করলার নাম শুনলেই অনেকেই নাক সিটকান। কিন্তু জানেন কি করলার মধ্যে রয়েছে ঔষধি গুণ, যা শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ব্যাপক ভাবে সহায়ক। তাই করলাকে আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন। তাহলে আসুন করলার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানা যাক।
যারা ক্রমাগত অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাদের জন্য করলার রস একটি দারুণ ওষুধ। কারণ করলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা আপনার শরীরকে ভিতর থেকে শক্তিশালী করে তোলে। এছাড়াও করলাতে রয়েছে ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ফলিক এসিড, পটাশিয়াম ইত্যাদি, যা শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং যেকোনও রোগকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
করলার নির্যাস বা করলার রস একটি চমৎকার রক্ত পরিশোধক। এটি ত্বকের যাবতীয় সমস্যা যেমন দাগ, কুঁচকানো চামড়া, ত্বকের অকাল বার্ধক্য ইত্যাদি প্রতিরোধ করে। তাই ত্বকের সমস্যার হাত থেকে রেহাই পেতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন আধ গ্লাস করলার রস পান করতে পারেন। করলা রক্ত পরিশোধক হিসাবে কাজ করায় এটি চুলেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। সঠিক ও পরিশুদ্ধ রক্ত প্রবাহের কারণ চুল মজবুত ও লম্বা হয়ে ওঠে।
আপনি যদি ডায়বেটিসের রোগী হন, তাহলে অবশ্যই করলার রসকে আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন। শরীরে গ্লুকোজের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে করলার রস খুব কার্যকরী। এটি কোনও বাহ্যিক ওষুধ ছাড়াই শরীরে ইনসুলিন প্রতিরোধে সাহায্য করে। আপনি যদি ডায়বেটিসের রোগী নাও হন তাহলেও পান করতে পারেন করলার রস। কারণ নিয়মিত করলার রস পান করলে এটি আপনার শরীরের শর্করার মাত্রাকে বৃদ্ধি হতে দেবে না। বরং শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। করলা দীর্ঘস্থায়ী কাশি এবং শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাকে নিরাময় করতে সহায়তা করে। করলা ফুসফুস এবং শ্বাসনালীতে জমা হওয়া সর্দি বা কফকে অপসারণ করে যার ফলে অস্থমা জাতীয় রোগ সহজেই নিরাময় হয়।
করলার রস হজম শক্তি বাড়ায়। করলায় থাকা উপাদান এনজাইমের উৎপাদন বাড়ায় যা হজমের প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। ওজন কমানোর জন্য করলার দুর্দান্ত কাজ করে। করলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও কম কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালোরি রয়েছে যা পেট পরিষ্কারের পাশাপাশি ওজন হ্রাসের ক্ষেত্রেও সহায়ক। তাই ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন করলার রস পান করতে পারেন। একই সাথে পেটে কৃমির সমস্যা থেকে রেহাই পেতেও করলার রস পান করুন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পেটে কৃমির চিকিৎসার জন্য করলার রস খাওয়া উচিত। এর জন্য আপনাকে এক গ্লাস ছোলার সাথে করলার রস মিশিয়ে পান করতে হবে। তাই দেরি না করে এখনই করলা রস পান করা শুরু করেন।
আরও পড়ুন: করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর কেন বেশি পরিমাণে ঝরে যাচ্ছে চুল?