আপনার?

অপূর্ব: ভাল যে কারও সঙ্গেই আমার কাজ করার ইচ্ছা আছে। অনেক বড়-বড় মাপের পরিচালকেরা আছেন এখানে। ছোটবেলায় যাঁদের কাজ দেখে বড় হয়েছি, তাঁদের আর পাব কোথায়…

প্রশ্ন: আপনার অভিনয় দেখে অনেকে মনে করেন আপনি শাহরুখ খানের ভক্ত। সেটা কি সত্যি?

অপূর্ব: না। ব্যাপারটা সে রকম ঠিক নয়। আমরা তো শাহরুখকে সকলেই পছন্দ করি। কিন্তু আমি কেবল শাহরুখ খানের ভক্ত নই। ওনার ছবিও আমি খুব কম দেখি। আমার কাছে খুবই মোটিভেটিং মনে হয় শাহরুখের কাজ। সবসময় এটাই মনে হয়, কপি না করে ফেলি। সেই ভয়েই বরং ওনার কাজ খুব একটা দেখি না।

প্রশ্ন: আপনি তা হলে কাকে ফলো করেন?

অপূর্ব: কাউকেই করি না। আসলে নিজেকে ফলো করি। আমার কাছে হিরো আমার বাবা।

প্রশ্ন: তিনিও কি অভিনেতা?

অপূর্ব: না, তিনি অভিনয় করেননি কখনও। কিন্তু আমার দেখা অন্যতম সুন্দর এবং হ্যান্ডসম মানুষের মধ্যে তিনি একজন।

কলকাতায় বাংলাদেশি অভিনেতা জ়িয়াউল ফারুক অপূর্ব। (সংগৃহীত চিত্র)

প্রশ্ন: আপনার চেয়েও হ্যান্ডসাম?

অপূর্ব: আমার চেয়ে অনেক-অনেক বেশি হ্যান্ডসম আমার বাবা। বাবার ৫ শতাংশ নিয়ে জন্ম নিয়েছি আমি। বাবা এবং আমার দাদুর পার্সোন্যালিটির যদি আর-একটু পেতাম, লাকি হতাম আসলে (হাসি)।

প্রশ্ন: ওপারে অনেকে অভিনেত্রীর সঙ্গে অভিনয় করেছেন। মেহজ়াবিন, তানজ়িন তিশা, সাবিলা নুর, কেয়া পায়েল, ইত্যাদি… কার সঙ্গে কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন আপনি?

অপূর্ব: নতুন মধ্যে সবার সঙ্গেই কাজ করতে ভাল লাগে। কিন্তু আমার পার্সোন্যালি খুব পছন্দের হলেন তারিন জাহান। তারিন আপুর থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আফসানা মিমি আছেন, জয়া আহসান আছেন। বিপাশা হায়াত আছেন। আরও অনেকে আছেন। ওঁদের ভক্ত আমি।

প্রশ্ন: এখানকার কারও নাম করবেন?

অপূর্ব: এখানেও অনেকে আমার প্রিয়। স্বাভাবিকভাবে মহানায়কের কথা বলতেই হয়। তাঁর অভিনীত ‘হারানো সুর’ আমার খুব প্রিয়। এটার কোনও অপশন নেই আর।

প্রশ্ন: উত্তম-সুচিত্রার পর আর কোন জুটিকে এখানে আপনার ভাল লাগে?

অপূর্ব: এই প্রশ্নের উত্তরটা না দিই। এক্কেবারে নতুন তো। ডেবিউ হচ্ছে। কারও নাম না নিয়ে তাঁকে দুঃখ দিতে চাই না আমি।

প্রশ্ন: বাংলাদেশে কিন্তু পোল হয়েছিল। আরফান নিশো আসার পর জানতে চাওয়া হয়েছিল, বাংলাদেশের কোন অভিনেতাকে এপারে দেখতে চান দর্শক। সকলে কিন্তু আপনার নাম করেছিলেন…

অপূর্ব: বাহ্। এটা কিন্তু আমি জানতামই না। দর্শকের কাছে সারাজীবনই কৃতজ্ঞ আমি। জানি না দর্শকের এত ভালবাসার যোগ্য কি না আমি। যে নিঃস্বার্থ ভালবাসা তাঁরা আমাকে দিয়ে চলেছেন প্রতিনিয়ত, সেটা আমার জন্য বিরাট পাওয়া। সারাটা জীবনই কৃতজ্ঞ থাকব তাঁদের কাছে।

কলকাতায় বাংলাদেশি অভিনেতা জ়িয়াউল ফারুক অপূর্ব। (নিজস্ব চিত্র)

প্রশ্ন: আর কিছুদিন পরই তো আমাদের এখানে পুজো। রাস্তায় বাঁশও পড়ে গিয়েছে। এখানেই থাকবেন কি?

অপূর্ব: না, আমি তো চলে যাচ্ছি বাংলাদেশ। থাকছি না। সেটাতেই দুঃখ হচ্ছে খুব। অনেক সময় ঈদেও কাজ করতে হয়। পুজোতেও। ফেস্টিভ বলে আমাদের সত্যিই কিছু নেই আর কী! মানুষকে বিনোদন দিই আমরা, নিজেদের কম হয় আসলে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশে আপনার সহ-অভিনেতারা বলেন পরিচালনায় আপনার খুব ঝোঁক… কোনও পরিকল্পনা আছে?

অপূর্ব: সামনেই হয়তো করব। ইচ্ছা আছে খুবই।

প্রশ্ন: এপারে না ওপারে…

অপূর্ব: ওই যে বললাম, কপালে যেটা লেখা আছে।

প্রশ্ন: ওপার-এপার ব্যাপারটা আপনার ভাল লাগে?

অপূর্ব: শিল্পের কোনও গণ্ডি হয় না। যদিও আমাদের মাঝে তো সত্যি-সত্যিই একটা কাঁটাতার আছে। সেই বাস্তবের বাইরে ২টোই বাংলা। আসলে একটাই বাংলা।

প্রশ্ন: আপনি ফুডি?

অপূর্ব: প্রচণ্ড খেতে ভালবাসি।

প্রশ্ন: কলকাতার খাবার আপনার কেমন লাগল?

অপূর্ব: সিঙাড়া খেয়েছি একটা দোকানের। খুব মজা লেগেছে। ভেটকির সিঙাড়া খেয়েছি। ওপারের সঙ্গে এপারের অধিকাংশ খাবারেরই খুব মিল দেখলাম। আর একটা জিনিস খেয়ে মজা লেগেছে, তা হল রাবড়ি। ওটা বাংলাদেশে খাইনি। এখানে খেলাম। ছোটবেলায় নন্টে-ফন্টে পড়তাম প্রচুর। কেল্টুর ওদের ওখানে খাবারের নাম পড়েছিলাম – চিকেন কবিরাজি টবিরাজি! চিকেন কবিরাজি খেয়ে যদিও অত মজা লাগেনি আমার। কিন্তু রাবড়ি, সিঙাড়া, ফিশফ্রাই খেয়ে মজা পেয়েছি খুব।

প্রশ্ন: এখান থেকে কী নিয়ে যাবেন?

অপূর্ব: আমি পাঞ্জাবি পরতে খুব ভালবাসি। খুব সুন্দর-সুন্দর পাঞ্জাবি নিয়ে যাব হয়তো।

প্রশ্ন: যে পাঞ্জাবিটা পরে আছেন…

অপূর্ব: এটাও এখানকারই। এখান থেকেই কিনেছি….

গ্রাফিক্স: শুভ্রনীল দে