অনেকেই রয়েছেন যাঁরা ওজন কমানো জন্য খালি পেটে গরম জলে মধু পান করেন। তাঁদের দিনের শুরুটাই হয় এই গরম জলে মধু খেয়ে। কারণ অনেকের ধারণা এটি কোলেস্টেরল এবং চর্বি শোষণে সহায়তা করে এবং ওজন বৃদ্ধি রোধ করে। মধু একটি প্রাকৃতিক মিষ্টি, যার মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মিনারেল রয়েছে আর রয়েছে প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতা। মধু সর্দি, কাশি দূর করতে, ত্বককে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করে।
চিনির বদলে মধু খাওয়া ভাল। বিশেষত যাঁরা ডায়বেটিসের রোগী তাঁরা চিনি না খেয়ে মধু খেতে পারেন। যেহেতু এর মধ্যে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ম্যাগানিজ, পটাশিয়াম এবং জিঙ্ক থাকে। অনেকেই হার্বাল চায়ের সঙ্গে, লেবু চা বা গরম দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে পান করেন। কিন্তু আয়ুর্বেদে গরম কোনও কিছুর সঙ্গে মধু মেশানোর পরামর্শ দেওয়া হয়না।
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ড. রেখা রাধামনি তাঁর একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানান যে, যদি মধু কোনও কিছুর সঙ্গে মিশিয়ে, গরম কোনও পানীয়র সঙ্গে পান করা উচিত নয়। কখনওই গরম দুধ, গরম জল, গরম লেবুর জল বা চায়ের সঙ্গে মধু পান করবেন না। রেখা বিশ্লেষণ করেছেন যে কীভাবে গরম মধু শরীরকে টক্সিক করে দেয় যেখান থেকে শরীরে রোগের উৎপত্তি হয়।
আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে যে গরম মধু হল ধীর বিষ যা শরীরে “আমা” বা বিষাক্ততা সৃষ্টি করে এবং এর বৈশিষ্ট্যগুলি একবার শরীরের প্রবেশ করলে বিষ হয়ে ওঠে। আমা হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীরের শ্লেষ্মা এবং বিষাক্ততা অনেক রোগের দিকে পরিচালিত করে। রেখা জানিয়েছেন যে কারাকা শব্দটি সামসকারা বিরুধা বা প্রক্রিয়াকরণের (সামস্কারা) কারণে সৃষ্ট অসামঞ্জস্যতা বলে অভিহিত করে।
মধু প্রাকৃতিক ভাবে কাঁচা খেলেই এর পুষ্টিগুলো শরীরে কাজ করে। দোকানে যে ধরনের পরিশুদ্ধ মধু পাওয়া যায়, তাতে নানান প্রকারের রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়। এগুলি ডায়বেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে। এর মধ্যে পোলেন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এনজাইমও উপলব্ধ থাকে না যা কাঁচা মধুর মধ্যে থাকে। বাজারে পাওয়া যায় যে মধু গুলো সেগুলি প্রচন্ড বেশি তাপমাত্রায় গরম করে প্যাকেট করা হয়। তাই এই সব জায়গা থেকে মধু কিনতে বারণ করছেন ড. রেখা রাধামনি। যেখানে কাঁচা মধু বিক্রি হয় সেখান থেকেই মধু কেনার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে সবচেয়ে নীচে রয়েছে কলকাতা! নতুন রিপোর্ট প্রকাশ করল টিআরএ