নয়া গবেষণায় জানা গিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রামক রোগ সংক্রমণের জন্য আদর্শ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে এই কঠিনতম পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়ার জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও দেশেই প্রস্তুত নয়। বিশ্বের স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলিতে ফের একটি বড় ধাক্কা লাগতে শুরু করার আশঙ্কা দেখছেন চিকিত্সকবিজ্ঞানীরা।
কোভিড১৯ ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে গিয়েই দেশের সব কাঠামোই সামনে চলে এসেছে। অন্যান্য দেশের হালও যে চরম তাও বলা চলে না। সারা পৃথিবীর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাগুলি ব্যাপকভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর আবার একটি নয়া ভাইরাস, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি জ্বর ও কলেরার মতো পুরনো রোগগুলি মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। মেডিকেল জার্নালের ষষ্ঠ বার্ষিক প্রতিবেদন, যার নাম দ্য ল্যানসেট কাউন্টডাউন, স্বাস্থ্যের প্রভাবের ৪৪টি সূচক ট্র্যাক করে যা সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে যুক্ত এবং সামাজিক অসমতার ক্রমবর্ধমানতার উপর আলোকপাত করে।
একাডেমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জাতিসংঘের সংস্থার গবেষণার উপর ভিত্তি করে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালের গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে উন্নত দেশগুলিতে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। শীতল অঞ্চলে ম্যালেরিয়া সংক্রমণের বিপদ বাড়ছে। উত্তর ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলগুলি ব্যাকটেরিয়ার প্রবণ হয়ে উঠছে দ্রুত , যা গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস এবং সেপসিস তৈরি করছে ক্রমাগত।
ইতিমধ্যে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫ মিটার (16 ফুট) এরও কম উচ্চতায় প্রায় ৬০০ মিলিয়ন মানুষ বাস করছ। বন্যা এবং তীব্র ঝড়ের ঝুঁকিতে বিপর্যস্ত তারা। অনেককে স্থায়ীভাবে তাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
প্রতিবেদনের গবেষণা পরিচালক এবং প্রধান লেখক মারিয়া রোমানেলো সতর্ক করে বলেছেন, ‘প্রতিদিন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি আমাদের প্রতিক্রিয়া বিলম্ব করলে পরিস্থিতি আরও সংকটজনক হয়ে ওঠে, এটা একটি মারাত্মক সতর্কবাণী।’ তাঁর কথায়, ‘এটা বোঝার সময় এসেছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে কেউ নিরাপদ নয়।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণায় ট্র্যাক করা ৯১টি দেশের অর্ধেকেরও কম জাতীয় স্বাস্থ্য ও জলবায়ু পরিবর্তন পরিকল্পনা রয়েছে। ফলে সেইসব দেশে জলবায়ু দ্বারা প্রভাবিত রোগগুলি বেশি মাথাচাড়া দিতে পারে। প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের জেরে ইতোমধ্যেই বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শুধু তাই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অর্থনৈতিক দিকগুলিতেও। দেশগুলি যেমন তাদের অর্থনীতি পুনরায় চালু করার প্রচেষ্টায় লকডাউন শিথিল করে বিপদ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ফের সংক্রমণে পুনরুত্থান নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে অধিকাংশ দেশ। এছাড়া উন্নত দেশ এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলির মধ্যে ভ্যাকসিনের অসম বন্টনের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে গিয়েছে। প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে যে, এই দেশগুলি বিশ্ব উষ্ণায়নের দ্বারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কারণ খরার জেরে খাদ্য ও জলহীনতার হুমকির মুখে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে প্রবল।
আরও পড়ুন: Flu Shot: পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ে ফ্লু শট এখনও নেওয়া হয়নি? কোন বয়সের পর এই টিকা নেওয়া যাবে, জানুন