Liver Cancer: দাঁত মাজায় অবহেলা? তৈরি হচ্ছে লিভারের ক্যান্সারের আশঙ্কা, দাবি গবেষণার
Poor Oral Health: গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, মুখগহ্বর, দাঁত ঠিক মতো পরিষ্কার না করলে বেড়ে যেতে পারে লিভারের ক্যান্সারের আশঙ্কা।
দিনে দু’বার দাঁত মাজা জরুরি। এতে মুখের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। কিন্তু এর থেকে ক্যান্সার ঝুঁকিও কমে, এটা কি জানেন? মুখের ক্যান্সার নয়, দাঁতের স্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লিভারের ক্যান্সার। আয়ারল্যান্ডের কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের একটি সমীক্ষা অনুসারে, সঠিকভাবে দাঁতের যত্ন না নিলে বেড়ে যেতে পারে লিভারের ক্যান্সারের আশঙ্কা। গবেষকরা দেখেছেন যে, যাঁরা মুখের স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন, যেমন মাড়িতে ব্যথা বা মাড়ি থেকে রক্তপাত, মুখের আলসার এবং দাঁত ভেঙে যাওয়া, তাঁদের মধ্যে ‘হেপাটোসেলুলার কার্সিনোমা’র ঝুঁকি ৭৫ শতাংশ বেশি। হেপাটোসেলুলার কার্সিনোমা হল প্রাথমিক স্তরে লিভারের ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ রূপ।
কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের গবেষকরা ব্রিটেনের ৪৬৯,০০০ মানুষের মধ্যে এই গবেষণায় চালিয়েছে। ‘ইউনাইটেড ইউরোপিয়ান গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি জার্নাল’-এ প্রকাশিত ওই গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, মুখগহ্বর, দাঁত ঠিক মতো পরিষ্কার না করলে বেড়ে যেতে পারে লিভারের ক্যান্সারের আশঙ্কা। পাশাপাশি অগ্ন্যাশয়, কোলন ও মলদ্বারের ক্যান্সারের ঝুঁকিও রয়েছে। ওই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪,০৬৯ জন ছয় বছরের মধ্যেই গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। এই ক্ষেত্রে ১৩ শতাংশ রোগীর মৌখিক স্বাস্থ্য ভাল ছিল না।
অধ্যয়নের প্রধান লেখক ডঃ হেইডি জর্দাও জানিয়েছেন, মুখগহ্বরের সঠিকভাবে যত্ন না নিলে এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি ৭৫ শতাংশ ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এমন কেন ঘটে? এই প্রসঙ্গে ডঃ জর্দাও দুটি প্রধান কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। আসলে মুখের ভিতরের অংশ সঠিকভাবে পরিষ্কার না হলে এখানে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া জমতে থাকে। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো মুখের পাশাপাশি পেটের ভিতরের মাইক্রোবায়োম নষ্ট করে দিতে পারে। এতে পেটের সমস্যা বাড়ে এবং লিভারের উপর চাপ বাড়ে। এখান থেকে হেপাটাইটিস বা লিভার সিরোসিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
তবে এই ব্যাকটেরিয়াই শুধু একটি মাত্র কারণ নয়। দাঁতের সমস্যা তৈরি হলে সঠিকভাবে চিবিয়ে খেতে পারেন না অনেকেই। অনেকে আবার দাঁতের সমস্যার জন্য অনেক খাবারই খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেন। এতে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা যায়। খাদ্যের সমস্ত পুষ্টি শরীরে পৌঁছায় না। এতেও লিভারের ক্ষতি হয়। পাশাপাশি কমে যায় শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। এবং বাড়তে থাকে দীর্ঘস্থায়ী রোগের আশঙ্কা। কিন্তু লিভারের ক্ষতি প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে চলা জরুরি। সাধারণত লিভারের কথা মাথায় রেখে স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়। এবার মৌখিক স্বাস্থ্যের উপরও নজর দিতে বলছে বিশেষজ্ঞরা।