প্রস্রাবের নিজস্ব কোনও গন্ধ নেই। সম্পূর্ণ স্বচ্ছ হলদেটে হল সুস্থ মানুষের প্রস্রাবের রং। আবার গাঢ় হলুদ রংও হল স্বাভাবিক। এমন প্রস্রাবের অর্থ হল শরীর ঠিকমতো তার নিজের কাজ সামলে নিলেও সামান্য ডিহাইড্রেটেড। বেশি পরিমাণ জল খেলে সেই সমস্যারও সমাধান হয়ে যায়। প্রস্রাবের নিজস্ব কোনও গন্ধ নেই। কিন্তু প্রস্রাব করার পর বাতাসে অক্সিডেটিভ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিন্তু তার থেকে অ্যামোনিয়ার গন্ধ উৎপন্ন হয়। যে কারণে পাবলিক টয়লেট থেকে তীব্র ঝাঁঝালো কটূ গন্ধ আমাদের নাকে আসে। আর এই গন্ধ অনেকসময়ই মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। আর তখনই কিন্তু সেখান থেকে আসে একাধিক অসুস্থতা। কেন প্রস্রাব দুর্গন্ধযুক্ত হল তার কিন্তু একাধিক কারণ রয়েছে। কখনও তা কোনও শারীরিক সমস্যার কারণেও কিন্তু হতে পারে। যাঁরা ইস্টের সংক্রণমে ভুগছেন বা যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে তাঁদের প্রস্রাব সব সময় গন্ধযুক্ত হয়। তবে এই গন্ধ মাত্রা ছাড়ানোর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নইলে হতে পারে শরীরের ক্ষতি। আসতে পারে কিডনির সমস্যাও। কিন্তু কেন প্রস্রাব দুর্গন্ধযুক্ত হয় তার কিছু কারণও রয়েছে।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা হল ইউটিআই বা মূত্রনালীর সংক্রমণ। যে কোনও মানুষের ক্ষেত্রেই কিন্তু এই সংক্রমণ হতে পারে। মূত্রাশয়ে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি জানান দেয় ইউরিন ইনফেকশনের। এক্ষেত্রে প্রস্রাব করার সময় জ্বালা ভাব থাকে। প্রস্রাবের জায়গা বারবার চুলকোয়। সেই সঙ্গে ঘন গন প্রস্রাবে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তাও পড়ে। এমন অবস্থায় প্রস্রাব কিন্তু দুর্গন্ধ যুক্ত হয়।
প্রস্রাব আমাদের দেহের রেচন পদার্থ। শরীরের অতিরিক্ত টক্সিন এই প্রস্রাবের মধ্যে দিয়েই বাইরে আসে। ফলে একরকম কটূ গন্ধ তো থাকেই। কিন্তু জল কম খেলে প্রস্রাব ঠিকমতো হয় না। আর তখন এই কটূ গন্ধ যেন আরও অনেকটাই বেড়ে যায়।
যাঁরা চা-কফি বেশি মাত্রায় খান তাঁদের ক্ষেত্রেও কিন্তু এই একই সমস্যা হতে পারে। কফির মধ্যে যে ক্যাফেন থাকে তার জন্যই এই সমস্যা হয়। কারণ এক্ষেত্রে বিপাক ঠিকমতো হয় না। সেই সঙ্গে কফি শরীরকে ডিহাইড্রেটও করে দেয়। আর তাই তখন প্রস্রাব দুর্গন্ধ যুক্ত হয়। এমন ক্ষেত্রে অবশ্যই এই ক্যাফেনের পরিমাণ কিন্তু কমাতে হবে।
ডায়াবিটিসের সমস্যা থাকলেও কিন্তু প্রস্রাবে দুর্গন্ধ আসে। এক্ষেত্রে চিনি সহজে হজম হয় না। শরীরের অন্যান্য বিপাকও প্রয়োজনের তুলনায় কম হয়। যে কারণে ডায়াবিটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে কিন্তু প্রস্রাব মিষ্টি হয় এবং অন্যরকম গন্ধ থাকে। এছাড়াও ডায়াবিটিসের সমস্যায় বারবার বাথরুমে যাবারও প্রয়োজন পড়ে।
যৌনতার থেকেও এমন সমস্যা আসতে পারে। সেক্সচুয়াল ট্রান্সমিটেড ইনফেকশন এর জন্য দায়ী। এক্ষেত্রেও সংক্রমণ হয় মূত্রনালীতে। যে কারণে প্রস্রাবে দুর্গন্ধ, প্রস্রাবের রং পরিবর্তন এসব একাধিক সমস্যা হয়। যেখান থেকে যোনিতে জ্বালা, দুর্গন্ধ যুক্ত প্রস্রাব এসব সমস্যা থেকেই যায়।
শরীর আবার বিভিন্ন খাবার বিভিন্ন ভাবে হজম করে। অ্যাসপারগাস, স্প্রাউটস, পেঁয়াজ, রসুন, মাছ, অ্যালকোহল এবং নির্দিষ্ট কিছু খাদ্য গ্রহণ করতে সময় লাগায়। এখান থেকেও কিন্তু দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হতে পারে। কারণ যে সব খাবার হজম করা কঠিন এবং কটূ গন্ধ যুক্ত সে সব খাবার বেশি খেলে প্রস্রাবে আঁশটে গন্ধ থাকে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Women Heart Problem: কম বয়সী মহিলাদের মধ্যে বাড়ছে হৃদরোগের সম্ভাবনা! দাবি নয়া সমীক্ষায়