Infectious Diseases: ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া থেকে দ্রুত সুস্থ হতে কী কী করবেন, রইল তারই সহজ টিপস
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডেঙ্গু ছড়ানো এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায়। এরা সকালের আগে এবং সন্ধ্যার আগে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। সাধারণত, তারা গোড়ালি এবং কনুইতে মানুষকে কামড়ায়।
করোনা অতিমারির মধ্যেই সারা দেশে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২১ সালের প্রথম সাত মাসে অর্থাত্ চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত ভারতে ১৪ হাজারেরও বেশি ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার কেস ধরা পড়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথমেই রয়েছে উত্তরপ্রদেশের নাম। ডেঙ্গি জ্বরের প্রবাবে ইতোমধ্যেই বহু মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছেন, গত ২ সপ্তাহে ১১টি রাজ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। মুম্বই শহরে ইতোমধ্য়েই চিকিত্সা ব্যবস্থায় জর রাখা হচ্ছে। বাড়ানো হয়েছে হাসপাতালের বেডের সংখ্যা।
সরকারি প্রতিবেদন অনুসারে, মুম্বইয়ে এ বছর প্রায় ৩৬০টির বেশি ডেঙ্গির কেস ধরা পড়েছে। গতবছরে মাত্র ১২জনের ডেঙ্গি হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে তামিলনাড়ুতে সেপ্টেম্বরের গোড়া এখনও পর্যন্ত ২৬০০-এর বেশি ডেঙ্গির রোগীর রিপোর্ট জমা পড়েছে। অন্যান্য রাজ্যেও ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার জ্বরের প্রকোপ বাড়ায় চিন্তায় ঘুম উড়েছে চিকিত্সক থেকে প্রশাসনের।
ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার মধ্যে মিল কোথায়
ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া দুটিই মশাবাহিত রোগ। যদিও ম্যালেরিয়া একটি পরজীবী সংক্রমণ যা মহিলা অ্যানফিলিস মশা দ্বারা সংক্রমিত হয়। ডেঙ্গি একটি ভাইরাল সংক্রমণ যা এডিশ মশার দ্বারা ছড়িয়ে পড়ে। ম্য়ালেরিয়া ও ডেঙ্গির কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে, যেগুলি প্রায় এক। সেগুলি হল, মাথাব্যথা, পিঠের নিচের অংশে ব্যথা, ফ্লু-এর মতো অসুস্থতা, ঠান্ডা লাগা, বমি বমি ভাব, বমি, কাশি এবং ডায়রিয়া।
ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া মধ্যে পার্থক্য
দুটি রোগের মধ্যে একটি প্রধান পার্থক্য হল যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীর শ্বেত রক্তকণিকা ও প্লেটলেটের সংখ্যা হ্রাস পাবে। ম্যালেরিয়া রোগীর লাল রক্তকণিকা হ্রাস পেতে থাকে। ডেঙ্গি রোগীর ক্ষেত্রে শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুসকুড়ির মতো র্যাসেস বের হয়। অন্যদিকে ম্যালেরিয়া হলে এই লক্ষণ দেখা যায় না। ম্যালেরিয়া হলে পেটের বাম দিকের উপরের অংশে তীব্র ব্যাথা, না খেয়েই পেট ভরতি রয়েছে এমন অনুভূতি করা, তাপমাত্রার বৃ্দ্ধি, ঠান্ডা লাগা, ঘাম হওয়া এইসব লক্ষণ দেখা যা। ডেঙ্গির ক্ষেত্রে প্রধান উপসর্গ হল, ফুসকুড়ি বের হওয়া, চোখের পিছনে ব্য়াথা অনুভব করা, গলার গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া, তীব্র মাথাব্যাথা, বুক ধরফর করে ব্য়াথা ওঠা, অভ্যন্তরীন রক্তপাত ঘটে।
ডেঙ্গি ও ম্য়ালেরিয়া থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে ডায়েটে কী কী রাখবেন, কী কী করবেন, জেনে নিন…
ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গি উভয়ই যেহেতু মশার কামড়ে হয়, তাই প্রতিরোধ করার ধরনটাও এক রকম। মশার কামড় থেকে এড়িয়ে চলুন। রোগ থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে দৈনন্দিন ডায়েটে কিছু বিষেয় নজর রাখা উচিত।
সকালে উঠেই গুলকান্দ খান- একগ্লাস দুধের সঙ্গে এক গ্লাস জল মেশান। তাতে একচিমটে হলুদ , ২-৩টি কেশর ও ছোট ছোট জায়ফল যোগ করে মিশ্রণটির অর্ধেক পরিমাণ ফোটাতে দিন। ঠান্ডা বা গরম অবস্থায় খেতে পারেন। মিষ্টতা আনতে গুড় ব্যবহার করুন। এতে জ্বালাভাব কম হবেয ব্যাথা দূর করার জন্য মোক্ষম দাওয়াই।
পান্তা ভাত খান- পান্তা ভাতের জল শরীরের জন্য উপকারী। এতে অল্পপরিমাণ কালানমাক সন্ধক নুন, এক চিমটে হিং বা ঘি দিয়ে দিনে একাবার খান। এটি খেলে শরীরের ডিহাইড্রেশন লোপ পাবে. ক্ষুধা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
সারা দিনে প্রচুর পরিমাণে জল খান- প্রস্রাবের পরিমাণ পুনুরুদ্ধার করতে ও ইউরিনের রঙ পরিস্কার করতে সারা দিনে প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া উচিত।
সুপ্তা বাধাকোনাসনের অনুশীলন করুন
পিঠের ব্যথা, শরীরে ব্য়থা উপশম করতে, ক্লান্তিভাব ধূর করতে এই ব্য়ায়াম করতে পারেন।
মশার কামড় এড়িয়ে চলুন
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডেঙ্গু ছড়ানো এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায়। এরা সকালের আগে এবং সন্ধ্যার আগে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। সাধারণত, তারা গোড়ালি এবং কনুইতে মানুষকে কামড়ায়। অ্যানোফিলিস মশা যা মানুষের মধ্যে ম্যালেরিয়া ছড়ানোর জন্য দায়ী প্রধানত সন্ধ্যায় এবং রাতে কামড়ায়।
আরও পড়ুন: COVID 19: দ্রুত ছড়াচ্ছে ডেল্টা কোভিড ভ্যারিয়েন্ট! এখনও পর্যন্ত ১৮৫টি দেশ আক্রান্ত, জানাল WHO