আগামী ২ এপ্রিল থেকে শুরু হতে চলেছে রমজান মাস (Ramadan)। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের কাছে এটি অত্যন্ত পবিত্র একটি মাস। এই এক মাস বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত রোজা (Roza) অর্থাৎ উপবাস (Fasting) পালন করবেন। যাঁরা রোজা পালন করেন, তাঁরা সূর্যোদয়ের আগে খাবার খান, এরপর সারাদিন জলও পান করেন না। এরপর সূর্যাস্তের সময় ইফতারের আচার বিধি রোজা ভঙ্গ করেন। রোজা রাখারও কিছু নিয়ম রয়েছে। যদি আপনি অসুস্থ হন, কেউ যদি গর্ভবতী হন, বা কেউ যদি সন্তানকে স্তন্যপান করান- এমন ব্যক্তির রোজা রাখার প্রয়োজন নেই। কিন্তু ডায়াবেটিস (Diabetes) এখন যেভাবে লাইফস্টাইল ডিজিজে (Lifestyle Diseases) পরিণত হয়েছে, তাতে আপনি ডায়াবেটিক রোগী হলে রোজা রাখবেন কি না এটা সম্পূর্ণ আপনার সিদ্ধান্ত। তবে ইসলাম ধর্ম এবং চিকিৎসকরা অসুস্থ ব্যক্তিদের রোজা রাখার অনুমতি দেয় না।
ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখার সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। কারণ কোনও কারণে সুগার ফল্ট করলে কিংবা শরীরে অস্বস্তি দেখা দিলে নানা ঝুঁকির মুখে পড়তে হতে পারে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে করতে সেহরি ও ইফতারে সঠিক ডায়েট মেনে চলতে হবে। নাহলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া (নিম্ন শর্করা) বা হাইপারগ্লাইসেমিয়া (উচ্চ শর্করা) হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এরপরও যদি আপনি রোজা রাখতে ইচ্ছুক হন, তাহলে প্রথমে আপনার চিকিৎসকের থেকে পরামর্শ নিন। এর পাশাপাশি আপনি যদি স্বাস্থ্যকর উপবাস রাখতে চান এই রমজান মাসে, মেনে চলুন সহজ কিছু টিপস…
-রোজা রাখতে হলে সূর্যোদয়ের আগে ভরপেট খাবার খেতে হয়, যাকে ইসলামে ‘সেহরি’ বলা হয়। দিনের শুরুতেই এমন খাবারকে ডায়েটে রাখুন যা আপনাকে সারাদিন হাইড্রেট রাখবে। যেহেতু এখন গরমের সময়, উপরন্ত রোজা রাখলে জলও পান করতে পারবেন না, তাই সারাদিন হাইড্রেট থাকা খুব জরুরি। সেহরিতে ডাবের জল, লেবুর জল পান করতে পারেন। এর পাশাপাশি ইফতার ও সেহরিতে অন্তত ৭-৮ গ্লাস জল পান করুন।
-সারাদিন হাইড্রেট থাকার জন্য সেহরি জল-ভিত্তিক ফল খান। তরজুম, শসার মত ফলগুলিতে জলের পরিমাণ বেশি। আর গ্রীষ্মকালে সহজেই আপনি এই ধরনের ফল বাজারে পেয়ে যাবেন। সেহরিতে খাবার খাওয়ার সময় বিশেষ মনোযোগ দিন। রোজা রাখার সময় মাঝে মাঝে রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করিয়ে নিন।
-সেহরি হোক বা ইফতার, ডায়েটে এমন খাবার বেছে নিন যা গ্লাইসেমিক সূচক কম। ফল আর দই- এই দুটি খাবারকে সেহরি ও ইফতারে অবশ্যই রাখুন। এর পাশাপাশি কম গ্লাইসেমিক সূচক যুক্ত কার্বোহাইড্রেট খাবার যেমন ব্রাউন রাইস, আটার তৈরি খাবার, সবুজ শাকসবজি বেশি করে খান।
-তেলে ভাজা খাবার, মিষ্টি জাতীয় খাবার কিংবা চিনি দিয়ে তৈরি খাবার এড়িয়ে চলুন। ভাত, আলু ও ময়দার তৈরি খাবার উপবাস রাখার সময় কিংবা ভাঙার পর খাবেন না। এর বদলে ফাইবার-যুক্ত খাবার খান বেশি করে। ওটসমিল এই ক্ষেত্রে একটি ভাল বিকল্প।
-রোজার ভাঙার পর ইফতারের খাবারকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিন। একসঙ্গে বেশি খাবার খাবেন না। স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস দিয়ে উপবাস ভাঙুন। এরপর হাই প্রোটিন, লো কার্ব খাবার খান। ফল, বাদাম, শাকসবজি খান। ফাইবার জাতীয় খাবার অন্ত্রের পাশাপাশি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
-রোজা রাখার সময় অতিরিক্ত পরিশ্রম করবেন না। যদি উপবাস রাখার সময় শরীর খারাপ লাগে বা অস্বস্তি হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আরও পড়ুন: অনিদ্রার সমস্যায় ভুগছেন? আয়ুর্বেদের কথা শুনে চলুন…