Coronavirus: করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর কেন বেশি পরিমাণে ঝরে যাচ্ছে চুল?
দিনে একশোটা অবধি চুল পড়ে যাওয়ার বিষয়টা স্বাভাবিক হলেও কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে সেটাই দাঁড়াচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০-তে। এই সমস্যা স্বাভাবিক নয়।
কোভিড থেকে সেরে উঠেও রেহাই নেই। কোভিড পজিটিভ থেকে নেগেটিভ হওয়ার পরও থেকে যাচ্ছে একাধিক সমস্যা। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি মানসিক চাপ সৃষ্টির মত একাধিক অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হল চুলে পড়ে যাওয়া। অন্যান্য শারীরিক সমস্যা গুলির মত প্রাণঘাতি বা গুরুতর না হলেও পোস্ট কোভিড রোগীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে চুলে পড়ে যাওয়ার সমস্যা।
একটা ভাইরাস কতটা মারাত্মক হতে পারে তার নমুনা আগেই পাওয়া গেছে। কিন্তু সেটা যে চুলেও প্রভাব ফেলবে তা হয়তো ভাবা যায়নি। এখন বেশির ভাগ পোস্ট কোভিড রোগীদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে যদিও দূষণ, মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং বদ অভ্যাসের জন্য চুলে পড়ে যাওয়া খুব সাধারণ একটি সমস্যা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোভিড আক্রান্তের পর এই সমস্যা বেশ গভীর হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
দিনে একশোটা অবধি চুল পড়ে যাওয়ার বিষয়টা স্বাভাবিক হলেও কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে সেটাই দাঁড়াচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০-তে। এই সমস্যা স্বাভাবিক নয়। মূলত এই ক্ষেত্রে চুল ঝরে যায়। এটাকেও একটি বিশেষ পার্থক্য হিসাবে গণ্য করা যায়। করোনা ভাইরাসের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে যা শরীরে গভীর প্রভাব ফেলে। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই তীব্র সংক্রমিত করে চুলের ত্বককে। যার ফলে ঝরতে শুরু করে চুল। মেডিক্যালের ভাষায় একে বলা হয় টেলোজেন এফফ্লুভিয়াম।
টেলোজেন এফফ্লুভিয়ামের ফলস্বরূপ হঠাৎ চুল পড়া শুরু হয়। এর প্রভাব সুস্থ ও তরুণদের মধ্যেও দেখা যেতে পারে। অনেক চিকিৎসকই ১৪ থেকে ২১ দিনের বেশি কোভিডে বা জ্বরে ভুগলে তাকে ‘শক’ হিসাবে বিবেচনা করেন। এই কারণেও বেশি পরিমাণ মানুষ কোভিডে ভুগছেন বলে গণ্য করা হচ্ছে। বিশেষত দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর এই চুল ঝরে যাওয়ার সমস্যাটি বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের ফলে শরীরে তৈরি হয় পুষ্টির অভাব। অনাক্রমতাও কমে যায়। এখানেই প্রভাব পড়ে চুলে। বিশেষত, ভিটামিন বি১২ এবং ভিটামিন ডি-এর মাত্রা হ্রাস পায় করোনা সংক্রমণের ফলে। অন্যদিকে এই দুটি উপাদান চুল এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেখান থেকে শুরু হয় চুল ঝরে যাওয়ার সমস্যা। সাধারণত চুল ঝরে যাওয়ার সমস্যা এক থেকে দু মাসের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সাত থেকে ছয় মাসও সময় লাগে সুস্থ হতে। যে কোনও শারীরিক সমস্যা বা অসুস্থতা অতিরিক্ত হয়ে গেলে তা অসহ্যনীয় হয়ে ওঠে এবং সেটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে শরীরে। তাই চুল ঝরে যাওয়ার সমস্যাটিকেও সহজ ভাবে নেওয়া উচিত নয়।
করোনায় আক্রান্ত হলে প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর খাবার, যা শরীরে জোগাবে পুষ্টি ও শক্তি, বৃদ্ধি করবে অনাক্রমতা। এই একই পন্থা অবলম্বন করতে হবে টেলোজেন এফফ্লুভিয়ামের সমস্যাকে প্রতিরোধ করার জন্য। জীবনধারায় পরিবর্তন আনতে হবে। খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাদ্য। অ-রাসায়নিক অর্থাৎ প্যারাবেন, সালফেট-মুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। চুলের ত্বকে তেল বা কন্ডিশনার জাতীয় কোনও পণ্য ব্যবহার করা চলবে না। চুলের ফলিকলে যাতে আঘাত না লাগে সেই অনুযায়ী বড়-দাড়ার চিরুনি ব্যবহার করতে হবে। চুলকে সুন্দর রাখতে এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যার হাত থেকে রেহাই পেতে মেনে চলতে হবে এগুলি।
আরও পড়ুন: চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে? এর পিছনে আপনার কোনও অভ্যাস লুকিয়ে নেই তো?
আরও পড়ুন: করোনা পজিটিভ অবস্থায় টিকা নিলে শরীরের মারাত্মক প্রভাব পড়ে! কতটা যুক্তিযুক্ত