PCOS-Blood Pressure: পিসিওএস থাকলে বাড়তে পারে রক্তচাপও, আর কোন-কোন রোগের ঝুঁকি রয়েছে?
Women Health: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রজননের বয়সকালে ৮-১৩ শতাংশ মহিলা পিসিওএস-এর সমস্যায় ভুগছেন। তার মধ্যে ৭০ শতাংশ মহিলা চিকিৎসাধীন রয়েছে। সবচেয়ে আশঙ্কাজনক বিষয় হল, এই পিসিওএস থেকে আপনার দেহে আরও রোগ জাঁকিয়ে বসতে পারে।

প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে পিসিওএস সচেতনতা মাস হিসেবে পালন করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রজননের বয়সকালে ৮-১৩ শতাংশ মহিলা পিসিওএস-এর সমস্যায় ভুগছেন। তার মধ্যে ৭০ শতাংশ মহিলা চিকিৎসাধীন রয়েছে। বর্তমানে পিসিওএস গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূলত এন্ডোক্রিন সিস্টেমের ভারসাম্যহীনতার জন্য পিসিওএস-এর সমস্যা দেখা দেয়। পিসিওএস-এ আক্রান্ত হলে দেহে পুরুষ হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। পাশাপাশি ডিম্বস্ফোটন অনিয়মিত হতে থাকে এবং ডিম্বাশয়ে সিস্ট জন্ম নেয়। অনিয়মিত ঋতুস্রাব থেকে শুরু করে ত্বকে লোমের আধিক্য, ব্রণ, চুল পড়া, ওজন বেড়ে যাওয়ার মতো নানা উপসর্গ দেখা দেয়। এমনকী ঋতুস্রাব চলাকালীন তলপেটে ব্যথা, পেশিতে খিঁচুনি, ডায়ারিয়ার উপসর্গও জোরাল হয়। কিন্তু সবচেয়ে আশঙ্কাজনক বিষয় হল, এই পিসিওএস থেকে আপনার দেহে আরও রোগ জাঁকিয়ে বসতে পারে। যেমন উচ্চ রক্তচাপ।
অ্যাপল এবং হার্ভার্ডের ‘ওমেনস হেলথ স্টাডি’ সমীক্ষা অনুসারে, যেসব মহিলা পিসিওএস-এর সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি প্রায় তিনগুণ বেশি। একইভাবে, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, পিসিওএস-এ আক্রান্ত হলে, স্বাভাবিকভাবেই দেহে ইনসুলিন হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। দেহে উচ্চ মাত্রা ইনসুলিন হরমোন নির্গত হতে থাকে। এর জেরে ওজন বাড়ে এবং ঋতুস্রাব সংক্রান্ত সমস্যাগুলো জোরাল হয়। পাশাপাশি দেহে অ্যান্ড্রোজেনের মাত্রা বাড়ে, যা পলিসিস্টিক ওভারি, ব্রণর ইত্যাদি পিছনে দায়ী। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার পাশাপাশি পিসিওএস আপনার দেহে লিপিড প্রোফাইলের মাত্রাও নষ্ট করে দিতে পারে। ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এই বিষয়গুলোই একসঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাকে জন্ম দেয়।
উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড, ওজন বৃদ্ধি—এগুলো কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। অর্থাৎ পিসিওএস থাকলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে। তাই পিসিওএস-এর পাশাপাশি ডায়াবেটিস, ওবেসিটি ও হাই ব্লাড প্রেশারের ঝুঁকিকে এড়িয়ে চলা উচিত নয়। আর এই সব স্বাস্থ্য সমস্যার পিছনে দায়ী মহিলাদের দেহে উচ্চ পরিমাণে আন্ড্রোজেনের মাত্রা।
চিকিৎসকদের মতে, যেসব মহিলা পিসিওএস-এর সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি। তবে, এমন নয় যে, পিসিওএস-এ আক্রান্ত সকল মহিলাই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হবেন। যদি আপনি স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল মেনে জীবন কাটাতে পারেন, তাহলে পিসিওএস-এর উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং রক্তচাপ ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা আপনাকে ছুঁতে পারবে না।
স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল অর্থাৎ মানসিক চাপ কম, পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম, সুষম আহার, ধূমপান ত্যাগ করা ইত্যাদি। এছাড়া খাদ্যতালিকায় নুন ও চর্বির মাত্রা কমাতে হবে। তার সঙ্গে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। এতে দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে। পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও আপনি এড়াতে পারবেন।
