ঘরোয়া উপায়ে রেহাই পান যৌনাঙ্গের ইস্ট সংক্রমণ থেকে!

ভ্যাজাইনাল সংক্রমণের ক্ষেত্রে এসেন্সিয়াল অয়েল ভীষণ ভাবে কার্যকরী। আসুন জেনে নেওয়া যাক, কোন এসেন্সিয়াল ব্যবহার করবেন ইস্ট সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে।

ঘরোয়া উপায়ে রেহাই পান যৌনাঙ্গের ইস্ট সংক্রমণ থেকে!
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 28, 2021 | 9:35 AM

ভ্যাজাইনাল ইস্ট সংক্রমণ মহিলাদের মধ্যে হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। মূলত ভ্যাজাইনাতে থাকা ছত্রাকের বৃদ্ধি ঘটলে এই রোগ দেখা দেয়। মেডিকেলের ভাষায় একে বলা হয় ক্যান্ডিডা অ্যালবিকানস। এই রোগের ফলে অস্বস্তি, চুলকানি, জ্বালাভাব এবং অস্বাভাবিক ডিসচার্জ-এর মত একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। আপনি যদি প্রথম এই ধরণের সমস্যা সম্মুখীন হন, চেষ্টা করুন চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করার। তবে এমন কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যা মেনে চললে আপনি এই ইস্ট সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেতে পারেন।

ভ্যাজাইনার মধ্যে প্রথম থেকেই উপস্থিত থাকে ছত্রাক বা ইস্ট। অন্যদিকে, দইয়ের মধ্যেই উপস্থিত থাকে ছত্রাক। দইয়ের মধ্যে থাকা এই ছত্রাককে প্রোবায়োটিস হিসাবে বিবেচিত করা হয়, যাকে বলা হয় ল্যাকটোব্যাসিলাস অ্যাসিডিওফিলাস। এই ব্যাকটেরিয়া আপনার ভ্যাজাইনার ছত্রাকের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই দইকে আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন। তবে দইতে চিনি মেশাবেন না, এতে সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি থাকে। প্রোবায়োটিকস ক্যান্ডিডার বিরুদ্ধে ভীষণ কার্যকরী। তাই সমস্যা বেশি বৃদ্ধি পেলে আপনি প্রোবায়োটিকস সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।

ভ্যাজাইনাল সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার আরেকটি কার্যকরী উপায় হল বোরিক অ্যাসিড। সেন্টার ফর ডিসিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, মহিলাদের মধ্যে ভ্যাজাইনাল ইস্ট সংক্রমণের ওপর বোরিক অ্যাসিড কার্যকরী প্রভাব ফেলে। তবে, বোরিক অ্যাসিড প্রচুর পরিমাণে বিষাক্ত। এটি কিডনির ক্ষতি, রক্তসঞ্চালনে প্রভাব বা মৃত্যুর কারণ অবধি হতে পারে। তাই মৌখিক ভাবে এবং সরাসরি ফাটা ত্বকে এটি ব্যবহার করবেন না। গর্ভবর্তী অবস্থাতেও বোরিক অ্যাসিডের ব্যবহার বিপদ্দজনক হতে পারে।

ভ্যাজাইনাল সংক্রমণের ক্ষেত্রে এসেন্সিয়াল অয়েল ভীষণ ভাবে কার্যকরী। আসুন জেনে নেওয়া যাক, কোন এসেন্সিয়াল ব্যবহার করবেন ইস্ট সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে। প্রথমে রয়েছে অরিগ্যানো তেল। বন্য অরিগ্যানো বা অরিগানাম ভালগার থেকে তৈরি অরিগ্যানো তেলে থাইমল এবং কার্ভাক্রোল রয়েছে, যা শক্তিশালী অ্যান্টিফাঙ্গাল। জোজোবা তেলের সাথে দু থেকে তিন ফোঁটা অরিগ্যানো তেল মিশিয়ে যোনির আশেপাশের জায়গায় প্রয়োগ করুন।

চা গাছের তেল একটি অপরিহার্য তেল যা ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস হত্যা করতে সহায়তা করে। কিন্তু টি ট্রাই অয়েল প্রচন্ড কড়া প্রকৃতির করা হয়; তাই জোজোবা বা নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে ত্বকে প্রয়োগ করুন। নারকেল তেলের বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য। বিশুদ্ধ ও জৈবিক নারকেল তেল সরাসরি প্রভাবিত এলাকায় প্রয়োগ করতে পারেন।

রসুনের মধ্যে জীবাণু বিনাশের ক্ষমতা রয়েছে, বিশেষত ক্যান্ডিডা। তাই প্রতিদিন রসুনকে খাদ্য তালিকায় রাখুন। আপেল সাইডার ভিনেগারেরও অনেক ঔষধি ব্যবহার রয়েছে। এর মধ্যে একটি হল জীবাণু বিনাশ। গরম জলে এক কাপ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে স্নান করতে পারেন। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাতেও রাখতে পারেন আপেল সাইডার ভিনেগারকে।

হাইড্রোজেন পারক্সাইড একটি অ্যান্টিসেপটিক। এটি ইস্টের প্রতিটি প্রজাতির বিরুদ্ধে কাজ নাও করতে পারে। তবে, জলে হাইড্রোজেন পারক্সাইড মিশিয়ে স্নান করলে আপনি যৌনাঙ্গের সংক্রমণ থেকে রেহাই পাবেন। ভিটামিন সি হচ্ছে রোগ প্রতিরোধক। এর মধ্যে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান রয়েছে, যা ক্যান্ডিডার বৃদ্ধিকে রোধ করতে সাহায্য করে। তাই ভিটামিন সিকে খাদ্য তালিকায় যুক্ত করে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ইস্ট সংক্রমণ থেকে লড়াইয়ের ক্ষমতা গড়ে তুলুন।

আরও পড়ুন: বায়ু দূষণের জেরে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা রোধ করার কয়েকটি টিপস, যা বর্তমানে একান্ত জরুরি!