Stroke: স্ট্রোক চিনবেন কীভাবে? স্ট্রোক আটকাতেই বা কী করবেন?

TV9 Bangla Digital | Edited By: megha

Dec 26, 2021 | 7:22 AM

স্ট্রোক হওয়ার প্রধান কারণ হল মস্তিষ্কের রক্তবাহী নালিতে প্লাক জমে রক্তবাহী নালির অভ্যন্তরীণ ছিদ্রটি সরু হয়ে যাওয়। এই সমস্যার নাম অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস। হেমারেজিক স্ট্রোক হওয়ার প্রধান কারণ হিসাবে উচ্চ রক্তচাপকে দায়ী করা হয়।

Stroke: স্ট্রোক চিনবেন কীভাবে? স্ট্রোক আটকাতেই বা কী করবেন?

Follow Us

বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে? কিন্তু এই সমস্যা বয়সের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং আপনার অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই আপনার স্বাস্থ্যের জন্য দায়ী। দীর্ঘ দিনের এই জীবনধারাই এক সময়ে গিয়ে স্ট্রোকের মত সমস্যা তৈরি করছে এবং পরিণাম হচ্ছে মৃত্যু।

স্ট্রোক কীভাবে হয়?

হঠাৎ করে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলের ব্যাঘাত ঘটলে স্টোক হয়। মস্তিষ্কের যে অংশে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়, সেই জায়গার কোষগুলির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। দেখা দেয় নানা শারীরিক সমস্যা। রক্ত মস্তিষ্কের বিভিন্ন প্রান্তে অক্সিজেন এবং গ্লুকোজ পৌঁছে দেয়। কোনও কারণে এই রক্ত পৌঁছবার পথে বাধার সৃষ্টি হলেই স্ট্রোক হয়। ব্রেনই যেহেতু শরীরের নানা অঙ্গের কাকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে, তাই স্ট্রোক হলে হাত পা অসাড় হয়ে যায়।

স্ট্রোকের ধরন

মূলত দুই রকমের স্ট্রোক হয়। ইসকেমিক স্ট্রোক এবং হেমারেজিক স্ট্রোক। ইসকেমিক স্ট্রোক-এ মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনিতে রক্ত জমে যাওয়ার ফলে হয়। হেমারেজিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনির দেওয়াল ছিঁড়ে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে স্নায়ু কোষগুলি নষ্ট হয়ে যায়।

স্ট্রোকের কারণ

স্ট্রোক হওয়ার প্রধান কারণ হল মস্তিষ্কের রক্তবাহী নালিতে প্লাক জমে রক্তবাহী নালির অভ্যন্তরীণ ছিদ্রটি সরু হয়ে যাওয়। এই সমস্যার নাম অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস। হেমারেজিক স্ট্রোক হওয়ার প্রধান কারণ হিসাবে উচ্চ রক্তচাপকে দায়ী করা হয়। রক্তবাহী নালির মধ্যে রক্তচাপ খুব বেড়ে গেলে রক্তবাহী নালী ফেটে রক্তক্ষরণ হয়।

স্ট্রোকের লক্ষণ

শরীরের একদিক অবশ হয়ে যায়।

হঠাৎ কথা জড়িয়ে যায়। মুখ বেঁকেও যেতে পারে।

রোগী শরীরের যে কোনও একদিকে হেলে পড়েন। শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন রোগী।

চিকিৎসা

উপসর্গ দেখলেই সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এই সময়ের মধ্যে রোগীর চিকিৎসা শুরু হলে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কমতে থাকে। সাধারণত সিটি স্ক্যান, এমআরআই করে রোগীর স্ট্রোক চিহ্নিত করা যায়।

ইসকেমিক স্টোকের মস্তিষ্কের ওই নির্দিষ্ট জায়গায় রক্ত প্রবাহ পুনরায় চালু করার জন্য কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। অবশ্য দরকার পড়লে ব্রেনের রক্তবাহী নালীর মধ্যে স্টেন্ট বসিয়েও ক্লট সরাতে হতে পারে।

হেমারেজিক স্ট্রোকের চিকিৎসায় প্রাথমিকভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়। এছাড়া অপারেশন করার দরকার পড়তে পারে।

রিহ্যাবিলিটেশন

সব রোগীকে সময়মতো হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই উপযুক্ত রিহ্যাবিলিটেশন জরুরি। এই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া যত তাড়াতাড়ি শুরু হয়, রোগীর পঙ্গুত্বের সমস্যা স্বাভাবিক হওয়ার সুযোগ তত বেশি।

স্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসা

কোনও ব্যক্তির স্ট্রোক হয়েছে বুঝলেই প্রথমেই তাঁকে শুইয়ে দিন। শোওয়া অবস্থায় ব্যক্তির ঘাড় একপাশে হেলিয়ে রাখুন। ওই ব্যক্তির মুখ খোলা রাখুন। এতে তাঁর শ্বাস নিতে সমস্যা হবে না। দেখবেন যেন মুখে কিছু আটকে না থাকে। কিছু আটকে থাকলে বের করে দিন । রোগী ব্লাডপ্রেশারের ওষুধ খেলে, তখনই একটা খাইয়ে দিন। অ্যাম্বুলেন্সে খবর দিন। অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়া গেলে, অন্য কোনও গাড়িতে করে বড় হাসপাতালে নিয়ে যান রোগীকে। আশপাশে এমন কিছু না থাকলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রও যেতে পারেন। স্ট্রোক হওয়ার পরের এক থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যত তাড়াতাড়ি হাসপাতালে পৌঁছাবেন, রোগীর ভালো হয়ে ওঠার সুযোগ থাকবে তত বেশি।

কারা সাবধান হবেন?

উচ্চ রক্তচাপের রোগী, ধূমপান, জর্দা, গুটখা, খৈনি খান এমন ব্যক্তি, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের রোগী, হার্টের অসুখে ভোগা ব্যক্তি, স্থূলত্ব বা ওবেসিটিতে আক্রান্ত লোক,স্ট্রেস-এ ওভগেন এমন ব্যক্তি অত্যধিক মানসিক চাপ, পরিবারে স্ট্রোকের ইতিহাস আছে এমন ব্যক্তির স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

স্ট্রোক প্রতিরোধ

ব্লাড প্রেশার ১২০/৮০ রাখার চেষ্টা করতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কাঁচা নুন খাবেন না। রক্তচাপ না থাকলেও দিনে তিন গ্রামের বেশি নুন খাওয়া চলবে না। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখুন। রক্তে বেশি কোলেস্টেরলে থাকলে কমান। ওজন বেশি থাকলে কমান। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। রেড মিট খাবেন না। মিষ্টি, তেল, ঘি কম খাওয়াই ভালো। সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, খৈনি ইত্যাদি তামাকজাত দ্রব্য ত্যাগ করুন। মদ্যপান ছাড়তে হবে। হার্টের অসুখ থাকলে, আগে স্ট্রোক হয়ে থাকলে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খান।

 

আরও পড়ুন: Winter Care Tips: শীতকালে গরম থাকার সহজ উপায় কী? ঠান্ডা ও ফ্লু এড়াতে এই পাঁচটি জিনিস মাথা রাখুন

Next Article