স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ মানেই তাঁর পাতে অবশ্যই একটু জায়গা করে নেবে ক্রিমের মতো ঘন, সামান্য টক স্বাদের দই ( curd)। আর শুধু আমরা নই, সেই বৈদিক যুগ থেকেই আমাদের পূর্বপুরুষরা দইকে দৈনিক আহারের (Daily Diet) অন্তর্ভুক্ত করেছেন হজমশক্তি (digest) ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা (Immunity System) বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে। সমগ্র দেশেই, বিভিন্ন রাজ্যে দই খাওয়া হয় খাদ্যগ্রহণের ঠিক পরে। এছাড়া কার্ড রাইস (দই ভাত), রায়তা, দই-চিনি, ইয়োগার্ট— এমন নানারূপে দই উপভোগ করতে ভালোবাসেন দেশবাসী।
সন্ধান প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত দই প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ দইয়ে থাকে বিশেষ ধরনের ভালো ব্যাকটেরিয়া যা আমাদের হজমতন্ত্রে প্রবেশের পর বংশবৃদ্ধি করে। ফলে খাদ্য হজমের ক্ষমতা বাড়ে। এছাড়া দই প্রোটিনের অত্যন্ত ভালো উৎস। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রোটিনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এছাড়া দইয়ে থাকে ক্যালশিয়াম যা হাড়ের জোর বাড়ায়। থাকে পর্যাপ্ত মাত্রায় ফসফরাস। এমনকী যাঁরা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের কারণে দুধ পান করতে পারেন না, তাঁরাও নিশ্চিন্তে দই খেতে পারেন। কারণ দুধের ল্যাকটোজ দইয়ে পরিবর্তিত হয়ে যায় ল্যাকটিক অ্যাসিডে।
এছাড়া দইয়ে থাকে উপকারী রাইবোফ্ল্যাভিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি১২ এবং প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড। আগেই বলা হয়েছে, দইয়ে থাকে ল্যাকটিক অ্যাসিড যা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান শোষণে সাহায্যে করে। আয়ুর্বেদ মতে দই স্বাদে টক। প্রকৃতিতে উষ্ণ। হজম হতেও অনেকখানি সময় নেয়। মেদ বৃদ্ধি করে। শক্তিদায়ক। কফ ও পিত্ত বাড়ায়। বৃদ্ধি করে অগ্নি বা হজম ক্ষমতা। প্রাচীন আয়ুর্বেদশাস্ত্র মতে দই সেবনের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম আছে যা মানলে দইয়ের পুরো পুষ্টি উপাদানই শরীরে প্রবেশ করে। দেখা যাক নিয়মগুলি—
• দই কখনওই উত্তপ্ত করে খাওয়া যাবে না। উষ্ণতার প্রভাবে দইয়ের পুষ্টিগুণ অন্তর্হিত হয়।
• কফ, রক্তপাত, প্রদাহের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীকে দই না দেওয়াই ভালো।
• রাত্রে কখনওই দই সেবন কর উচিত নয়।
•নিত্যদিন দই সেবন করবেন না। তবে ঘোল খাওয়া যেতে পারে বিভিন্ন মশলা, বিট নুন মিশিয়ে।
• ফলের সঙ্গে দই কখনওই মিশিয়ে খাওয়া উচিত নয়। দেখা গিয়েছে কিছু কিছু ফল ও দই একত্রে খেলে তা অ্যালার্জির সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়া মেটাবলিজমেও সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে।
• মাছ, দই, ডিম-এর মতো আমিষ খাদ্যের সঙ্গে দই তো বটেই এমনকী দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য কোনওভাবেই খাওয়া যাবে না। এমনকী দই মিশিয়ে প্রস্তুত মাছ ও মাংসের পদ শরীরে টক্সিন বা তৈরি হয়।
• দই খান লাঞ্চের ৪০মিনিট পর।
আরও পড়ুন: Diaper Rash: ডায়াপার র্যাশে ছোট্ট শিশু কষ্ট পাচ্ছে! এই ৪ ঘরোয়া উপায়েই কমবে সংক্রমণ ও জ্বালাভাব
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।