শীতকালের যত্ন বলতে কী শুধু ত্বক ও চুলের শুষ্কতা দূর করা? শীতকালে শরীর গরম থাকার জন্যও দরকার কিছু নির্দিষ্ট উপায়। শীতকালে কোনও গরম জায়গা থেকে উঠতে না-পসন্দ। তাই এই ঠান্ডার মরসুমে আয়ুর্বেদিক উপায়ে কীভাবে উষ্ণ থাকা যায়, তার কয়েকটি নিয়ম রয়েছে। অনেকেই ঘরোয়া উপায় হিসেবে দারচিনি ও আদা জাতীয় মশলা খাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু এছাড়াও কয়েকটি স্বাস্থ্যকর জিনিস রয়েছে, যার ফলে ঠান্ডায় আপনি খুব সহজেই নিজেকে গরম করে তুলতে সক্ষম হবেন ।
ডিসেম্বরের শেষে শীত এবার জাঁকিয়ে বসেছে। উত্তুরে হাওয়ায় দিনের বেলাতেও বেশ জবুথবু মানুষ। গ্রামাঞ্চলে তীব্র ঠান্ডায় প্রায় অসাড় অবস্থা। শহরাঞ্চলেও শুরু হয়েছে কনকনে ঠান্ডা আবহ। ফলে মানুষ এখন গরম খাবার, গরম জামাকাপড় আর গরম নরম কম্বলের মধ্যে থাকতে পছন্দ করছেন। কিন্তু এতকিছুর ও প্রয়োজন নেই। শরীরকে উষ্ণ রাখতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি রয়েছে।
মাসাজ হল শীতের ঠান্ডা আবহাওয়াকে মোকাবিলা করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায়। আয়ুর্বেদশাস্ত্র ভারতের প্রাচীন একটি চিকিত্সা ব্যবস্থা। যা শুধু শীত বলেই নয়., যে কোনও ঋতুতেই সুস্থ থাকার প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা অনুসরণ করে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরের উপযুক্ত যত্ন নেবেন কীভানে, রইল তারই কিছু টিপস…
বিশেষজ্ঞদের মতে, সূর্যোদয়ের ঠিক ৩০ মিনিট আগে ঘুম থেকে ওঠার পরামর্শ দেন। সারকাডিয়ানের নিয়ম অনুসারে, দিন শুরু সঙ্গে সঙ্গে শরীরে শক্তির মাত্রা ও হজম শক্তির স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। এর ফলে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে ও রাতেরবেলায় ভাল ঘুম নিশ্চিত করে।
আয়ুর্বেদ অনুসারে শীতের শুরুতে কী খাওয়া উচিত
শীতের মরসুমে অনেকেই শুষ্ক ত্বক ও মাথার ত্বকের সমস্যা নিয়ে অভিযোগ শুরু করেন। আয়ুর্বেদ অনুসারে, এটি মোকাবিলা করার আদর্শ উপায় হল প্রতিদিনের মাসাজ করতে পারেন, যা অভয়ঙ্গ নামেও পরিচিত।
শীতের শুষ্কতা এড়াতে অভয়ঙ্গ সবচেয়ে ভাল। এটি শুধু আপনার ত্বকের জন্যই নয়., মনকেও প্রান্ত করে। শরীরের উষ্ণতা ও হজমের পদ্ধতিগুলিকে স্বাভাবিক রাখে। শীতের অভয়ঙ্গের জন্য সেরা তেল হল তিল।
– স্নান করার সময় শীতকালে অল্প গরম জলের সঙ্গে ঠান্ডা জল মিশিয়ে নেওয়ার অভ্যাস অনেকেরই। তবে জানেন কী, গরম জলে স্নান করলে ত্বকের শুষ্কতা বৃদ্ধি পায়। তাই স্নান করার সময় গরম জল ব্যবহার না করাই ভাল।
আয়ুর্বেদ অনুসারে আদর্শ শীতকালীন খাদ্য
ঘি ও স্বাস্থ্যকর চর্বি
শীতকাল মানেই প্রচুর শাকসবজি, হরেক রকম খাবার খাওয়া। এই ঋতুতেই শরীরের হজমশক্তি স্বাভাবিক থাকে ও খিদের প্রবণতা বাড়ে। ঘি, তিলের তেল, বীজ এই সময় ডায়েটে যোগ করতে পারেন।
ভেষজ চা
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, আদা, দারচিনি, লেমনগ্রাস, গ্রিন টি, লেবু-মধু ইত্যাদি উপাদানের সঙ্গে ভেষজ চা খাওয়া হজমের জন্য উপযুক্ক। এছাড়া লিভারে উপর চাপ কমাতে ও সারাদিন শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।
রাতে পা মালিশ করা
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘি বা তিলের তেল বা সরষের তেল দিয়ে পা মালিশ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছা়ড়া মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ও অন্ত্র সুস্থ রাখতে এই মালিশ অত্যন্ত উপকারী।
গরম তেল দিয়ে স্ক্যাল্প মাসাজ করুন
শুষ্ক আবহাওয়ায় চুল শুষ্ক হয়ে যাওা স্বাভাবিক। তিল, ক্যাস্টর, বাদাম, সরষে ও অলিভ তেলের মত তেল দিয়ে মাসাজ করতে পারেন। গরম তেল দিয়ে মাসাজ করলে তা আরও উপকারী হয়।
আরও পড়ুন: Winter Care Tips: শীতকালে গরম থাকার সহজ উপায় কী? ঠান্ডা ও ফ্লু এড়াতে এই পাঁচটি জিনিস মাথা রাখুন