ওমিক্রন- কোভিডের এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট খুবই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্ব জুড়়ে।২৪ নভেম্বর প্রথম এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে রিপোর্ট পেশ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসতে শুরু করে ওমিক্রন আক্রান্তের হদিশ। ইতিমধ্যেই ভারতে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যান ২৩ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে আজ কলকাতাতেও মিলেছে এক ওমিক্রন আক্রান্তের হদিশ।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতের অবস্থা ছিল সবচেয়ে খারাপ। প্রচুর সংখ্যক মানুষ যেমন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন তেমনই চিকিৎসা অক্সিডেনের অভাবে প্রচুর মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা ওমিক্রনকে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট বলেই চিহ্নিত করেছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা বলেছেন এই ভ্যারিয়েন্ট কিন্তু খুব দ্রুত সংক্রমণ ছড়াবে। আর বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে এমনটাই।
ওমিক্রনের প্রভাবও কি হবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতন?
এই প্রশ্নই এখন সকলের মনে। দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারত যে ভাবে তছনছ হয়ে গিয়েছিল সেই অভিজ্ঞতা থেকেই কিন্তু এই সতর্কতা। দ্বিতীয় ঢেউ সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে খানিকটা স্তিমিত হওয়ার পরই নভেম্বর থেকে ফের করোনা আক্রান্তের হদিশ আসে। আর এই সংখ্যাটা কিন্তু ক্রমশই বাড়তে থাকে। রাজ্যে খুলেছে স্কুল-কলেজ-অফিস। স্কুল-অফিস খোলার পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যাটা কিন্তু বাড়ার দিকেই। এর মধ্যেই প্রবেশ ওমিক্রনের। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই আছড়ে পড়বে করোনার তৃতীয় ঢেউ। তবে এবার কোভিডের রোগ লক্ষণ আগের বারের মত অত জটিল হবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা।
এই দুই ভ্যারিয়েন্টের তুলনা কী ভাবে করবেন?
নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট ( B.1.1.529) নিয়ে এখনও গবেষণা চালাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসকরা। সকলের মত একটাই, এই ভাইরাস ডেল্টার থেকে অনেক বেশি সংক্রামক। দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও উপসর্গ মৃদু থাকবে। এখনও পর্যন্ত শ্বাসকষ্ট, অক্সিজেন কমে যাওয়া এরকম কোনও রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। ডেল্টার থেকেও অনেক বেশি মিউটেন্ট করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটি। এই ভ্যারিয়েন্টটি ৩০ বারেরও বেশি মিউটেন্ট হয়েছে। তবে এই ভ্যারিয়েন্টের জেরে কমছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। কোভিড ভ্যাকসিনের জেরে শরীরে যে সমস্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল সেগুলির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমেছে।
ওমিক্রনের উপসর্গ এখনও পর্যন্ত মৃদু
দক্ষিণ আফ্রিকার মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, করোনার এই ভ্যারিয়েন্টে যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের শরীরে উপসর্গ সাধারণ ঠান্ডা লাগার উপসর্গই। আগের মত অত জটিল নয়। আর এই সর্দি-জ্বর-কাশি-ক্লান্তি মৃদু উপসর্গই। তবে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের প্রত্যেকেরই গলা ব্যথা, কাশি, ক্লান্তি আর সারা শরীরে ব্যথা ছিল। খুব কম সংখ্যক মানুষকেই এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। বেশির ভাগই বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তা
যাঁদের কোভিড ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ নেওয়া ছিল তাঁরা সকলেই যে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন এমন নয়। কিন্তু যাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁদের শারীরিক অবস্থা খুব বেশি জটিল হয়েছে এমন নয়। সকলকেই যে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল এমনটাও নয়। তবে বিশেষজ্ঞদের অনুমান বুস্টার ডোজ দিলে তবেই কিন্তু ওমিক্রনের এই ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে লড়াই করার মত প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি তৈরি হবে শরীরে।
আরও পড়ুন: Oxygen level: এই পাঁচ প্রাকৃতিক উপায়েই বাড়িয়ে তুলুন শরীরের অক্সিজেন মাত্রা