ওয়ার্ক ফ্রম হোমে ঘাড়-পিঠ-কোমরে তীব্র ব্যথা? কমিয়ে ফেলুন সহজ উপায়ে

করোনা অতিমারি সব নিয়ম ওলোটপালট করে দিয়েছে। বাড়িটাই হয়ে উঠেছে অফিস! তবে ‘বাড়িতে বসে কাজ!’ বা ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’— কথাটা শুনতে যত সহজ, বিষয়টা ততটাই কঠিন। কারণ চেয়ার ছেড়ে ওঠার সুযোগ না পেলে এবং একটানা বসে কাজ করতে হলে পিঠে-কোমরে তীব্র ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দেখা দিতে পারে শিরদাঁড়ার স্থায়ী সমস্যাও।

ওয়ার্ক ফ্রম হোমে ঘাড়-পিঠ-কোমরে তীব্র ব্যথা? কমিয়ে ফেলুন সহজ উপায়ে
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 10, 2021 | 7:14 PM

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিনের বেশিরভাগ সময় একটানা চেয়ারে বসে থাকতে হচ্ছে কর্মীদের। অনেকে ভুল ভঙ্গিমায় বসে কাজ করছেন। এমনকী বসার জন্য নির্বাচন করছেন ভুল চেয়ার। এমনকী চেয়ারে বসার দেহভঙ্গিমাও থাকছে ভুল। ফলে শুধু পিঠে কোমরে ব্যথা নয়, হতে পারে ভয়াবহ রকমের ঘাড়ে ব্যথাও! চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন কাজের চাপের কারণে স্ট্রেস বাড়ছে। ফলে দেহে বাড়ছে কর্টিজল হর্মোনের মাত্রা। পেশি হয়ে পড়ছে অনমনীয়, শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে ও সারা শরীরে রক্তসঞ্চালন অনেকটাই কমে যাচ্ছে।

অথচ এই ধরনের সমস্যা মেটানো যায় কতকগুলো সহজ উপায়ে—

দেহভঙ্গি

কাজের সময় সঠিক দেহভঙ্গিতে চেয়ারে বসাটা সুস্থ থাকার অন্যতম চাবিকাঠি। প্রলম্বিত সময় ধরে চেয়ারে বসে থাকার অভ্যেস শিরদাঁড়ার ‘এস’ কার্ভকে ‘সি’ কার্ভে পরিণত করতে পারে। ফলে পেশি, লিগামেন্ট, টিস্যু এবং দুটি ভার্টিব্রার মাঝে থাকা ডিস্ক-এর উপর চাপ ফেলতে পারে। তৈরি হতে পারে ভয়ঙ্কর সমস্যা। সুতরাং ঘাড়-পিঠ-কোমর সবল রাখতে হলে সঠিক চেয়ার নির্বাচন ও প্রকৃত নিয়মে বসে কাজ করার পদ্ধতি জানতে হবে।

  • – এমন চেয়ারে বসুন যাতে কম্পিউটার থাকে চোখের সামনে। ঘাড় নীচু করে বা উঁচু করে যেন কম্পিউটারের মনিটরে চোখ রাখতে না হয়
  • -স্ক্রিন থাকবে চোখ থেকে ১ হাত দূরে।
  • -কম্পিউটারে কাজ করার সময় হাতলওয়ালা চেয়ার ব্যবহার করা দরকার। হাতদুটিকে হাতলে রেখে বিশ্রাম নিতে পারলে ভালো হয়।
  • -পিঠের পিছনে একটা ছোট কুশন দিয়ে দিন। বালিশ, কুশন না থাকলে একটা তোয়ালে গোল করে গুটিয়ে কোমরের নীচে দিয়ে রাখুন। চেয়ারে কোমর বেঁকিয়ে বসার প্রবণতা কমবে।
  • -পায়ের পাতা সম্পূর্ণভাবে যেন মেঝে স্পর্শ করে থাকে।

আরও পড়ুন : ওয়ার্ক ফ্রম হোমে বাড়ছে ‘স্ক্রিন টাইম’, কীভাবে চোখ ভাল রাখবেন?

ছোট্ট ব্যায়াম

একটানা দীর্ঘসময় চেয়ারে বসে থাকা এড়িয়ে চলুন। প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট অন্তর চেয়ার ছেড়ে উঠুন। ঘরের মধ্যেই চার চক্কর দিন। এভাবে একটু নড়াচড়া করলে শরীরে রক্তসঞ্চালন সঠিক থাকে। ফলে শরীরে নানা ব্যথা-বেদনাও কম হয়। ঘরে ঘোরাঘুরি করার সময় একটু স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ বা জগিং করার মতো মিনিট দু’য়েক লাফিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

  • বসে বসেই মাঝেমধ্যে একবার সামনে, একবার পিছনে এভাবে কাঁধ ঘোরাতে পারেন।
  • বসে বসেই মাঝে মধ্যে মিনিট খানেকের জন্য করুন ঘাড়ের ব্যায়াম। ঘাড় একবার ঘোরান ডানদিকে, একবার বামদিকে। একবার নীচে একবার উপরে।
  • ঘণ্টাখানেক অন্তর পরপর তিনবার লম্বা লম্বা শ্বাস নিন ফুসফুস ফুলিয়ে। ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন।
  • চাইলে বারকয়েক ডনবৈঠকও দিতে পারেন।

এক্সারসাইজ

সবাচাইতে ভালো হয় প্রতিদিন সারাদিনে অন্তত ৩৫ মিনিট এক্সারসাইজ করার অভ্যেস তৈরি করতে পারলে। ৩৫ মিনিট জগিং, এক্সারসাইজ শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী প্রমাণিত হতে পারে।