দেশ জুড়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড এবং স্ক্রাব টাইফাসের মামলা প্রতিদিন বেড়ে চলেছে। সারা দেশে ডাক্তাররা মানুষকে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিচ্ছেন। অসুস্থ হয়ে পড়লে নিজের থেকে যেকোনো ওষুধ খেয়ে নেওয়া এড়িয়ে চলার কথাও জানিয়েছেন তাঁরা। দিল্লিতে কোভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলেও জলবাহিত এবং মশা বাহিত রোগের উপদ্রব বেড়ে গেছে। ফোর্টিস হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিনের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডঃ মনোজ শর্মা বলেছেন যে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, স্ক্রাব টাইফাস এই ধরনের রোগগুলির বেশিরভাগ উপসর্গ একইরকমের হতে পারে। আর ঠিক সেই কারণেই সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করা গুরুত্বপূর্ণ।
ডঃ শর্মা বলেন, “আমরা সকলের সহযোগিতা এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে কোভিড অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। যখন আমরা কোভিডের প্যান্ডেমিক থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রখার চেষ্টা করছি তখন ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে চলেছে। ম্যালেরিয়া, হেপাটাইটিস, টাইফয়েডের জ্বর, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইনফেকশন, স্ক্রাব টাইফাস এবং অন্যান্য সংক্রামক রোগগুলির পরিমাণ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা আমাদের প্রাথমিক কর্তব্য। ফুল হাতা জামা পরা, মশারি ব্যবহার করা, বিভিন্ন প্রতিষেধক ব্যবহার করা এবং অন্যান্য সম্ভাব্য ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের এই ধরনের মশাবাহিত সংক্রমণ থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। “
নিজের থেকে কোনও ওষুধ খাবেন না:
ম্যালেরিয়া, টাইফয়েডের জ্বর, স্ক্রাব টাইফাসের মতো রোগের লক্ষণগুলি একই ধরনের হতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরের পাশপাশি এগুলির সবগুলিতেই আমাদের বিভিন্ন অঙ্গ সঙ্ক্রামিত হতে পারে। তাই জ্বর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিজে থেকে কোনও ওষুধ খাওয়ার পরিবর্তে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। হতেই পারে সাধারণ জ্বর, কিন্তু আপনার নিজের ভুল চিকিৎসা সেই সাধারণ জ্বরকে জটিল রোগে পরিণত করতে পারে।
একই ধরনের লক্ষণ:
ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, টাইফয়েড, স্ক্রাব টাইফাসের মতো রোগগুলিতে নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা না করে আলাদা করে চিহ্নিত করা খুব কঠিন। কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই মিশ্র সংক্রমণ দেখা যায়। টিএলসি এবং প্লেটলেট কাউন্ট বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাত্রায় কমে যেতে পারে। যদিও ডেঙ্গুতে প্লেটলেটের সংখ্যা বিপজ্জনকভাবে কমে যায়। লিভার ফাংশন টেস্টের ফলাফলগুলি এই ধরনের রোগে আলাদা আলাদা মানের হয়ে থাকে।
পেন কিলার এড়িয়ে চলুন, হাইড্রেটেড থাকুন:
সাধারণ সতর্কতা হিসাবে সমস্ত পেন কিলার এড়িয়ে চলা উচিত। শুধুমাত্র প্যারাসিটামল ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশপাশি প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া জরুরি।
ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড এবং স্ক্রাব টাইফাসের বিভিন্ন চিকিৎসা আছে। তবে, সঠিক চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। নয়তো রোগগুলি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। ডঃ শর্মা বলেছেন, যেহেতু এই ঋতুতে মশাবাহিত রোগের পরিমাণ বেশি হচ্ছে, তাই কোনোরকম অস্বস্তি হলে আগে টেস্ট করিয়ে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।”
আরও পড়ুন: থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হলে চোখের সমস্য়া এড়িয়ে যাবেন না!
আরও পড়ুন: ঋতুস্রাবের সমস্যা থেকে শুরু করে মুড সুইং, সব সমস্যা সমাধান করে এই ফুল!