দিল্লির মত দূষিত শহরে বাস করলে প্রতিদিন প্রতি সেকেন্ডে ক্ষতিকারক দূষণকারী ও বিষাক্ত গ্যাসের মধ্যে শ্বাস নিচ্ছেন। এর কারণে বিভিন্ন রোগের সম্ভাবনা বাড়ে। বায়ু দূষণের কারণে যে কুয়াশার সৃষ্টি হয়, তা স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে। হাঁপানি, শ্বাসনালী রোগ, ত্বকের সমস্যা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, ক্যান্সার ও হৃদরোগের মতো সমস্যা সৃষ্টি করে। শুধু তাই নয়, বায়ু দূষণ চোখের অ্যালার্জি ও সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এছাড়া যাঁদের শ্বাসকষ্টের কোনও লক্ষণই ছিল না, সেইসব মানুষদেরও শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভরতি থাকতে হয়। দিল্লির অ্যাপেলো স্পেকট্রার ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ , এমবিবিএস এমডি মেডিসিন ড, বিপুল রুস্তগি জানিয়েছেন, দিল্লির মতো দূষিত শহরগুলিতে দূষণের নানান সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কিছু খাবার খাওয়া উচিত।
ভিটামিন সি- সমৃদ্ধ খাবার
সাইট্রাস ফলের ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের উপর দূষণের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। জ্বালাধরা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া কমাতে কমলা, স্ট্রবেরি, আপেল, তরমুজের মতো ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার বেছে নিন। ভিটামিন সি লাল বেল মরিচ, কালে, পার্সলে, ব্রকলি, ফুলকপি, পালং শাক সবজিতেও রয়েছে।
ভিটামিন ই এবং এ-এর উৎস
অলিভ অয়েল, সূর্যমুখী বীজ, বাদাম, হ্যাজেলনাট, অ্যাভোকাডো ভিটামিন ই সমৃদ্ধ। অন্যদিকে গাজর, বেল, মিষ্টি আলু এবং এপ্রিকট হল ভিটামিন এ-এর উৎস৷ এই খাবারগুলি বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সুরক্ষা প্রদান করতে পারে৷
ওমেগা-ফ্যাটি অ্যাসিড
বিভিন্ন গবেষণায় জানা গিয়েছে, ওমেগা-ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার বায়ু দূষণের কারণে প্রদাহ এবং এমনকি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে পারে। আখরোট, ফ্ল্যাক্সসিড, চিয়া বীজ এবং স্যামন খান।
আপেল
আপেলে ফেনোলিক অ্যাসিড এবং ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে, যার ফলে বায়ু দূষণের কারণে বায়ু চলাচলের পথের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। আনারসে রয়েছে এনজাইম, যা শ্বাসনালীর ফোলাভাব কমায় ও কাশির মতো সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
আদা
শ্বাসনালী থেকে দূষক অপসারণ করতে এবং ফুসফুসের জ্বালা কমাতে আদার বিকল্প নেই।
গ্রিন টি
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের বৈশিষ্ট্য।বায়ু দূষণের কারণে সৃষ্ট অ্যালার্জির লক্ষণগুলির সাথে লড়াই করতে এবং শ্বাসনালী সাফ করতে সাহায্য করে। আবার গ্রিন টি অতিরিক্ত পরিমাণে পান করাও ভাল নয়। পর্যাপ্ত পান করলে শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতেও সাহায্য করে।
হলুদ
কাশি এবং সর্দি থেকে মুক্তি পেতে হলুদ হল অন্যতম উপকরণ।
তুলসী
গলার মধ্যে জ্বালা ধরা বা খুসখুস করলে তুলসীর রস বেশ কার্যকরী। তুলসীর চা তৈরি করে পান করতে পারেন। এছাড়া তুলসী পাতা দিয়ে স্যুপ তৈরি করে খেতে পারেন। কাঁচা তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলেও স্বাস্থ্যের জন্য উপকার পাবেন।
টমেটো
শ্বাসকষ্ট এড়াতে নিয়মিত টমেটো খেতে পারেন। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটিমিন ও মিনারেলস রয়েছে।
কাড়া
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী লবঙ্গ, গোলমরিচ, দারচিনি, মধু, হলুদ মিশিয়ে উপকারী কাড়া বানিয়ে পান করতে পারেন। দূষণের কারণে বিভিন্ন রোগ তো বটেই এর জেরে শরীরের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়।
– যে খাবারগুলি এড়িয়ে যাবেন
জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড, তৈলাক্ত ও স্পাইসি খাবার এড়িয়ে চলুন। এতে ফুসফুসের সমস্যা দেখা গিতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিয়ে শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আরও পড়ুন: Weight loss: ওজন কমাতে ব্রেকফাস্টে এই ৬টি সাধারণ ভুল একেবারেই করবেন না!