গত তিন সপ্তাহের মধ্যে যে ভাবে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে আমাদের দেশে তাতে একটু সংশয়েই রয়েছেন চিকিৎসকেরা। সাধারণ মানুষ থেকে স্বাস্থ্যকর্মী প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টে। বাদ পড়ছেনা শিশুরাও। যাঁরা মাত্র কয়েক মাস আগে ডেল্টায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁরাও ফের আক্রান্ত হচ্ছেন ওমিক্রনে। এছাড়াও সমস্যা হল উপসর্গহীন আক্রান্তের সংখ্যাই কিন্তু বাড়িয়ে দিচ্ছে কোভিড ঝুঁকি। ডেল্টার তুলনায় কয়েকগুণ দ্রুত ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। ওমিক্রনের উপসর্গ আর সাধারণ ফ্লু এর উপসর্গ একই হওয়ায় অনেকেই বুঝতে পারছেন না যে তাঁরা ওমিক্রনে আক্রান্ত কিনা। এবার তাঁদের থেকে সহজেই সংক্রমিত হয়ে যাচ্ছেন বাকিরা। আর এই ভাবেই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। উদ্বেগজনক ভাবে যখন ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তখন অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন যে টিটাকরণের ভূমিকা নিয়ে।
এমনকী ওমিক্রন শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে প্রাথমিক ভাবে এমনটাও মনে করা হয়েছিল। তবে টিকার জেরেই কিন্তু এড়ানো যাচ্ছে প্রাথমিক জটিলতা। একথা বার বার বলছেন চিকিৎসকেরা। সেই সঙ্গে ওমিক্রনের বাড় বাড়ন্ত দেখেই কিন্তু বুস্টার ডোজের উপর জোর দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের ধারণা টিকার তৃতীয় ডোজ নিলে সকলের মধ্যেই বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ইতিমধ্যেই শিশুদের টিকাকরণ শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। রবিবার দেশজুড়ে নতুন করে আরও প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে। ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬২৪ জন। ১৪০০ এর বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। যদিও এবার হোম আইসোলেশনে থেকেই বেশিরভাগ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছেন।
কোভিড আক্রান্ত কিনা বুঝতে র্যাপিড অ্যান্টিজেন বা আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে। কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন এই দুই পরীক্ষা দিয়ে কি আদৌ বোঝা যাবে যে তিনি ওমিক্রনে আক্রান্ত কিনা? এ বিষয়ে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কোভিড হয়েছে কিনা জানতে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হল এই আরটি-পিসিআর পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় যদি এ-এস জিনোমের হদিশ পাওয়া যায় তবেই জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়। যাঁদের ক্ষেত্রে এই এস-জিন ড্রপআউট পজেটিভ থাকে তাঁরা ওমিক্রন আক্রান্ত কিনা জানতেই জিনোমিক সিকোয়েন্স করা হয়। সম্প্রতি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।
কোভিড এবং ওমিক্রন শনাক্তকরণের জন্য এই আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় উপরই জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে প্রতিটি ল্যাবেই অসংখ্য মানুষ আসছেন পরীক্ষার জন্য। তবে টিকা নেওয়ার ফলেই কিন্তু এড়ানো গিয়েছে রোগ জটিলতা বা মৃত্যু। একথা বার বার বলছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা। ওমিক্রন আর কোভিড ঠেকাতে সক্ষম এরকম ১৯টি ভ্যাকসিনের কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে চিকিৎসকেরা যেমন বলেছেন, আমাদের দেশে পাওয়া কোভিড অ্যান্টিবডি ককটেল – ক্যাসিরিভিমাব এবং ইমডেভিমাব (রোনাপ্রেভ- রোস/সিপ্লা) বা বামলানিভিমাব এবং এটিসেভিমাব। এটি কিন্তু ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কাজ করে না। যে কারণে আরও বেশি করে প্রয়োজন পড়ছে বুস্টার ডোজের।
আরও পড়ুন: Omicron coronavirus Symptoms: সামান্য জ্বর এবং নাক দিয়ে জল পড়াই ওমিক্রন সংক্রমণের মুখ্য উপসর্গ!