বাড়ছে কোভিড আক্রান্তের ( Daily Covid cases) সংখ্যা। প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। সামান্য হলেও বেড়েছে মৃত্যুর ঝুঁকি। তবুও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কম। গত দুটো তরঙ্গে প্রচুর সংখ্যক মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। পর্যাপ্ত বেড এবং অক্সিজেনের অভাবে শুরু হয়েছিল হাহাকার। কিন্তু সেই সংখ্যাটা এবার নেহাতই অল্প। যাঁরা কোভিডে আক্রান্ত ( covid graph kolkata) হচ্ছেন তাঁদের বেশিরভাগেরই শ্বাসকষ্ট জনিত কোনও সমস্যা নেই, বরং সকলেই বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। তবে কোভিড পরবর্তী বেশ কিছু অসুস্থতা থেকে যাচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কম, তবুও কেন সরকার এবং কেন্দ্রের তরফে এত জোরালো বিধি নিষেধ (covid rules india) আরোপ করা হচ্ছে?
দেশ জুড়েই কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির হার ৫ থেকে ১০ শতাংশ। হিসেব করলে প্রতি ১০০ জন সংক্রামিত রোগীর মধ্যে মাত্র ৫ থেকে ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সচিব রাজেশ ভূষণের তরফে একটি চিঠি প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানেই তিনি উল্লেখ করেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার জন্য মাত্র ৫-১০ শতাংশকে ভর্তি করতে হচ্ছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাড়ছে সংক্রমণও। ফলে হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে বাড়বে প্রয়োজনীয়তা। যে কারণে হাসপাতালগুলিকে সতর্ক থাকার কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, এখন থেকেই সতর্ক না হলে মুশকিল। দিল্লি এবং মুম্বইতে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকী হাসপাতালে ভর্তির হারও ছিল অনেকটাই বেশি। তবে ১৫ তারিখের পর কিন্তু সেই সংখ্যাটা কমেছে। দিল্লিচত করফে একটি বুলেটিন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই কেস কমার ইঙ্গিত রয়েছে।
গত সপ্তাহে ১১ জানুয়ারি দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি। ১৪ জানুয়ারি দিল্লি ও মুম্বইতে হাসপাতালে ভর্তির হার ছিল ১০.০৩ শতাংশ ও ৭.০৭ শতাংশ। সেই সঙ্গে বাড়ছিল অক্সিজেনের চাহিদাও। ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত যেখানে অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা রোগীর সংখ্যা ছিল ১ জন পরবর্তীতে তা গিয়ে দাঁড়ায় ৩ জনে। ১৫ জানুয়ারি দিল্লি ও মুম্বইতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে যাঁরা ভর্তি হয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে ৪৭ জন ও ৮৮ জনকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখতে হয়েছিল।
এখনও পর্যন্ত যে সব তথ্য হাতের সামনে পাওয়া গিয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে হাসপতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা ডেল্টার তুলনায় অনেকটা কম। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন যেমন বলেছেন, গত চার থেকে পাঁচদিনে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাটাও স্থিতিশীল। ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত হাসপাতালে মোট বেড ছিল ১৪, ৬২১। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র ২,২০৯ টি বেড ভর্তি হয়েছিল। বাকি সব খালিই ছিল। তবে ৪ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত যে সমস্ত মানুষ আরটিপিসিআর পরীক্ষা করিয়েছেন তাতে বেশিরভাগেরই রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তবে ১৪ জানুয়ারির পর থেকে আক্রান্তের গ্রাফ সর্বত্রই নেমেছে।
ওমিক্রনের তীব্রতা কম হলেও কিন্তু একে হালকা ভাবে না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কারণ যাঁদের প্রেসার বা ডায়াবিটিসের সমস্যা রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যা জটিল হতে পারে। এমনকী যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কোভিড আক্রান্ত হয়ে তাঁদের ক্ষেত্রেও পূর্বের শারীরিক জটিলতা ছিল। এছাড়াও ওমিক্রনের সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। ডেল্টায় যে ভাবে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছিল সেখান থেকেই আগাম সতর্ক থাকতে চাইছেন চিকিৎসকরা। বয়স্ক বা যাঁরা বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছেন তাঁদের নিয়েই বেশি চিন্তিত চিকিৎসকেরা। চন্দ্রকান্ত লাহারিয়া, পরামর্শদাতা এবং এপিডেমিওলজিস্ট নিউজ ৯ লাইভ কে জানান, ‘সংক্রমণ কমানোর জন্য এবং দ্রুত সুস্থতার দিকে নিয়ে যাওর লক্ষ্যেই কিন্তু এই পরামর্শ কেন্দ্রীয় সরকারের’।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Covid cough: কোভিড মুক্তির পরও ভোগাচ্ছে কফ-কাশি? ভরসা কি অ্যান্টিবায়োটিক নাকি অন্য কিছু, জানুন…