কিছু আনন্দ ব্যক্তিগত, চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন বিরুষ্কা

অপেক্ষার অবসান শেষে বিরাট কোহলি, অনুষ্কা শর্মারঘরে আজ, সোমবার জন্ম হয়েছে কন্যা-সন্তানের। প্রথম মা-বাবা হওয়ার খুশি তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাগ করে নিয়েছেন সকলের সঙ্গে। পাশাপাশি অনুরোধ, “আশা করি, এই সময় আমাদের ব্যক্তিগত মুহূর্তকে আপনারা গুরুত্ব দেবেন।” আজকের পৃথিবীতে ‘সেলেব কিড’-এর বড় হওয়ার ছবি যখন ধাপে-ধাপে সোশ্য়াল মিডিয়ায় ‘পোস্ট’ করা যখন একপ্রকার ‘ট্রেন্ড’-এ পরিণত হয়েছে, তখন বিরুষ্কার এই সিদ্ধান্তের পিছনে কোন মানসিকতা কাজ করছে? ব্যখ্যা করলেন পেরেন্টিং কনসালটেন্ট পায়েল ঘোষ।

কিছু আনন্দ ব্যক্তিগত, চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন বিরুষ্কা
Follow Us:
| Updated on: Jan 11, 2021 | 7:29 PM

সকলের সঙ্গে সুখবর শেয়ার করে সেই সকলের কাছেই অনুরোধ রাখলেন যেন তাঁদের ‘ব্য়ক্তিগত’ জীবনকে গুরুত্ব জানানো হয়। অপেক্ষার অবসান শেষে বিরাট কোহলি (Virat Kohli)-অনুষ্কা শর্মার  (Anushka Sharma)ঘরে আজ, সোমবার জন্ম হয়েছে কন্যা-সন্তানের। প্রথম মা-বাবা হওয়ার খুশি তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাগ করে নিয়েছেন সকলের সঙ্গে। পাশাপাশি অনুরোধ, “আশা করি, এই সময় আমাদের ব্যক্তিগত মুহূর্তকে আপনারা গুরুত্ব দেবেন।” অনুষ্কা আগেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, সন্তানকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে রাখতে চান। আজকের পৃথিবীতে ‘সেলেব কিড’-এর বড় হওয়ার ছবি যখন ধাপে-ধাপে সোশ্য়াল মিডিয়ায় ‘পোস্ট’ করা যখন একপ্রকার ‘ট্রেন্ড’-এ পরিণত হয়েছে, তখন বিরুষ্কার এই সিদ্ধান্তের পিছনে কোন মানসিকতা কাজ করছে? ব্যখ্যা করলেন পেরেন্টিং কনসালটেন্ট পায়েল ঘোষ।

বিরাট-অনুষ্কার এই সিদ্ধান্তকে আমি সম্পূর্ণ সমর্থন করছি। এটার তিনটে দিক দেখছি আমি।

আরও পড়ুন, সেলেব হোক বা সাধারণ মানুষ প্রিভেসিকে সম্মান জানানো উচিত

প্রথমত, সেলেব সন্তানের ছবি যে ভাইরাল হয়, তা অনেক সময়ই হয়, যখন বাবা-মা ইচ্ছে করে ভাইরাল করেন। ইচ্ছে করেই পাবলিসিটির জন্য মিডিয়াকে ডাকেন। তারপর যখন অনেকটা বেড়ে যায়, তখন সামলাতে না-পেরে নেগেটিভিটি দেখান। এক্ষেত্রে বিরাট এবং অনুষ্কা পারফেক্ট অভিভাবকের কাজ করেছেন। সেক্ষেত্রে ওঁরা একেবারেই চাননি, ব্যক্তিগত ব্যপারটা বাইরে প্রকাশ হোক। এখন একটা ফ্যামিলি ইউনিট তৈরি হচ্ছে। একে-অপরের অর্থাৎ তিনজনের বন্ডিং হতে সময় লাগবে, এই জায়গাটা যে ওঁরা খুব সুন্দরভাবে হ্যান্ডেল করেছেন, সেটার জন্য সাধুবাদ। একটা ছবি তো সোশ্যাল মিডিয়ায় দিলে আরও বেশি আনন্দ সৃষ্টি করতে পারত। সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হতে পারত। কিন্তু এটা ওঁরা চাননি। এই যে একটা সংযম দেখিয়েছেন, এটা পেরেন্টিংয়ের প্রথম ধাপের একটা বিরাট বড় অংশ।

View this post on Instagram

A post shared by Virat Kohli (@virat.kohli)

দ্বিতীয়ত, অধিকাংশ সময় সেলেবরা নিজেদের সন্তানের বিভিন্ন কার্যকলাপ সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। তারপর যখন সেটা ভাইরাল হয়ে যায়, বাচ্চারা কিন্তু মনে করে, আমিও বাবা-মায়ের মতো বিখ্যাত হয়ে গেলাম। ছোট-ছোট জিনিসেই তাদের চূড়ান্ত প্রত্য়াশা তৈরি হয়। কেন লোকে আমাকে সেভাবে লাইক করছে না, তিন-চার বছরের বাচ্চাও প্রাধান্য় (ইমপর্ট্য়ান্স) পেতে চায়। সেটা তাদের পরবর্তী জীবনে (যখন ধীরে-ধীরে জীবনের পথটা তৈরি হবে), তখন বিরাট বড় সমস্যা তৈরি করে। খুব সহজেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন, লক্ষ্মী এল ঘরে…

তৃতীয়ত, এই যে চারদিকে মিডিয়া এক্সপোজার, ভাইরাল বা ডিজিট্যাল লাইফ এটা বাচ্চাদের জীবনে ছোট থেকে যতটা কম আসে, সেলিব্রিটি হোক বা সাধারণ মা-বাবা, ততটাই ভাল। কারণ অনেক সময় ছোট-ছোট এ সব ব্যাপারই ডিজিট্যাল লাইফের প্রতি বিরাট ঝোঁক (অ্যাডিকশন) তৈরি করে ফেলে। বিরাট-অনুষ্কা ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়টা যে সম্মান করেছেন এবং চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, কিছু-কিছু সম্পর্ক বা পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগতভাবেই আনন্দ করতে হয়, এই জায়গাটা বড় শিক্ষার জায়গা। বাকিদেরও এই বিষয় নিয়ে ভাবা দরকার। এই সময়টা মায়ের বিশ্রাম দরকার, নতুন একটা রুটিনের সঙ্গে আত্মস্থ হওয়া দরকার এবং বন্ডিং দরকার। তাই চারপাশের কোলাহলের থেকে নিজেরা আগে একে-অপরের সঙ্গে পরিচিত হয়ে নিক, নতুন রুটিনের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে নিক, তারপর তো সব রইলই।

আরও পড়ুন, বাবা হলেন বিরাট