গর্ভাবস্থায় শরীরে নানা পরিবর্তন হয়। প্রসবের (Post Delivery) পরও এমন কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় কিংবা রয়ে যায় যা নিয়ে পথ চলা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। এই সময় কিছু শারীরিক সমস্যা হরমোন পরিবর্তনের জন্য দেখা দেয়। আবার এমনও কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে যা দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা তৈরি করতে পারে। এমনই কিছু সমস্যা হল প্রসবের পর জয়েন্টে ব্যথা (Joint Pain)। সি-সেকশনের পরও নিতম্বে ব্যথা, হাঁটুতে ব্যথার মত একাধিক উপসর্গ দেখা দেয়। বেশির ভাগ মহিলারাই এই ধরনের উপসর্গগুলো উপেক্ষা করেন। তাছাড়া প্রসবের পর শিশুর যত্নে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে নিজের খেয়াল রাখার সময় না বেশির ভাগ মহিলাই। কিন্তু প্রসবের পর জয়েন্ট ব্যথা খুব সাধারণ উপসর্গ এবং এর পিছনে একাধিক কারণ দায়ী।
গর্ভাবস্থায় জয়েন্টে ব্যথার প্রাথমিক কারণ হল ওজন বেড়ে যাওয়ায়। গর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন এবং শিশুর ওজন বাড়তে থাকে। প্রসবের পর সেই ওজন বহন করা কষ্টকর হয়ে ওঠে। এতে জয়েন্টে চাপ পড়ে। এখান থেকে জয়েন্টে ব্যথা শুরু করে। অন্যদিকে, অনেক মহিলাদের আগে থেকেই শরীরে নানা ব্যথা ও বাতের সমস্যা থাকে। এই সমস্যা প্রসবের পর আরও বেড়ে যায়।
অনেক ক্ষেত্রে যদি আপনার কোনও ভাবে জয়েন্টে বা টেলবোনে আঘাত লেগে থাকে সেই ক্ষেত্রে প্রসবের পর জয়েন্টে ব্যথার সমস্যা আরও বেড়ে যায়। গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন হয়। এই হরমোনগুলো অনেক সময় শরীরের লিগামেন্টগুলিকে শিথিল করে তোলে, এতে নরম্যাল ডেলিভারি সহজ হয়। কিন্তু প্রসবের পর, এই লিগামেন্টগুলি তাদের মূল অবস্থানে ফিরে আসতে কিছুটা সময় নেয়। এর ফলেও অনেক সময় জয়েন্ট ব্যথা শুরু হয়।
মূলত ৪-৬ মাসের মধ্যে এই জয়েন্টের ব্যথা কমে যায়। এছাড়া লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে এবং ঘরোয়া প্রতিকারের সাহায্য আপনি এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন।
-নিয়মিত ব্যায়াম করুন। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম না করার জন্য অনেক সমস্য জয়েন্টে ব্যথা হয়। প্রসবের পরও ব্যায়াম করুন। এতে ওজনও কমাতে পারেন। গর্ভাবস্থায় কোন ব্যায়াম করলে জয়েন্টের ব্যথা থেকে দ্রুত আরাম পাবেন, তার জন্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
-ব্যথা থেকে উপশম পেতে আপনি ঠান্ডা ও গরম সেঁক ব্যবহার করতে পারেন। আঘাত প্রাপ্ত স্থানে কিংবা ব্যথার স্থানে আইস প্যাক দিন। হিট ব্যাগও ব্যবহার করতে পারে। প্রয়োজনে গরম জলে স্নান করুন। এতে ব্যথা থেকে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়।
-প্রসবের পর তেল দিয়ে শরীর মালিশ করতে পারেন। তেল দিয়ে শরীর মালিশ করলে পেশীর কঠোরতা শিথিল হয়ে যায়। এর ফলে গাঁটে ব্যথার থেকে আরাম পাওয়া যায়। তেল মালিশের জন্য এমন তেল ব্যবহার করুন যা ব্যথা উপশম করতে কার্যকর।
আরও পড়ুন: দাম বাড়লেও কমেনি লেবুর উপকারিতা! গরমে সুস্থ থাকার মোক্ষম দাওয়াই এখন পাতিলেবুই