করোনার আগেই যে একটি অতিমারি অজান্তেই ঘটে গিয়েছে, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। কারণ বর্তমান জীবনযাত্রার মধ্যে প্রবেশ করেছে ডায়াবেটিসের (Diabetes) মত এক ব্যাধি। এই অসুখ যে সবসময় উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া যায় না, দৈনন্দিন জীবনযাত্রার কারণেও ঘটতে পারে। ডায়াবেটিস হল একটি দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা, যা রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। সময়ের সঙ্গে হৃদরোগ, স্থূলতা, অন্ধত্ব, ডায়াবেটিক ফুট এমনকি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে ফেলারও প্রয়োজন হয় কখনও কখনও। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের মধ্যে যদি ডায়াবেটিসের প্রবণতা থাকে, তাহলে তা কমাতে একজন ব্যক্তিকে কী কী করণীয়, তা আজও মানুষ বুঝে উঠতে পারল না। এর জন্য় কয়েকটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস (Healthy Habits) তৈরি করলেই ডায়াবেটিসের মত মারাত্মর রোগকে প্রতিরোধ করা যাবে…
পর্যাপ্ত ঘুম- পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে ইনসুলিন গ্রন্থে দারুণ প্রভাব পড়ে। একই সঙ্গে ওজন বৃদ্ধি, উদ্বেগ, পরিপাকতন্ত্রের ব্যাধি ও মানসিক বিষন্নতার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। পরিবারে যদি ডায়াবেটিসের প্রবণতা দেখা যায় তাহলে পর্যাপ্ত ঘুম সবচেয়ে আগে দরকার। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দিনে সাত থেকে আঠঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। একটি সমীক্ষা অনুসারে, ঘুমের সময় বাড়ানোর ফলে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত হয় যার ফলে পুরুষদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।
স্বাস্থ্যকর খাবার খান- সঠিক সময়ে সঠিক খাবার খাওয়া ডায়াবেটিসের প্রবণতা হ্রাস করে। ডায়েটে শুধুমাত্র ক্যালোরি-যুক্ত যেমন চিনি ও অপরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট থাকে, তাহলে রক্তের শর্করার গ্লুকোজে রূপান্তর করতে খুব বেশি ইনসুলিন নির্গত হয়। ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে ঘন ঘন ক্ষুধামন্দা, ওজন বৃদ্ধি এবং এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ওবেসিটি দেখা দিতে পারে। দি আপনার পরিবারে ডায়াবেটিস রোগী থাকে, তাহলে একটি উচ্চ-প্রোটিন ডায়েট মেনে চলুন। তাতে শর্করা এবং কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ সীমিত করুন।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন:
টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা প্রাথমিকভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে হার মেনে যান। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে, একই স্থূলতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে বডি মাস ইনডেক্স (BMI) স্থূলতার সীমার মধ্যে থাকে তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওজন কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রিডায়াবেটিস রোগীদের তাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থার ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে। পেটের চারপাশে অতিরিক্ত চর্বি জমে শরীরকে ইনসুলিন প্রতিরোধী করে তুললে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
সক্রিয় থাকুন
দীর্ঘ সময় ধরে একই জায়গায় বসে পড়াশুনা করা বা সিনেমা দেখা বা বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করলে ডায়াবেটিস শরীরের মধ্যে বাসা বাধতে পারে। পর্যাপ্ত ওয়ার্কআউট করা এবং সক্রিয় থাকলে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি পরিবর্তন হতে থাকে। শরীরের ইনসুলিন তৈরি এবং ব্যবহার করার পদ্ধতিও পরিবর্তন করতে পারে।
রক্তে শর্করার মাত্রার উপর নজর রাখুন:
শরীরের ওজন যেমন স্থূলতা, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস রোগ বাসা যাতে চেপে না বসে, তার জন্য রক্তে শর্করার মাত্রার উপর নজর রাখা উচিত। নিয়মিত তা নজরে রাখা আবশ্যক।
নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা-
পরিবারে যদি কারোর হয়ে তাকে, তাহলে সকলেরই রক্তে শর্করার মাত্রার পরীক্ষা করা উচিত। দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় অস্বাস্থ্যকর কিছু ঘটে থাকলে সতর্ক থাকুন। শারীরিক কোনও অসুবিধা থাকলে তা অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়া দরকার।
আরও পড়ুন: Child Health: স্কুল খোলার পরেই বাচ্চা বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছে কেন? দায়ী এই ৮ কারণ