কোভিডের নয়া গ্রাফ যে ভাবে চড়চড়িয়ে বাড়ছে আপাতত তার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না কেউই। ন’মাসের শিশু থেকে ৯০ বছরের বৃদ্ধ সকলেই কিন্তু আক্রান্ত হচ্ছেন কোভিডে। কোভিডের দুটো টিকা নেওয়া, ডেল্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ফের তিনিও আবার আক্রান্ত হয়েছেন ওমিক্রনে। কিছু জনের ক্ষেত্রে থেকে যাচ্ছে লং কোভিডের সমস্যা। অর্থাৎ আক্রান্ত হয়ে টিকা নিয়ে এক বছর গড়িয়ে গেলেও আবারও কোভিড পরীক্ষায় রিপোর্ট আসছে পজিটিভ। সব বয়সের সব মানুষই এবার আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে যাঁদের মধ্যে বিভিন্ন কো-মর্বিডিটি রয়েছে (comorbidities) তাঁদের ক্ষেত্রে সেই সমস্যা আরও খানিকটা বেশি। যাঁদের হাই ডায়াবিটিস, কিজনির সমস্যা, ক্যানসার বা অন্যান্য জটিল কোনও সমস্যা রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে কোভিড সংক্রমণে দেখা দিচ্ছে আরও বেশ কিছু জটিলতা। তবে বেশ কয়েকবার অভিযোজিত হয়ে তার নিজের রূপ বদলে ফেলেছে কোভিডের ভাইরাস। আর তাই এবার ওমিক্রনের প্রভাবে সকলেরই উপসর্গ সাধারণ ফ্লু এর মতো। জ্বর-সর্দি-কাশির সমস্যা ঘরে ঘরে। ফলে কে সাধারণ ফ্লুতে আক্রান্ত আর কে কোভিডে তা কিন্তু বোঝা দায়।
তবে কোভিড ঠেকাতে টিকাকরণের উপরই বেশি জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই শিশুদের টিকাকরণ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ষাটোর্ধ্ব এবং স্বাস্থ্যকর্মীদেরও দেওয়া হবে বুস্টার ডোজ। কিন্তু একেবারে দুধের শিশুদের কী ভাবে কোভিড টিকা দেওয়া যাবে বা আদৌ দেওয়া যাবে কিনা সেই বিষয়েও চলছিল গবেষণা। কারণ এই মারণ ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না খুদেরাও। আর তাই সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মা-যদি কোভিডের টিকা নিয়ে থাকেন তাহলে স্তন্যপানের মাধ্যমেই কোভিড অ্যান্টিবডি তৈরি হবে সন্তানের দেহে। ম্যাসাচুসেটস আমহার্স্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য।
যে সব মায়েরা সদ্য মা হয়েছেন এবং কোভিডের দুটো ডোজই নিয়েছেন তাঁদের মল এবং স্তন্যদুগ্ধ পরীক্ষা করে তাতে SARS-CoV-2 প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি খুঁজে পেয়েছেন চিকিৎসকরা। গবেষণা টিমের মুখ্য চিকিৎসক বিগ্নেশ নারায়ণস্বামী যেমন জানিয়েছেন, গবেষণায় দেখা গিয়েছে, স্তন্যপানের মধ্যে দিয়েই কিন্তু অ্যান্টিবডি স্থানান্তরিত হচ্ছে শিশুর শরীরে। তাই তিনি মায়েদের টিকাকরণ এবং স্তন্যপান করানো জরুরী বলে জানিয়েছেন বারবার। তিনি আরও বলেন, ১.৫ মাস বয়সী থেকে শুরু করে ২৩ মাস বয়সীদের পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে তাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে কোভিডের অ্যান্টিবডি।
আমেরিকায় ২০ জন মহিলার উপর এই পরীক্ষা চালানো হয়। গত বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে তাঁরা কোভিড টিকার প্রথম ডোজ পান। টিকা দেওয়ার আগে এবং টিকা নেবার পরের ৩ সপ্তাহ জুড়ে তাঁদের বুকের দুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আবার প্রথম ডোজের ১৯ দিন পর এবং দ্বিতীয় ডোজের ২১ দিন পর তাঁদের রক্তের নমুনাও নেওয়া হয়। এরপর মায়ের দ্বিতীয় টিকা নেবার ২১ দিন পর শিশুর মল পরীক্ষা করে দেখা যায় সেখানেও উপস্থিত আছে কোভিডের অ্যান্টিবডি। নমুনা মিলেছে রক্ততেও। সেই সঙ্গে শিশুর শরীরে বেড়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। আর তাই গর্ভবতী মায়েরা যাতে টিকা নিতে এগিয়ে আসেন সেই কারণে বিশেষ প্রচারের কথা ভাবছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: Omicron Impact: সংক্রমণের গ্রাফ এভাবে চড়লে প্রয়োজন হবে আইসিইউর, বাড়তে পারে মৃত্যুহারও!