আসছে তৃতীয় ঢেউ, করোনা পজিটিভ হলে আপনার শিশুর খেয়াল রাখবেন কীভাবে?

নয়া রূপে ভয়ংকর আকার ধারণ করছে করোনাভাইরাস। নয়া মিউট্যান্ট ভাইরাসের প্রকোপ যত ভেল্কি দেখাতে শুরু করেছে, তাতে বড়দের পাশাপাশি ছোট শিশুদের মধ্যেও প্রভাব ফেলছে।

আসছে তৃতীয় ঢেউ, করোনা পজিটিভ হলে আপনার শিশুর খেয়াল রাখবেন কীভাবে?
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Updated on: May 06, 2021 | 7:38 PM

বর্তমান পরিস্থিতিতে দেখা গিয়েছে, ১০ বছরের বেশি ও ১ থেকে ৮ বছরের শিশুদের মধ্যে রিপোর্ট পজিটিভ আসছে। তবে তাদের লক্ষণগুলি বেশ হালকা বা অ্যাসিম্পটোম্যাটিক। আবার অনেক সময় শিশুরাও সুপার-স্প্রেডারও হয়। আপনার বাচ্চা যদি কোভিড পজিটিভ হয়, তাহলে তার শরীরের প্রতি যত্নশীল হওয়া খুব দরকার। অসুস্থ সন্তানের যত্ন নেওয়া ও টেস্টের সময় তাদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া সব বাবা-মায়ের পক্ষে বেশ চ্যালেঞ্জিং। করোনায় আক্রান্ত হলে ছোট্ট শিশুদের ঘরবন্দি করে রাখাটা যে কতটা কঠিন তা বলাই বাহুল্য।

করোনার যে নয়া মিউট্যান্টটি এখন ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে আগের তরুলনায় অনেক বেশি বাচ্চাদের মধ্যে সংক্রামিত হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। বাড়ির কোনও বড়দের থেকে এই ভাইরাস ছোটদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ডবল মিউট্যান্টের জেরে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। করোনার প্রথম সুনামিতেও শিশুরা সংক্রামিত হয়েছিল, কিন্তু এই কঠিন পরিস্থিতিতে হালকা লক্ষণ নিয়ে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।

করোনায় সংক্রামিত হলে শিশুদের মধ্যে কী কী উপসর্গ দেখা যায়?

– প্রাপ্ত বয়স্কদের মতো করোনাভাইরাসের লক্ষণগুলি শুধুমাত্র শ্বাসনালীতেই সীমাবদ্ধ থাকে না। অধিকাংশ শিশুদের জ্বর, ঠান্ডা লাগা, শ্বাসকষ্ট, কাশি, গন্ধ না পাওয়া, গলা ব্যাথা, ক্লান্তি, পেশিতে ব্যাথার মতো লক্ষণ দেখা যায়। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনালের লক্ষণগুলির মধ্যে বমি বমি ভাব, ক্ষুধা হ্রাস পাওএয়া, ডায়েরিয়া হওয়া- এই সব অল্প বয়সীদের মধ্যে করোনার উপসর্গ হিসেবে খুবই সাধারণ।

কোভিড পজিটিভ হলে শিশুর যত্ন নেবেন কীভাবে?

বাড়ির ছোট্ট সদস্যের যদি কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে, বা করোনার উপসর্গগুলির উপস্থিতিত বোঝা যায়, তাহলে তাঁকে ১৪ দিনের জন্য আলাদা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত অক্সিজেনের স্যাচুরেশনের স্তরগুলি পরীক্ষা করুন। যদি স্যাচুরেশন লেভেল ৯৪ শতাংশের কম হয় অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। পাশাপাশি বাচ্চার যত্ন নিন, ডিহাইড্রেশন যাতে না হয় পর্যাপ্ত জল খাওয়ান, সঠিক পুষ্টিকর খাবার দিন। সঙ্গে অবশ্যই প্যারাসিটামল দিন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া শিশুকে গিনপিগ মনে করে কখনও কোনও এক্সপেরিমেন্ট করবেন না। অবস্থার অবনতি হলে চিকিত্‍সকের সঙ্গে পরামর্শ করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

কীভাবে বাচ্চাদের আইসোলেট করবেন?

বেশিরভাগক্ষেত্রে কোভিড১৯-এর প্রাথমিক লক্ষণগুলির উপস্থিতি বোঝা গেলেও তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই বাচ্চা সুস্থ হয়ে যায়।, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণের জেরে অবস্থা জটিল আকার ধারণ করে। তবে তিনটি শর্তের পরই শিশুকে কোয়ারান্টিন থেকে মুক্তি দিতে পারেন। প্রথমত, করোনার প্রথম উপসর্গ ধরা পড়ার পরই টানা ১০ দিন তাঁর মধ্যে সেই একই লক্ষণ বিদ্যমান থাকে, দ্বিতীয়ত, ২৪ ঘন্টা জ্বর না এলে বা ওষুধ না দিয়ে জ্বর কমে গেলে শিশুকে আলাদা রাখার দরকার পড়বে না। তৃতীয়ত, কোভিডের উপসর্গগুলি ধীরে ধীরে উন্নতি করলে।

১৮ বছরের নীচে বা ১০ বছরের নীচে যাদের বয়স, তাঁরা কবে ভ্যাকসিন পাবেন?

বর্তমানে ১৮ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের জন্য কোনও ভ্যাকসিন নেই। তবে বিশ্বজুড়ে অতিমারী অবস্থাতেই শিশুদের মধ্যে যাতে সুরক্ষিতভাবে টিকাকরণ দেওয়া যায় তা নিয়ে পরীক্ষা চলছে। দেশে তৃতীয় দফা টিকাকরণ কর্মসূচিতে ৫-১৮ বছরের বয়সীদের মধ্যে কোভ্যাক্সিন টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য অনুমোদন চেয়েছে। অন্যদিকে, ফাইজার ও অ্যাস্ট্রোজেনেকা ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের করোনা টিকা দিলে তা কতটা কার্যকার হবে ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার প্রভাব কতটা পড়বে তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে।