যোগব্যায়াম (Yoga) সব বয়সি মানুষের জন্যই উপকারী। বাচ্চাদের জন্যও যোগব্যায়াম কোনও বিস্ময়কর জিনিস নয়। কারণ ছোটবেলা থেকেই যদি স্বাস্থ্যের ভিত মজবুত করা যায়, তাহলে শিশু বয়স থেকেই মানসিক ও শারীরিক সব সমস্যাই হ্রাস পেতে পারে। শরীরচর্চা শুধু বড়দের জন্য, তা একেবারেই নয়। বিশেষজ্ঞদের মত, ছোটবেলা থেকে যোগা (Yoga for Kids) শিখলে শুধু যে শরীর সুস্থ থাকে তাই নয়, নিয়মিত যোগাভ্যাসের (Yoga Practice) কারণে বাচ্চারা জীবনের সঠিক পাঠও শেখে। নিয়মিত যোগব্যায়াম মনকে শান্ত করে ও দৃঢ় করতে সাহায্য করে। আধুনিক সমাজে শিশুদের আচার-ব্যবহার, পড়াশোনার চাপ, সঠিক মনের মানুষ হিসেবে বেড়ে তোলার জন্য যোগব্যায়াম এখন একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে গিয়েছে। খুব ছোট থেকে শিশুমনকে তৈরি করার জন্য যোগাব্যায়াম হল বাবা-মায়েদের অন্যতম হাতিয়ার।
সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই মানুষের মত মানুষ গড়ে তোলার জন্য যোগই কেন প্রধান ও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ, তা সব বাবা-মায়েদেরই জানা উচিত।
চাপ কমাতে ও মনোযোগ বাড়ায়
আধুনিক বিশ্বে এখন সব শিশুই দ্রুতগতিতে সবকিছু রপ্ত করছে। হাতের মুঠোয় মোবাইল, চোখের সামনে ল্যাপটপ তো আছেই, চারপাশ থেকে নানান তথ্য শোষন করছে শিশুরা। তাতে বিভিন্ন ধরণরে ব্যক্তিগত ও সামাজিক চাপ অনুভব করতে শুরু করে। এই চাপগুলিকে মোকাবিলা করার জন্য যোগব্যায়াম করা উচিত। যোগার ফলে মন স্থির থাকে ও শরীর-মন একসঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এক শুদ্ধ আত্মার গঠন করে। গবেষণায় জানা গিয়েছে, শিশুরা যোগব্যায়াম অনুশীলন করে নিজেদের এবং তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলে। এর জেরে ছোটবেলা থেকেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে, চাপের মুখে নিজেকে শান্ত রাখতে ও উপস্থিত বুদ্ধিতে শান দিতে সাহায্য করে।
শক্তি ও ফ্লেক্সিবিলিটি উন্নত করতে
যোগব্যায়াম অনুশীলনের কারণে একটি শিশুকে তার শক্তি, নমনীয়তা এবং সামগ্রিক ভারসাম্য উন্নত করতে সাহায্য করে। নিয়মিত যোগ অনুশীলন তাদের আঘাতের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করবে। তাদের ক্রমবর্ধমান শরীরে শক্তি উত্পন্ন হয়, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং তাদের খাদ্যাভ্যাস স্বাস্থ্যকর হয়।
মনোযোগ বাড়ে
যোগব্যায়াম অনুশীলন একটি শিশুকে তাদের মন এবং শরীরের মধ্যে সংযোগ উন্নত করতে সাহায্য করে। শ্বাস প্রশ্বাস, পেশির গঠন উন্নত করতেও সাহায্য করে। যেসব শিশু চঞ্চল, দুষ্টু, অবাধ্য, তাদের শান্ত এ মনোযোগ বৃদ্ধি করতে যোগব্যায়াম দারুণ কার্যকরী। স্কুলে পারফরম্যান্সের উন্নতি,আত্মবিশ্বাসে বৃদ্ধি, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, আরও ভাল সতর্কতা এবং সচেতন হতে সাহায্য করে।
উদ্বেগ এবং হাইপারঅ্যাকটিভিটির সঙ্গে মোলাবিলা করে
শিশুদের জীবনের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। কখনও কখনও জটিল আবেগ, চিন্তাভাবনা ও পরিস্থিতি বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম শিশুমনে উদ্বেগ মোকাবিলা করতে ও হাইপারঅ্যাকটিভিটি কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত মেডিটেশন ও শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে শিশুর ব্যক্তিত্বের উপর প্রভাব পড়ে। আচরণ নিয়েও কোনও সমস্যা তৈরি হয় না।
গভীর ঘুম
ক্রমাগত চাপ বাড়তে থাকলে তাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। মেডিটেশন এবং যোগব্যায়াম শিশুদের আত্ম-প্রশান্তির কৌশলগুলি দিয়ে সজ্জিত করে। দিনের শেষে শান্ত হয় এবং ঘুমানোর আগে মন ও শরীরকে শান্ত করে। বাচ্চাদের জন্য এই যোগব্যায়াম রুটিনগুলি স্থাপন করলে শিশু এবং আশেপাশের অন্য সবার জন্য বাড়িতে শান্তি এবং স্বাচ্ছন্দ্যের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।