ডায়াবেটিসদের মধু খাওয়া কি নিরাপদ? খেলেও কোন মধু খাবেন?

মধুমেহ রোগ কী, এ প্রশ্ন এখন অমূলক। ঘরে ঘরে এখন ডায়াবেটিস রোগী। শিশু থেকে প্রবীণ, সকলেই প্রায় এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। চিন ও আমেরিকায় টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

ডায়াবেটিসদের মধু খাওয়া কি নিরাপদ? খেলেও কোন মধু খাবেন?
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Updated on: Apr 04, 2021 | 4:43 PM

ডায়াবেটিস (diabetes) রোগীদের মধু খাওয়া কি নিরাপদ? এ প্রশ্নে বহু বিতর্ক রয়েছে। তবে মধু একটি উত্তম খাদ্য ও পানীয়। বহু যুগ ধরে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মধুকে ব্যবহার করে ঔষধি খাদ্য তৈরি করা হয়। ভারতে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে মধু উপকারীতা নিয়ে বিশেষ আলোচনা রয়েছে। মধু (Honey) এমন একটি প্রাকৃতিক জিনিস যা দৈনন্দিন কাজে লাগে। দীর্ঘ সর্দি-কাশিতে বা যাঁদের ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগার সম্ভাবনা রয়েছে, তাঁদের জন্য বিশেষ করে উপকারী। শিশু থেকে প্রবীণ, সকলের জন্যই মধু ভীষণ কার্যকরী। কিন্তু প্রশ্ন শুরু হয় ডায়াবেটিস (blood sugar) রোগীদের বেলায়। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধু খাওয়া কতটা এবং কোন মধু খাওয়া শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

মধুতে যথেষ্ট পরিমাণে শর্করা আছে। মধুতে ২৫-৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ (glucose ), ৩৪-৪৩ শতাংশ ফ্রুকটোজ, ০.৫-৩ শতাংশ সুক্রোজ ও ৫-১২ ম্যালটোজ থাকে। বাকি শর্করাটুকুও রেচন প্রক্রিয়ায় শেষ পর্যন্ত গ্লুকোজেই (Blood glucose) রূপান্তরিত হয়। তার মানে মধুর প্রায় ৭৫- ৮০ শতাংশ গ্লুকোজে পরিণত হয়। প্রতি গ্রাম মধু থেকে ১.৮৮ কিলোক্যালোরি শক্তি মেলে। এতে সামান্য পরিমাণে প্রোটিনও পাওয়া যায়। অনেকের বিশ্বাস, মধুমেহ রোগে আক্রান্তদের মধু খেলে কোনও ক্ষতি হয় না। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সব মধু ডায়াবেটিসদের জন্য নয়। যে মধু মৌমাছির (honeybees) চাক ভেঙে নির্যাস বের করে মধু বের করা হয়, সেই মধুই একমাত্র ডায়াবেটিসদের জন্য উপকারী। বাজারজাত বা কাঁচের শিশিতে বিক্রি হওয়া মধু খেলে উল্টে বিপদ ঘটতে পারে। অজান্তেই শরীরের মধ্যে অন্য রোগ ডেকে আনতে পারেন নিজেরাই। শুধু তাই নয়, প্রাকৃতিক মধু বা অকৃত্রিম মধু দিনে একবার ও একচামচের বেশি নয়। তাই এবার থেকে মধু খাওয়ার ব্যাপারে একটু সচেতন হলেই শরীর সুস্থ থাকবে নিঃসন্দেহে।

আরও পড়ুন এখানে: নিয়মিত লেবুর রস খাচ্ছেন? রক্তে বিষ ঢুকছে অজান্তেই…

সারা বিশ্বে টাইপ-২ ডায়াবেটিস (diabetes mellitus) আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। এসব রোগীদের অধিকাংশ সময়ই মিষ্টি জাতীয় খাবার না খাওয়ার নির্দেশ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকে বিকল্প হিসেবে মধু খাওয়ার কথা বলে থাকেন। যদি রোগী ইনসুলিন গ্রহণ করেন তাহলে তাকে প্রতিদিনের কার্বোহাইড্রেট সংখ্যার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। টাইপ-২ ডায়াবেটিস (type 2 diabetes) রোগীদের কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবারের উপাদানের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। তা না হলে রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে বিশেষজ্ঞদের গবেষণা বলছে, ডায়াবেটিস রোগীদের সীমিত পরিমাণে মধু খাওয়া যেতে পারে। তবে মধু খেতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে খাওয়া উচিত।