গত এক মাস ধরে বিশ্বজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ওমিক্রন ( Omicron)। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। যদিও রোগ-লক্ষণ এখনও পর্যন্ত তেমন প্রকট নয়। ২৪ নভেম্বর প্রথম ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মেলে দক্ষিণ আফ্রিকায়। আরপরই সেই দেশের তরফে রিপোর্ট করা হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ( WHO)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এরপর এই ভ্যারিয়েন্টটিকে কোভিডের (Covid-19) নতুন ভ্যারিয়েন্ট হিসেবেই কিন্তু চিহ্নিত করে। এরপরই তা দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের আরও প্রায় ৫৫টি দেশে। এখনও পর্যন্ত ওমিক্রনের যে সব লক্ষণ দেখা গিয়েছে তা সাধারণত ফ্লু-এর মতই।
জ্বর, নাক বন্ধ, নাক দিয়ে জল পড়া, সর্দি-কফ, কাশির সমস্যা। যদিও যাঁরা ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের ক্ষেত্রে এই সর্দি-কফের সমস্যাটা থেকে যাচ্ছে বহুদিন পর্যন্ত। এমনকী অনেকেরই পেশির ব্যথা, তীব্র মাথা ব্যথা, গলায় জ্বালা-ব্যথা এসব সমস্যাও রয়েছে। যদিও হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা করতে হয়নি প্রায় কাউকেই। সকলেই বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
এই হালকা রোগ-লক্ষণের জন্যই অনেকে ওমিক্রনের সংক্রমণকে তেমন পাত্তা দিচ্ছেন না। মেনে চলছেন না যাবতীয় করোনা-বিধিও। যে কারণে কিন্তু বাড়ছে উপসর্গহীন আক্রান্তের সংখ্যা। আর এই বিষয়টি নিয়ে বারবার সতর্ক করছেন হু-এর বিশেষজ্ঞরা। ওমিক্রনকে হালকা ভাবে না নেওয়ার জন্য সকলেই আর্জি জানাচ্ছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে ওমিক্রনের হাত ধরেই কোভিড অতিমারির সমাপ্তি হবে এমনটাও কিন্তু মনে করছেন না বিশ্ব স্থাস্থ্য সংস্থার কর্তারা।
ওমিক্রনের উপসর্গ এবং পরবর্তী রোগ-সমস্যা নিয়ে এখনও নানা গবেষণা চলছে। ওমিক্রন সংক্রমণ থেকে সেরে উঠলেও ক্লান্তি, স্বাদ চলে যাওয়া, খেতে ইচ্ছে না করা, কফ, পেটের সমস্যা এসব কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই ভোগাচ্ছে। নাক বন্ধ, গলার সমস্যা, গলা চিরে যাওয়া, মাথা ধরা, শরীরে ব্যথা, বমি, মাঝ রাতে ঘাম দেওয়া এসব সমস্যা তো ছিলই। সেই সঙ্গে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক নতুন এই উপসর্গের কথাও বলেছেন। ওমিক্রনের সংক্রমণে মাথা থেকে হার্ট- শরীরের নানা অঙ্গ কিন্তু বিভিন্ন ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে সবার ক্ষেত্রে সব সমস্যা সমান নয়। পরবর্তীতে কোন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা বলা মুশকিল। সেই সঙ্গে কানের সংক্রমণ কিন্তু ওমিক্রনের উপসর্গ। অনেকেই কানের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে এসেছেন। পরবর্তীতে দেখা গিয়েছে তাঁদের সকলের মধ্যেই ওমিক্রনের যাবতীয় উপসর্গ রয়েছে এবং তাঁরা ওমিক্রন আক্রান্ত।
যাঁরা কানের সংক্রমণ নিয়ে এসেছিলেন তাঁদের কানে ব্যথা, পুঁজ ছাড়াও আরও একটি সমস্যা ছিল। একটানা কান ঝিঁঝি করত। কখনও কান ব্যথায় ভারী হয়ে আসত। পরবর্তীতে তাঁদের কানের আভ্যান্তরীন গঠন সম্পূর্ণ পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে তাঁরা করোনায় আক্রান্ত। যাঁদের কোভিড টিকার দুটো ডোজই সম্পন্ন, তাঁদের মধ্যে কিন্তু এই সমস্যাটা সবচেয়ে বেশি।
আর তাই গবেষক ডাঃ কনস্টান্টিনা স্ট্যানকোভিচ পরামর্শ দিয়েছেন কানে যদি ব্যথা হয় কিংবা শুনতে সমস্যা হয়, তাহলে তা কিন্তু ফেলে রাখবেন না। অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যান। কোভিড পরীক্ষা করান। নইলে চিরতরে হারাতে পারেন শ্রবণ শক্তি।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Omicron update: সকলেই আক্রান্ত হবেন ওমিক্রনে! আদৌ সত্য? কী বলছেন WHO-এর বিশেষজ্ঞরা, জানুন…