Omicron Impact: সংক্রমণের গ্রাফ এভাবে চড়লে প্রয়োজন হবে আইসিইউর, বাড়তে পারে মৃত্যুহারও!

ওমিক্রনের গ্রাফ এভাবে চড়তে থাকলে অচিরেই বাড়বে মৃত্যুসংখ্যা। সেই সঙ্গে চাপ পড়বে চিকিৎসা পরিকাঠামোয়। ভেন্টিলেটর, আইসিইউ বেড থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার সব কিছুরই প্রয়োজন বাড়বে আবারও

Omicron Impact: সংক্রমণের গ্রাফ এভাবে চড়লে প্রয়োজন হবে আইসিইউর, বাড়তে পারে মৃত্যুহারও!
এভাবে চলতে থাকলে চাপ বাড়বে চিকিৎসা ব্যবস্থায়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 10, 2022 | 2:11 PM

দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা পার করেছে চার হাজারের গণ্ডি। এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয়েছে মহারাষ্ট্রে। মহারাষ্ট্রে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ১,২১৬। এছাড়াও দেশজুড়ে প্রতিদিন দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন। গত ২৪ ঘন্টায় প্রায় ২ লক্ষেরও বেশি নতুন কোভিড পজিটিভ কেস নথিবদ্ধ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে কোভিডে। আইআইটি দিল্লির অঙ্কের অধ্যাপক, রাম মূর্তি যেমন নিউজ ৯-কে জানিয়েছেন, যে ভাবে সংক্রমণ এগোচ্ছে তাতে দিনে ৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হবেন। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে যত সংখ্যক মানুষটি আক্রান্ত হয়েছিলেন তৃতীয় ঢেউয়ে সেই সংখ্যাটা প্রায় দ্বিগুণ। এমনকী আক্রান্তের পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। শনিবার দিল্লিতে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এই কয়েকদিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোভিডে মৃত্যু হয়েছে শনিবার। অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের প্রধান অঞ্জন ত্রিখা যেমন বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যাংদের মৃত্যু হয়েছে তঁদের বেশিরভাগেরই নানা রকম শারীরিক সমস্যা ছিল। আর সেই সমস্যা জনিত কারণেই তাঁরা চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা বাড়ে। মূলত ৮৫ বা তার ঊর্ধ্বে হলে ঝুঁকি থাকে সবচেয়ে বেশি। তবে এবার কোভিডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের অধিকাংশেরই বয়স ৬৫ এর উপরে। সেই সঙ্গে কিন্তু তাঁদের একাধিক শারীরিক জটিলতাও ছিল। আর তাই বলা হয়েছে যাঁদের বয়স হয়েছে তাঁদের কিন্তু সঠিক যত্নের প্রয়োজন। সব সময় থাকতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শে। যাঁরা বাড়িতে রয়েছেন তাঁদের সঠিক যত্নের পাশাপাশি কিন্তু পুষ্টিকর খাবারও প্রয়োজন। পরামর্শ প্রাক্তন আইসিএমআর প্রধান রমনা গঙ্গাখেদকরের।

দিল্লি, মুম্বই এবং কর্নাটকের হাসপাতালে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ ভর্তি হচ্ছেন কোভিড নিয়ে। এঁদের মধ্যে কিন্তু বেশিরভাগেরই কোভিডের দুটো টিকা নেওয়া হয়ে গিয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত ভেন্টিলেশন কিংবা আইসিইউ- এর কোনও প্রয়োজন হচ্ছে না। সাধারণ চিকিৎসকার মাধ্যমেই সেরে উঠছেন আক্রান্তরা। কিন্তু সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে তাতে অচিরেই আইসিইউ-এর সংখ্যা বাড়াতে হবে। কারণ এই সংক্রমণ ভবিষ্যতে আরও ১০ গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। বিশেষত যাঁদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাঁদেরই থাকে গুরুতর রোগভোগের আশঙ্কা। দিল্লি AIIMS-এর তরফে চিকিৎসক ত্রিখা যেমন আরও জানান, ‘এখনও পর্যন্ত যে সব রোগী ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন সাপোর্ট এবং আইসিইউ-তে রয়েছেন তাঁদের মধ্যে ক্যানসার আক্রান্ত, কিডনির সমস্যা, এইচআইভি কিংবা জটিল পর্যায়ে ডায়াবিটিস রয়েছে এমন রোগীর সংখ্যাই বেশি। এক এইচআইভি পজিটিভের করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবরও কিন্তি পাওয়া গিয়েছে। গত দুবারে যাঁরা কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন তাঁদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই কিন্তু শারীরিক জটিলতা ছিল’।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে চিকিৎসক বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন নিউজ ৯-কে জানান, ‘ওমিক্রন শুধুই যে অত্যন্ত সংক্রামক তা কিন্তু নয়। যে ভাবে ওমিক্রন সংক্রমিত হচ্ছে তাতে কিন্তু থেকে যাচ্ছে মস্ত বড় বিপদের সম্ভাবনা। তাই কোনও ভাবেই এই সংক্রমণকে হালকা ভাবে নেওয়া উচিত নয়। ডেল্টার তুলনায় অনেক দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে ওমিক্রন। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তবে সকলেই কিন্তু বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন। হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ছে না। যা ডেল্টার বেলায় প্রয়োজন পড়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ঝড়ে পুরোপুরি বিপর্যস্ত। এরকম সংক্রমণ সেই দেশ আগে কখনও দেখেনি। আর তাই এই ব্যাপারে কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে আমাদেরই। সৌৈম্য স্বামীনাথন যেমন বললেন, সংক্রমণ এভাবে বাড়লে আবারও প্রয়োজন পড়বে ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন সিলিন্ডারের’।

মুম্বইয়ের যশলোক হাসপাতালের চিকিৎসক ওম শ্রীবাস্তব যেমন জানিয়েছেন, ‘সংক্রমনের গ্রাফ সর্বোচ্চ শিখর ছোঁবে ১৫ জানুয়ারি। সেই সঙ্গে যাঁদের ডায়াবিটিস ও হার্চের সমস্যা রয়েছে তাঁদের কিন্তু সাবধানে থাকতে হবে। কারণ তাঁদের মধ্যেই সংক্রমণের সম্ভাবনা সবচেয়ে তীব্র এবং তাঁদের ক্ষেত্রেই রোগ-জটিলতা থাকবে সবচেয়ে বেশি। আমরা নিজেরা যদি সচেতন না হই তবেই কিন্তু পরিস্থিতি যাবে হাতের নাগালের বাইরে। আর তাই নিয়মিত মাস্ক পরা, হাত ধোওয়া, সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রাখা এসব মেনে চলতেই হবে’।

আরও পড়ুন: Coronavirus disease: লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ, কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসকায় কোন ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে, জানুন…