আমরা মনে করি, বাচ্চাদের ইমিউনিটি বয়স্কদের তুলনায় অনেক বেশি। আমরা ভাবতেই পারি না যে মাথা ব্যথা ও মাইগ্রেনের মত সমস্যা বাচ্চাদের মধ্যেও দেখা যেতে পারে। তবে এই সমস্যা বর্তমান সময়ে বেড়ে গিয়েছে। পড়াশোনার চাপ এর পাশাপাশি অনলাইন ক্লাস সব কিছুই প্রভাব ফেলছে বাচ্চাদের ওপর। এর সঙ্গে কমে গেছে তাদের শারীরিক ক্রিয়াকলাপ।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রম না করায় স্থূলতার সমস্যাও দেখা দিচ্ছে বাচ্চাদের মধ্যে। তবে এখন খুব কম বয়সেই চশমা নিতে হচ্ছে অনেক বাচ্চাকে। সারাদিন মোবাইল, কম্পিউটার, টিভির স্ক্রিনের সামনে সময় কাটাচ্ছে তারা। এখান থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে রোগের আশঙ্কা। আর এই মাথা যন্ত্রণা এই মুহূর্তে বাচ্চাদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অনেক সময় মানসিক চাপের কারণেও বাচ্চাদের মধ্যে মাথা যন্ত্রণার সমস্যা দেখা দেয়। আপনার সন্তান যদি এই ধরনের কোনও সমস্যার কথা বলে, তাহলে সেগুলি এড়িয়ে যাবেন না। প্রাথমিক কয়েকটি কারণ রয়েছে শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যাওয়ার। এর মধ্যে হল সর্দি, কাশি, ঠাণ্ডা লাগলে, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, দৃষ্টিশক্তির কারণে, মাইগ্রেনের ব্যথা, অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং মস্তিষ্কে কোনও সমস্যা বা মস্তিষ্কে টিউমারের কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বাচ্চাদের একটি সমস্যা হল, তারা তাদের সমস্যাকে ভাল ভাবে ব্যক্ত করতে পারে না। সুতরাং আপনাকেই এই রোগের লক্ষণগুলি চিনতে হবে। আপনার সন্তান যদি মাথার ব্যথায় আক্রান্ত হয় তাহলে ঝাপসা দৃষ্টি, অত্যধিক ঘাম হওয়া, উচ্চ শব্দ শুনে রেগে যাওয়া, হাঁচি বা কাশির সময় মাথাব্যথা, রাগ ও খিটখিটে প্রকৃতি, ঘুম থেকে জেগে উঠার পরপরই মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, বমি, বমি বমি ভাব সহ মাথাব্যথা ইত্যাদি উপসর্গগুলি এড়িয়ে যাবেন না। দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
কিন্তু এই সমস্যাকে আপনি প্রথম থেকেও প্রতিরোধ করতে পারবেন। বর্তমানে মোবাইল, ল্যাপটপ ও টিভিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটানোর কারণে শিশুদের দৃষ্টিশক্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যদি আপনার শিশু চোখ নিয়ে অভিযোগ করে তবে তার চোখ পরীক্ষা করান। অনেক সময় দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হলেও মাথাব্যথার সমস্যা হয়। এ ছাড়া শিশুর আগে থেকে চশমা থাকলে, কম-বেশি নম্বরের কারণে মাথাব্যথা হতে পারে।
শিশুদের সাধারণ মাথাব্যথার সমস্যা থেকে বার করার জন্য তাদের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন করা খুবই জরুরি। এ জন্য তাদের সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, দুধ, পনির ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস করান। বাইরের খাবার, চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন। তাদের শারীরিক কার্যকলাপের জন্য অনুপ্রাণিত করুন। ইনডোর নয়, আউটডোর গেম খেলান। টিভি এবং মোবাইলের জন্য একটি সময় নির্ধারণ করুন। শিশুর ঘুমের যত্ন নিন। তাদের পড়াশোনায় উৎসাহিত করুন, কিন্তু চাপ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।
আরও পড়ুন: শুধু মহিলা নয়, পুরুষরাও আক্রান্ত হন ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনে!