মৃত্যুর আগে ফাটাকেষ্টর কালীকে শেষবার একথা বলেছিলেন উত্তম, শুনলে বুক কেঁপে উঠবে!
উত্তর কলকাতার একটি সরু গলিতে প্রায় ৬৮ বছর ধরে চলে আসছে কালীপুজো। ক্লাবের নাম নব যুবক সঙ্ঘ হলেও, এই পুজো ফাটাকেষ্টর পুজোর নামেই খ্যাত। কেননা, এক সময় কুখ্যাত মাস্তান কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত ওরফে ফাটাকেষ্টর হাতেই শুরু হয় এই কালীপুজো। এই পুজোতে হাজির হতেন বলিউডের অমিতাভ বচ্চন, রাজেশ খান্না, বিনোদ খান্নার মতো তাবড় শিল্পীরা। আর উত্তম কুমারের হাজিরা ছিল নিয়ম করে প্রতিবছর।

যাঁরা উত্তম কুমারকে কাছ থেকে চিনতেন, তাঁরা জানতেন, উত্তম কতটা ঈশ্বর বিশ্বাসী ছিলেন। শত ব্যস্ততা থাকলেও, সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে, তাঁর প্রথম কাজ ছিল ঠাকুর ঘরে পুজো। তা ভবানীপুরের বাড়িতে হোক কিংবা পরে ময়রাস্ট্রিটের বাড়ি। দুই বাড়ির ঠাকুর ঘরের দায়িত্বই ছিল উত্তমের কাঁধে। উত্তমের স্বপ্নে পাওয়া গণেশের কথা তো প্রায় সবাই জানে। তবে এই গল্প উত্তম ও কলকাতার জনপ্রিয় ফাটাকেষ্টর কালীপুজোর।
উত্তর কলকাতার একটি সরু গলিতে প্রায় ৬৮ বছর ধরে চলে আসছে কালীপুজো। ক্লাবের নাম নব যুবক সঙ্ঘ হলেও, এই পুজো ফাটাকেষ্টর পুজোর নামেই খ্যাত। কেননা, এক সময় কুখ্যাত মাস্তান কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত ওরফে ফাটাকেষ্টর হাতেই শুরু হয় এই কালীপুজো। এই পুজোতে হাজির হতেন বলিউডের অমিতাভ বচ্চন, রাজেশ খান্না, বিনোদ খান্নার মতো তাবড় শিল্পীরা। আর উত্তম কুমারের হাজিরা ছিল নিয়ম করে প্রতিবছর। জানা যায়, কালীপুজোর কয়েকদিন আগে নিয়ম করে উত্তমের বাড়িতে মিষ্টির প্যাকেট ও নিমন্ত্রণপত্র হাতে নিজেই পৌঁছে যেতেন ফাটাকেষ্ট। কালীপুজোয় আসার নিমন্ত্রণ করে আসতেন উত্তমকে। উত্তমও নাকি প্রতিবছর অপেক্ষা করে থাকতেন এই নিমন্ত্রণে। কেননা শোনা যায়, ফাটাকেষ্টর কালীপুজোয় গিয়ে, মা কালীর কাছ তিনি যা চেয়েছিলেন, তা পেয়েছেন। মা কালী দুাত উজার করে ভরিয়ে দিয়েছিলেন উত্তমকে।
১৯৮০ সালের জুলাই মাসে প্রয়াত হন মহানায়ক। ঠিক তাঁর আগের বছর ১৯৭৯ সালের ফাটাকেষ্টর কালীপুজোয় গিয়ে উত্তম যা বলেছিলেন, তা শুনে সেই সময় কেঁদে ফেলেছিলেন তাঁর ভক্তরা। উত্তম যেন আগে থেকেই টের পেয়েছিলেন, সেই বছরের কালীপুজোই তাঁর জীবনের শেষ মা কালী দর্শন।
এক বিনোদনমূলক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, প্রতিবারের মতো সেই বারও ফাটাকেষ্টর কালীপুজোয় সময়মতো পৌঁছে গিয়েছিলেন উত্তম কুমার। উত্তমকে এক ঝলক দেখার জন্য তখন ভিড় উপচে পড়ছিল উত্তর কলকাতার সেই সরু গলিতে। ভিড় কাটিয়ে উত্তম গাড়ি থেকে নেমেই চলে গেলেন প্যান্ডেলের ভিতরে। দেবী দর্শনের সময় হঠাৎই উত্তমের চোখে জল। পাশে দাঁড়িয়ে ফাটাকেষ্ট ও উত্তমের ম্যানেজার। খুব জোরেই উত্তম বলে উঠলেন, মা গো তুমি আমাকে সব দিয়েছ। আমি কৃতজ্ঞ। তবে জানি না কেন, মা আমার মন বলছে, এটাই আমার তোমাকে শেষবার আসা। আমাকে একটু শান্তি দিও মা।
সেদিন উত্তমের কণ্ঠস্বরে শোনা গিয়েছিল হতাশার সুর। যাঁরা সেদিন উত্তমের এই কথা শুনতে পেয়েছিলেন, হতবাক হয়েছিলেন। তিনি তো মহানায়ক, মেয়েদের স্বপ্নের পুরুষ। তাঁর মনে কী দুঃখ! কিন্তু মহানায়ক অনুরাগীদের দিকে ভুবন ভোলানো সেই হাসি দিয়ে, যাওয়ার আগে বলেছিলেন, শুভ দীপাবলি, আবার দেখা হবে…
