ঘি নাকি মাখন! ভাল থাকতে কোনটি খাবেন?

aryama das |

May 19, 2021 | 1:40 PM

উত্তর ও মধ্য ভারতে যে কোনও ঘরোয়া অনুষ্ঠানে, পূজাকর্মে ও ঔষধ হিসেবে ঘি ব্যবহার করা হয়। সাধারণ পণ্য হিসেবেই প্রত্যেক বাড়িতেই মজুত থাকে ঘি। ঘি হল ভারতীয়দের কাছে অন্যতম সুপারফুড।

ঘি নাকি মাখন! ভাল থাকতে কোনটি খাবেন?
কোনটা শরীরে জন্য উপকারী, তা কখনও ভেবে দেখেছেন?

Follow Us

ভারতীয়দের রান্নায় ঘি আর মাখনের ব্যবহার থাকবে প্রাচীন যুগ থেকেই। দেশের বাইরেও এর জনপ্রিয়তা বাড়লেও এখনও ভাত, পরোটা, রুটির পাশে বা উপরে মা-দিদিমারা ঘি-মাখনের প্রলেপ লাগাতে ভোলেন না। কিন্তু এই স্ট্রেসযুক্ত ও ব্যস্ততার জীবনে ঘি ও মাখনের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, কোনটা শরীরে জন্য উপকারী, তা কখনও ভেবে দেখেছেন? সুস্থ ও ফিট থাকতে মাখন না ঘি কোনটা জরুরি, তা নিয়ে বিতর্ক এখনও অব্যাহত। তবে আসল তথ্যটি জেনে নিন এখানে..

ঘি ও মাখন দুটোই প্রয়োজন শরীরের জন্য…

মাখন হল দুধ ও ক্রিম দিয়ে তৈরি একটি সাধারণ দুগ্ধজাত পণ্য। এতে ফ্যাট ও ক্রিম কম থাকার কারণে ক্যালরিও কম থাকে। তবে দুটি পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক।

পুষ্টিগত মান

প্রতি ১০০ গ্রাম ঘিতে রয়েছে ০.২৮ শতাংশ দল ও ৮৭৬ গ্রাম ক্যালোরি। এছাড়া রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, কোলিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন এ১, ভিটামিন ই, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন বি৩। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড, যা শরীরের বিপাকক্রিয়াকে উন্নত করে।

অন্যদিকে প্রতি ১০০ গ্রাম মাখনে রয়েছে ১৬.১৭ গ্রামং জল ও ৭১৭ গ্রাম ক্যালারি। এছাড়া মাখনে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন এ, ক্যোরিটন ও সামান্য পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড।

আরও পড়ুন: সুস্থ ও ফিট থাকতে প্রেমে পড়ায় কোনও বারণ নেই!

ঘি কীভাবে বানানো হয়

দুটি পণ্যই বানানো হয় দুধ দিয়ে। তাই দুধের পুষ্টিগুণ এতে অবশ্যই থাকে। শুধু বানানো পদ্ধতিটা অন্যরকম। কম আঁচে দুধকে ঘন করে ফোটান। দুধের মালাই বেশ গাঢ় হয়ে গেলে বাটারফ্যাট অর্থাত্‍ বাদামী শক্ত অংশটি বাটারমিল্ক থেকে আলাদা করুন। বর্তমানে আনসল্টেড মাখন থেকে বানানো ঘি পাওয়া যায়।

মাখন তৈরির করার পদ্ধতি

সেন্ট্রিফিউগেশন নামক প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে গরুর ঘন দুধকে ক্রিমে পরিণত করে মাখন প্রস্তুত করা হয়। যেখানে একটি মেশিনের সাহায্যে দুধ ও মালাইকে তীব্রগতিতে ঘোরানো হয়। ক্রিম উৎপাদিত হওয়ার পর তাকে আরও ঘন করা হয়। কখনও কখনও এতে লবণ ও সুগন্ধিও ব্যবহার করা হয়। ক্রিমের তরল অংশ(বাটার মিল্ক) আলাদা করা হয় এবং শক্ত অংশটিকে মাখনে পরিণত করা হয়।

আরও পড়ুন- করোনাকালে শিশুর ইমিউনিটি বাড়ান এই ৫ আয়ুর্বেদিক টোটকায়

অনেকের ধারণা, ঘি ও মাখনের উপকারিতা প্রায় একই। তবে ঘি মাখনের তুলনায় অনেক বেশি স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী।দুটি পণ্যই নিজের নিজের জায়গায় সঠিক। তবে ব্যক্তিবিশেষে নির্ভর করে কোন খাবার তার পক্ষে উপযুক্ত। ঘি-তে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-ই ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যার কারণে ঘি ক্যানসার কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ও শক্তি সঞ্চয় করতে সাহায্য করে। ঘিয়ে রয়েছে কম পরিমাণে ল্যাকটোজ। তাই যাঁদের ল্যাকটোজ অ্যালার্জি রয়েছে, তাঁদের জন্যও বেশ উপকারী। এছাড়া হৃদরোগজনিত সমস্যা দূর করতে, হাড়ের ক্ষয় হ্রাস করতে ঘি খুবই প্রাকৃতিক একটি উপাদান।

অন্যদিকে মাখনে রয়েছে গ্লাইকোস-ফিংগোলিপিডস নামে একটি বিশেষ ধরণের ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ব্যাকটিরা বা জীবাণু সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। হজম ও বিপাক তন্ত্র সুস্থ রাখতে খাওয়া যেতে পারে মাখন বা বাটার। এছাড়া থাইরয়েডের সমস্যা, আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধ করতে মাখন খাওয়া উপকারী।

Next Article