মস্তিষ্কের রক্তনালী বন্ধ হয়ে গেলে বা ফেটে গেলে স্ট্রোক বা ব্রেন অ্যটাক হয়। আমাদের শরীর যেভাবে গঠিত, সেখানে মস্তিষ্ক প্রয়োজনীয় পরিমাণ অক্সিজেন সংরক্ষণ করতে পারে না। কয়েক মিনিটের জন্য রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেনের সরবরাহ ব্যাহত হলে তখনই ঘটে দুর্ঘটনা।
তাই মস্তিষ্কে অক্সিজেল সমৃদ্ধ রক্ত সরবরাহ করার জন্য রক্তনালীগুলির যোগাযোগের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। ধমনীতে বাধা তৈরি হলে, রক্তনালীতেও রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সেখানে অক্সিজেনের মতো মূল্যবান সম্পদ রক্তের মধ্যে অভাব দেখা যায়। পাশাপাশি স্নায়ু কোষগুলিও অক্সিজেন সরবরাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এমন অবস্থা যদি তিন-চার মিনিটের বেশি সময় ধরে চলতে থাকে, তাহলে মস্তিষ্কের টিস্যুগুলি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। মস্তিষ্কের টিস্যুতে স্নায়ু কোষগুলি সব কাজ করে থাকে। স্মৃতিশক্তি, কথা বলা, চলাচলের নিয়ন্ত্রণ করতে অন্যান্য কোষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলিতে অক্সিজেন সরবরাহ কম হলে বা চিকিত্সা না করালে স্ট্রোকের কারণে মারা যান বহু মানুষ। প্রসঙ্গত, মস্তিষ্কের ডান দিকে স্ট্রোক হলে শরীরের বাম দিকে প্রভাবিত হয়। তেমনি বামদিকে স্ট্রোক হলে ডান দিকে প্রভাবিত হয়।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, স্ট্রোকের প্রভাব মস্তিষ্কের ক্ষতির পরিমাণ এবং অবস্থানের উপর নির্ভর করে। স্ট্রোক হলে মানুষের শরীরে কী কী অক্ষমতা তৈরি হয়, জেনে নিন…
– শরীরের কোন অংশ নাড়াতে না পারা, সাধারণত তাকে পক্ষাঘাত বলা হয়।
– শরীরে যে কোনও অংশে দুর্বলতা
– অসাড়তা
– কথা বলতে বা বোঝার অক্ষমতা
– মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা
– খাবার গিলতে অসুবিধা
– দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাওয়া
– স্মৃতিশক্তি হ্রাস, বিভ্রান্তি ও দুর্বল বিচারবুদ্ধি
– ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন, মানসিক সমস্যা
স্ট্রোক হওয়ার আগে শরীরে মধ্যে কিছু লক্ষণ ধরা পড়ে, সেগুলি দ্রুত চিহ্নিত করবেন কীভাবে…
– মুখটি একদিকে পড়ে যেতে পারে, স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আগে ব্যক্তি কথা ও হাসতে পারে না। এমনকি মুখ ও চোখ পড়ে যেতে পারে।
– স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তি দুটি হাত উপরে তুলে পারে না। বাহুতে অসাড়তার কারণে উপরে তুলতে পারে না।
– কথায় অস্পষ্টতা বা বিকৃত হয়ে যেতে পারে। এমনকি অনেকসময় কথাও বলতে পারে না। কী বলছেন তাঁদের, তাও বুঝে উঠতে পারে না।
– এমন লক্ষণগুলি চোখে ধরা পড়লেই সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে উক্ত ব্যক্তিকে নিয়ে যান।
কয়েকটি সংকেত রয়েছে, যেগুলি উপেক্ষা কখনও এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়…
-মুখের মধ্যে দুর্বলতা ( চোখের পাতা বা ঠোঁট)
-বমি বমি ভাব
-মাথা ঘোরা
-অসাড়তা,
-ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা
-অস্পষ্ট কথা বলা
-মাথাব্যথা
আরও পড়ুন: Infectious Diseases: ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া থেকে দ্রুত সুস্থ হতে কী কী করবেন, রইল তারই সহজ টিপস