Dog’s Health Tips: দুরন্ত পোষ্য কুকুর হঠাৎ করেই ঘনঘন বমি, পায়খানা করছে? এখনই নিয়ে যান ডাক্তারের কাছে
Parvovirus: আমেরিকান ভেটেরিনারি মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, পারভোভাইরাস হল এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস, যা সমস্ত প্রজাতির কুকুরের উপরই প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, কুকুরের যদি টিকাকরণ হয়ে থাকে, তাহলে ঝুঁকি কমে যায় অনেকটাই।

বাড়িতে পোষ্য থাকলে তার যত্ন নিতেই হয়। আর সেই পোষ্য যখন হয় কুকুর, তখন তার রোগের বিষয়েও খুঁটিনাটি জেনে রাখা দরকার আপনার। সম্প্রতি কুকুরদের মধ্যে পারভোভাইরাসের হদিশ মিলেছে। এটি হল এমন এক ধরনের ভাইরাস, যা সময়মতো নির্ণয় করা না-হলে, আপনার সারমেয়র মৃত্যু অবধি হতে পারে। সম্প্রতি লখনউয়ে দু’টি কুকুরের মৃত্যু হয়েছে এই পারভোভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার জেরে। পশুচিকিৎসকদের ক্লিনিকে প্রতিদিন ৪০-৬০টি করে কুকুর আসছে, যারা পারভোভাইরাসে আক্রান্ত।
আমেরিকান ভেটেরিনারি মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, পারভোভাইরাস হল এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস, যা সমস্ত প্রজাতির কুকুরের উপরই প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, কুকুরের যদি টিকাকরণ হয়ে থাকে, তাহলে ঝুঁকি কমে যায় অনেকটাই। কিন্তু আপনার পোষ্যের বয়স যদি চার মাসের কম হয় এবং তার যদি এখনও টিকাকরণ না হয়ে থাকে, তাহলে তার মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
পারভোভাইরাস কুকুরের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টকে সরাসরি প্রভাবিত করে। সংক্রমিত কুকুরের সংস্পর্শে এলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। সেই সঙ্গে কুকুরের মলের মাধ্যমেও এই ভাইরাস অন্য কুকুরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আমেরিকান ভেটেরিনারি মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, পারভোভাইরাস ‘ক্যানেল সারফেস’ (যেখানে পোষ্যকে রাখা হয়), কুকুরের খাবার ও জলের বাটি, কলার এবং কুকুরের লোম ও পায়ের মধ্যে পাওয়া যায়। মানুষের জুতোর মাধ্যমেও এই ভাইরাস এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হয়।
কুকুর যদি পারভোভাইরাসে আক্রান্ত হয়, তাহলে তার মধ্যে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। কী-কী সেই লক্ষণ, যা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার প্রিয় পোষ্যটি এই ভাইরাসে আক্রান্ত। যে পোষ্য সারাক্ষণ দৌড়াদৌড়ি করে, খেলাধুলা করে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সে ঝিমিয়ে পড়বে। অলসতা, ক্লান্তিভাব থাকবে কুকুরের শরীরজুড়ে। তার সঙ্গে থাকবে না খিদে। পারভোভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ফলে কুকুরদের মধ্যে পেটে ব্যথা ও ফোলাভাব, বমি, ডায়ারিয়া, রক্তপাত এবং জ্বর হতে পারে। ক্রমাগত বমি ও পায়খানার কারণে কুকুরের শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে যেতে পারে। সাধারণ এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পাওয়ার ২৪-৭২ ঘণ্টার মধ্যে কুকুরের মৃত্যু হতে পারে। তাই এই লক্ষণগুলোর মধ্যে একটাও যদি দেখতে পান, দ্রুত পশুচিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
যদিও শীতকালে কুকুরদের মধ্যে পারভোভাইরাসে আক্রান্তের ঘটনা খুব সাধারণ। কিন্তু এখন গ্রীষ্মকাল। তাতে এমন পরিস্থিতি কেন ঘটছে, তা ভাবিয়ে তুলছে পশুচিকিৎসকদের। পশুচিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন, আবহাওয়ার ঘনঘন পরিবর্তনই কুকুরদের জীবনে এই বিপদ ডেকে আনছে। তবে, সাবধানতা বজায় রাখলে এড়াতে পারবেন এই সমস্যা।
শশী কুমার নামে এক ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাঁর পোষ্য এই পারভোভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে। ১৫ মাস আগে তিনি তাঁর পোষ্যের টিকাকরণ করিয়েছিলেন। টিকাকরণ সত্ত্বেও কেন পারভোভাইরাসে আক্রান্ত হল শশীর পোষ্য়টি? শশী জানান, প্রথম টিকাকরণের ১২ মাস পর যে আবার টিকা নিতে হবে, তা খেয়াল ছিল না তাঁর। লখনউয়ের সরোজিনীনগরের বাসিন্দা বিনোদ কুমারের পোষ্য ‘বোল্ট’ (Bolt)-এর মৃত্যু হয় পারভোভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা জানা যাওয়ার ৬ দিনের মাথায়। জার্মান শেফার্ড ‘বোল্ট’-এর খিদে কমে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে এসেছিল তীব্র জ্বর। বিনোদ ভেবেছিলেন, ফ্লু বা অ্যালার্জি থেকেই এমনটা হচ্ছে। এরপরই পোষ্যকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান বিনোদ। ‘বোল্ট’কে পরীক্ষা করে ডাক্তার জানান, সে পারভোভাইরাসে আক্রান্ত। অর্থাৎ শুধু প্রথমবার টিকাকরণ সেরে নিশ্চিন্ত হয়ে গেলেই চলবে না—করতে হবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ফলো-আপও।
