Cognitive Disease: ৪০-এই একটু-একটু করে ভুলে যাচ্ছেন প্রয়োজনীয় সব তথ্য, কী রয়েছে এর নেপথ্যে?

Dementia: অল্পবয়সীদের মধ্য ডিমনেশিয়ার জন্য বিশেষজ্ঞরা নেপথ্য কারণ হিসাবে দায়ী করছেন কোভিডকেই

Cognitive Disease: ৪০-এই একটু-একটু করে ভুলে যাচ্ছেন প্রয়োজনীয় সব তথ্য, কী রয়েছে এর নেপথ্যে?
আপনারও কি একই সমস্যা হচ্ছে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 07, 2022 | 3:55 PM

বিজ্ঞানের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যস্ততা বেড়েছে জীবনেও। কর্মজীবনের ব্যস্ততা এতটাই বেশি যে অন্য কোনও দিকে নজর দেওয়ার সময় পর্যন্ত নেই। ফল? মধ্য চল্লিশেই আক্রান্ত ডিমনেশিয়ায়। প্রয়োজনীয় কিছুই মনে রাখতে না পারা, ভুলে যাওয়া, স্মৃতিভ্রমের মত সমস্যা এখন খুব কম বয়সেই জাঁকিয়ে বসছে। চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ- এই বয়সের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে এই সমস্যা। কগনিটিভ ডিসঅর্ডার ( Cognitive Disorders) বা অ্যালঝাইমার্স (Alzheimer’s) আগে আসত ৬৫ পেরিয়ে। কিন্তু বর্তমানে কাজের চাপই এমনই যে ৩০ পেরোতে না পেরোতেই অনেকের মধ্যে দেখা দিচ্ছে অ্যালঝাইমার্সের লক্ষণ।

অল্পবয়সীদের মধ্য ডিমনেশিয়ার জন্য বিশেষজ্ঞরা নেপথ্য কারণ হিসাবে দায়ী করছেন কোভিডকেই। কোভিডকালে সকলেই নানা রকম মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। অনেকেই ডিপ্রেশনে ভুগেছেন। কোভিড পরবর্তী সময়ে চাপ বেড়েছে সকলের কর্মস্থলেই। এছাড়াও আছে অতিমাত্রায় স্ট্রেস। রোজকার অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস, হার্টের সমস্যা, মাত্রাছাড়া ধূমপান, মদ্যপান, মাদকাসক্তি ইত্যাদি নানা কারণ বাড়িয়ে দিচ্ছে অ্যালঝাইমার্সের সম্ভাবনা।

কলকাতারই বাসিন্দা ৩২ বছরের এই যুবতী, পেশাগত ভাবে বিজ্ঞাপন দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত। সারাক্ষণই কাজের প্রয়োজনে তাঁকে ক্রিয়েটিভ ভাবনার মধ্যে থাকতে হয়। বেশ কয়েকদিন ধরে ওই যুবতীর সমস্যা হচ্ছিল তিনি কোনও নাম মনে রাখতে পারছিলেন না। যাঁদের সঙ্গে রোজ দেখা হয়, কথা হয় তাঁদের নামই তিনি ভুলে যাচ্ছিলেন। আর নাম ভুলে গেলে তাঁর ভয়ংকর রাগ হয়ে যাচ্ছে নিজের উপর। ৩৭ বছরের এই যুবকের সমস্যা আবার অন্যরকম। কাজের চাপ এমনই যে নিজের ক্যান্টিন কোথায় তাই তিনি ভুলে যাচ্ছেন। এমনকী খুঁজে পাচ্ছেন না বসের ঘরও।

দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে নীলাঞ্জন মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক (Kolkata Chapter Of Alzheimer’s And Related Disorders Society Of India) বলেন, যাঁরা কর্মব্যস্ত, নিয়মিত ভাবে কোনও না কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের সকলেরই কাজের ধরণে এসেছে পরিবর্তন। অত্যধিক কাজের চাপই প্রভাব পড়ছে রোজকার জীবনে। তবে এত কম বয়সে ডিমেনিশার সমস্যার জন্য রোজকার জীবনযাত্রাকেই দায়ী করেছেন তিনি। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, চাহিদার পারদ আর অতিরিক্ত কাজে ভারসাম্য হারিয়েছে জীবন। রোজকার কাজের চাপ, ডেডলাইন মিট, টার্গেট-এই সবকিছুর চাপে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে স্বাভাবিক জীবন ছন্দ- যে কারণে ভাবনা-চিন্তা করার ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে। ‘কিছুই মনে রাখতে পারছেন না, সবই ভুলে যাচ্ছেন- এরকম সমস্যা নিয়ে আগে ৬৫ ঊর্ধ্বরা আসতেন, এখন গড় রোগীদের বয়স নেমে এসেছে ৩০-এ’- ওই একই প্রতিবেদনে জানান স্নায়ু চিকিৎসক অমিতাভ ঘোষ।

জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে না পারলে এই সমস্যার কোনও সমাধান নেই। মস্তিষ্কর চাপ নেওয়ার একটা নির্দিষ্ট ক্ষমতা থাকে। মাথার মধ্যে এতরকম এত কিছু ঘুরতে থাকে যেখান থেকে সব এক জায়গায় জট পাকিয়ে যায়। সঙ্গে হাইপার টেনশন, ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস আর কতোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে আরও বিপদ। সেক্ষেত্রে রক্তজালিকা মোটা হয়ে যায়। বেড়ে যায় স্ট্রেসের সম্ভাবনা। তাই মদ্যপান, ধূমপান থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকার পরামর্শ চিকিৎসক ঘোষের। ‘সমাজের একটা বড় অংশের মানুষ, যাঁরা নির্দিষ্ট কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত তাঁদের মধ্যে বাড়ছে কগনিটিভ ডিজিজ। যার মূল তিন যোগসূত্র হল স্ক্রিনিং টাইম, খাওয়া এবং ঘুম। যা রীতিমতো অ্যালার্মিং’- অমিতাভ ঘোষ।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।