Syphilis: ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে সিফিলিস, লকডাউন পরবর্তী সময়ে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা! বলছে গবেষণা

sexually transmitted diseases: কোভিড পরবর্তী সময়ে বিশ্বজুড়েই বেড়েছে যৌনরোগ। বলছে সমীক্ষা। এবং সম্ভ্রান্ত পরিবারের কিশোরদের মধ্যে সেই আক্রান্তের সংখ্যা বেশি অনেকটাই।

Syphilis: ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে সিফিলিস, লকডাউন পরবর্তী সময়ে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা! বলছে গবেষণা
লকডাউন পরবর্তী সময়ে সম্ভ্রান্ত পরিবারের কিশোরদের মধ্যে বাড়ছে যৌনরোগের সম্ভাবনা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 05, 2021 | 4:42 PM

কোভিডের বাড়বাড়ন্তে বিশ্বজুড়েই ভুগছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। কোভিডে সংক্রামক রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা করে ওয়ার্ড তৈরি, আইসোলেশন বিভাগ, ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা, জোরদার সুরক্ষা বিধি, পর্যাপ্ত ওষুধের জোগান এসব দিকে নজরদারির ফলে উপেক্ষিত হয়েছে এইডস, থ্যালাসেমিয়া, ক্যানসারের মত জটিল রোগ-অসুখ। টান পড়েছে ওষুধেও।

আর এই ফাঁকে ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে সিফিলিস, গনোরিয়ার মত যৌন অসুখ। ২০১৯-এর জুনের পর থেকে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সিফিলিস। ২০২০-তে গিয়ে সেই সংখ্যাটা ছাড়িয়েছে অনেকখানিই। আগে যেখানে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১.২ শতাংস তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.৮ শতাংশ। তবে এবার আক্রান্তের তালিকায় কিশোরদের সংখ্যা বেশি অনেকটাই। এবং তথাকথিত উচ্চমধ্যবিত্তরা এই রোগে অনেক বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গত দু’দশকে এত সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হননি সিফিলিসে। লকডাউন পরবর্তী সময়ে সেই সংখ্যাটা বেড়েছে অনেকটাই। ৩৩ টি দেশের সিফিলিস রোগীদের জিনোম পরীক্ষা করে এই উদ্বেগজনক খবরটি দিয়েছে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা। লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং ব্রিটেনের হেলথ সিকিওরিটি এজেন্সির যৌথ উদ্যোগে হয় এই সমীক্ষা। আর এই সব যৌনরোগই (Sexually transmitted diseases) এখন বিশ্বজুড়ে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে।

২০২০ সালের ওই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে এইডস আক্রান্তের সংখ্যাও আগের তুলনায় বেড়েছে ২ শতাংশ, শুধু তাই নয় গনোরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ। আর এই সব রোগের বাড়বাড়ন্ত মেট্রো শহরগুলিতেই। শুধু তাই নয় সিফিলিসের লক্ষণেও এসেছে বদল। যে সব লক্ষণ ২০১৯ সালেও দেখা যেত না সেই সব লক্ষণ দেখা দিচ্ছে ২০২১-এ। কারণ যে ব্যাকটেরিয়া এই সিফিলের জন্য দায়ী তার মিউটেশন ঘটেছে এবং বর্তমান নতুন দুই বংশ তাণ্ডব চালাচ্ছে বিশ্বজুড়ে।

সিফিলিস আদতে যৌনরোগ, যার জন্য দায়ী ট্রিপোনেমা প্যালিডাম নামের একটি জীবাণু। সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শেই এই রোগ ছড়ায়। ওরাল সেক্স থেকেও হতে পারে সিফিলিস। গর্ভবতী মহিলারা যদি কোনও কারণে সিফিলিসে আক্রান্ত হন সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে গর্ভস্থ শিশুর দেহেও। মূলত যৌন মিলনের ২-৪ সপ্তাহ পরে রোগ লক্ষণ দেখা দেয়। কারোর ক্ষেত্রে সেটা ৩ মাস পর্যন্ত দেরি হতে পারে।

সিফিলের লক্ষণ এক একজনের ক্ষেত্রে এক একরকম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আলসারের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে শরীরে। সারাদেহে প্রথমে ব্রণর গুটির মত দেখা যায়। পরে তা বড় হতে থাকে। তবে ছেলেদের ক্ষেত্রে পেনিসে আলসার ধরা পড়ে আর মেয়েদের ক্ষেত্রে ভ্যাজাইনাতে।

অনেকেই এই উপসর্গগুলো বুঝতে না পেরে এগুলো এড়িয়ে চলেন। তারা ভাবেন, চিকিৎসকের সাহায্য ছাড়াই এগুলো সারিয়ে ফেলতে সক্ষম হবেন। তবে তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলে কোনোরকম ওষুধ ছাড়াই আলসার সেরে যায়। কিন্তু যখন শরীরের এই সব গুটির রং পরিবর্তন হয় তখন অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাবেন। কারণ এই অবস্থা হল সিফিলিসের দ্বিতীয় পর্যায়।

তৃতীয় পর্যায়ে এসে অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হয়, যেমন শ্বাসতন্ত্র, পাকস্থলী, যকৃত, মাংসপেশী এবং হাড়। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো যখন সিফিলিস প্রধান আর্টারিকে আক্রান্ত করে। এ সময় মৃত্যুও ঘটতে পারে।

চতুর্থ পর্যায়ে সিফিলিস শরীরে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। হৃদপিণ্ডে জ্বালাপোড়া শুরু হয়, যকৃত বা লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, শরীরের কিছু অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হতে পারে এবং মস্তিষ্কে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া এই রোগে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়, স্নায়ুকোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চিন্তাধারায় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।

আরও পড়ুন: Asthma: শীত পড়লেই বাড়ে অ্যাজমার সমস্যা, যে ভাবে সুরক্ষিত রাখবেন নিজেকে