৫০ বছর পার করলেই বার্ধক্যের কাছাকাছি চলে গেছেন? এই বয়সেই যতরকম রোগের বাসা বাঁধে শরীরে। তাই দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। সবচেয়ে সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে স্বাস্থ্যের উপর বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। তবে কিছু কিছু অসুখ রয়েছে, যেগুলি এই বয়সে সাধারণত লক্ষ করা যায়। সেগুলি কী দেখে নেওয়া যাক একনজরে…
অস্টিওপোরোসিস- ন্যাশানাল অস্টিওপোরোসিস ফাউন্ডেশনের মতে, এই বয়সে হাড় দুর্বল হয়ে যায়। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান। তাতে হাড় মজবুত থাকে। নিয়মিত ব্যায়ামে কার্ডিয়ো ও ডিফেন্স প্রশিক্ষণ নিন, তাতে হাড় আরও শক্তিশালী হতে পারে। ধূমপান ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন। হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নিন।
উচ্চ রক্তচাপ: হাভার্ড হাইস্কুলের মতে, ৫৫ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি পুরুষের উচ্চ রক্তচাপ বেশি দেখা গিয়েছে। তাঁদের ১২০/৮০ এর বেশি পরিমাপ পাওয়া গিয়েছে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, ডিমেনশিয়া ও কিডনির সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষজ্ঞরা প্রতি বছর রক্তচাপ পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন।
উচ্চ কোলেস্টেরল: আমেরিকান ফ্যামিলি ফিজিশিয়ানের মতে, ৫৫ বছরের বেশি বয়সে উচ্চ কোলেস্টেললের প্রথম সম্ভাবনা দেখা যায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে কোলেস্টেরল তৈরি হয়, যা ধমনীতে জমা হতে পারে, তার জেরে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। মহিলাদের মধ্যে, মেনোপজের কারণে এলডিএল ( খারাপ) কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। অন্যদিকে, এইচডিএলের (ভাল) মান কমে যায়। বিশেষজ্ঞরা প্রতি পাণচ বছর পর শরীরের কোলেস্টেরল পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্কদের ঘন ঘন পরীক্ষা করার প্রয়োজন।
হৃদরোগ- ৫৫ বছর পেরিয়ে গেলেই হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি হয়। প্রা. এক দশক ধরে এই সমস্যার প্রবণতা বেড়েছে। পুরুষদের জম্য ৪৫ বছর বয়সেই হৃদরোগের সমস্যা প্রায় দ্বিগুণ আকার নিয়েছে। অন্যদিকে মহিলাদের মেনোপজেক সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, যে কোনও বয়সে হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে স্বাস্থ্যকর খাবার খান, প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম করুন। হার্ট অ্যাটাকের বা স্ট্রোকে প্রাথমিক সতর্কতা লক্ষণগুলি আগে থেকে জেনে রাখুন।
ডায়াবেটিস- ৪০ বছর পার হতে না হতেই আজকাল ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। টাইপ ২ ডায়াবেটিস যে কোনও বয়সেই আঘাত হানতে পারে। ৫০ বছর বয়সে এই সমস্যা আরও বৃদ্ধি পায়। চিকিত্সা না করালে স্ট্রোক, হৃদরোগ, অন্ধত্ব, কিডনির সমস্যা ও ডিমেনসিয়া-র মতো মারাত্মক রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। ডায়াবেটিসের প্রবণতা থাকলে যত তাড়াতাড়ি পরীক্ষা করান ও ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
বিষন্নতা- শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি মানসিক সমস্যাও বৃদ্ধি পায় এই বয়সে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হলে হতাশা বা উদ্বেগের কারণ হতে পারে। প্রাথমিক লক্ষণগুলি হল, অনিদ্রা, ক্লান্তি,বিরক্তি। মানসিক সুস্থতার জন্য ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। সাহায্যের জন্য একজন থেরাপিস্ট বা সাইকিয়াট্রিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: মুখের দুর্গন্ধের কারণ কি শুধুই মুখ পরিস্কার না রাখা! নাকি মারাত্মক রোগের পূর্বাভাস?