অ্যান্টি-স্লিপিং পিল কতটা বিপজ্জনক? জানালেন ‘ইনস্টিটিউট অফ স্লিপ সায়েন্স’-এর প্রধান
Anti-Sleeping Pill Side Effects: এশীয় দেশগুলির মানুষ সপ্তাহে সাড়ে ছয় ঘণ্টারও কম সময় ঘুমোন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের গড়ের তুলনায় যা ৩০ মিনিট কম। অন্যদিকে, উত্তর ইউরোপীয় দেশগুলি (এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ড) এবং অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে মানুষ গড়ে ৭ ঘণ্টা ঘুমোয়।

চলছে উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা। ঘুমকে দূরে সরাতে কাপের পর কাপ কফি খাচ্ছেন পড়ুয়ারা। তার সঙ্গে অনেকেই খাচ্ছেন ‘অ্যান্টি-স্লিপ পিল’ও। কোনওভাবেই দু’চোখের পাতা এক করা যাবে না—যেন পণ নিয়েছেন পড়ুয়ারা। কিন্তু না ঘুমিয়ে এবং ‘অ্যান্টি-স্লিপ পিল’ খেয়ে মারাত্মক অবস্থা হতে পারেন, সেটা কি জানেন? সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে উত্তর প্রদেশের লখনউয়ে। দশম শ্রেণির এক ছাত্রী বোর্ড পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় নিয়মিত অ্যান্টি-স্লিপ পিল খাচ্ছিলেন। অতিরিক্ত ওষুধ সেবনে তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে যায় এবং তিনি জ্ঞান হারান। এমন ঘটনা আপনার সঙ্গেও ঘটতে পারে। অ্যান্টি-স্লিপ পিল স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে, এ বিষয়ে TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয় ‘ইনস্টিটিউট অফ স্লিপ সায়েন্স’-এর প্রধান সোমনাথ মাইতির সঙ্গে।
সোমনাথ মাইতি বলেন, “অ্যান্টি স্লিপ পিল ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া একদমই খাওয়া উচিত নয়। সাধারণত এই ধরনের ওষুধ ইনসোমনিয়া বা ঘুমের সমস্যায় ভুক্তভোগী মানুষদের দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে সকালে অ্যান্টি-স্লিপ পিল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। যাতে সেই ব্যক্তি সকালে না ঘুমিয়ে রাতে ঘুমোন।”
অ্যান্টি-স্লিপিং পিলগুলো মোডাফিনিল ড্রাগের বিভিন্ন রূপ। এগুলো মুলত প্রাথমিকভাবে নারকোলেপ্সি এবং শিফট ওয়ার্ক স্লিপ ডিসঅর্ডারের মতো রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের অ্যান্টি-স্লিপিং পিলগুলো খেলে ৪০ ঘণ্টারও বেশি আপনি না ঘুমিয়ে থাকতে পারবেন। কিন্তু এটি স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও উপকারী নয়।
অ্যান্টি-স্লিপিং পিল অনায়াসে ওষুধের দোকানে পাওয়া যায়। কম বয়সিরা পরীক্ষার সময় সবচেয়ে বেশি এই বড়ি খান, যা মোটেই ভাল নয়। দীর্ঘ দিন ধরে অ্যান্টি-স্লিপিং পিল খাওয়ার ফলে লখনউইয়ের ওই ছাত্রীর মস্তিষ্কের স্নায়ু ফুলে যায়। এর জেরে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে যায়; আর ওই ছাত্রী জ্ঞান হারায়। এই একই হাল হতে পারে আপনারও। এই প্রসঙ্গে সোমনাথ মাইতি বলেন, “কোনও মানুষ যদি টানা ৭ দিন না-ঘুমোন, তাহলে মৃত্যু অনিবার্য। তাছাড়া অ্যান্টি স্লিপ পিল ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়।”
প্রসঙ্গত, The Mint-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১-এর জানুয়ারি এবং ২০২২-এর জানুয়ারির মধ্যে ঘুম সম্পর্কিত একটি তথ্য প্রকাশিত হয়। সেখানে ৩৫টি দেশের ২২০,০০০-এরও বেশি মানুষের ঘুমের অভ্যাস বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আর এই গবেষণাটি করেছে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুর এবং ফিনল্যান্ডের ওরা হেলথ (Oura Health) নামক স্টার্ট আপ-এর গবেষকেরা। সেখানেই দেখা গিয়েছে, এশীয় দেশগুলির মানুষ সপ্তাহে সাড়ে ছয় ঘণ্টারও কম সময় ঘুমোন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের গড়ের তুলনায় যা ৩০ মিনিট কম। অন্যদিকে, উত্তর ইউরোপীয় দেশগুলি (এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ড) এবং অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে মানুষ গড়ে ৭ ঘণ্টা ঘুমোয়।
