AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

White Tea: আর গ্রিন টি নয়, ক্যান্সার-ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন চুমুক দিন হোয়াইট টি-তে!

Health Benefits of White Tea: চা ফুলের কুঁড়ি ও পাতা তোলার পদ্ধতির উপরেও সাদা চায়ের গুণমান অনেকখানি নির্ভর করে বলে কিছু কিছু বিশেষজ্ঞের দাবি। কিছু কিছু চা উৎপাদক অঞ্চলে কুঁড়ি ছাড়াও শুধুই পাতা তোলা হয় সাদা চা উৎপাদনের জন্য।

White Tea: আর গ্রিন টি নয়, ক্যান্সার-ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন চুমুক দিন হোয়াইট টি-তে!
| Edited By: | Updated on: Jul 18, 2022 | 6:42 AM
Share

চা প্রেমীদের কাছে লাল চায়ের পাশাপাশি গ্রিন টি (Green Tea) অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা সকলেই জানি গ্রিন টি স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। এই চা পানে বাড়ে বিপাকক্রিয়া। ফলে খাদ্য দ্রুত হজম হয়। শরীরে ফ্যাট জমার আশঙ্কা কমায়। এছাড়া এই চায়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (Antioxident)। ফলে ক্যান্সার-সহ প্রদাহজনক নানা অসুখ প্রতিরোধে সাহায্য করে। মজার ব্যাপার হল, গ্রিন টি –এর চাইতেও স্বাদগন্ধে অনেক বেশি ভালো ‘হোয়াইট টি’ (White Tea) বা সাদা চা। এমনকী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণও গ্রিন টি-এর তুলনায় বেশি! উৎপাদনের অঞ্চলের উপর ভিত্তি করে একাধিক সাদা চা পাওয়া যায়। উদাহরণ হিসেবে সিলভার নিডলস (বাওহাও ইনঝেন), বাই মুদান (হোয়াইট পিনয়), শোউ মেই (লম্বা ভ্রূ), গোংমেই, ফুজিয়ান নিউ ক্রাফ্ট-এর কথা বলা যায়।

সাদা চা কী?

চায়ের বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস’। হোয়াইট টি উৎপাদনের জন্য গাছ ছোট থাকা অবস্থায় বা বেড়ে ওঠার সময়, গাছের কুঁড়ি তুলে নেওয়া হয়। কখনও কখনও কুঁড়ির সঙ্গে কচি লম্বা পাতাও তোলা হয়। চা ফুলের কুঁড়ি ও পাতা তোলার পদ্ধতির উপরেও সাদা চায়ের গুণমান অনেকখানি নির্ভর করে বলে কিছু কিছু বিশেষজ্ঞের দাবি। কিছু কিছু চা উৎপাদক অঞ্চলে কুঁড়ি ছাড়াও শুধুই পাতা তোলা হয় সাদা চা উৎপাদনের জন্য।

ষোড়শ শতকে চিনদেশে ফুজিয়ান প্রদেশে সাদা চা পান করার রীতি প্রথম শুরু হলেও ধীরে ধীরে ভারতের কাংড়া, দার্জিলিং, অরুণাচল প্রদেশ এবং নীলগিরিতেও সাদা চা উৎপাদন শুরু হয়েছে। সাদা চায়ের বর্ণ মৃদু হরিদ্রাভ মাখনের মতো। সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫০০০-৬৫০০ ফুট উচ্চতায় সাদা চায়ের চাষ হয়। পাহাড়ি প্রদেশের কঠোর এবং শীতল বাতাস চা পাতায় স্বাদগন্ধবৃদ্ধিকারক উপাদান ঘনীভূত করতে সাহায্য করে। তোলার পরে ‘উইদারিং’ এবং ‘ড্রায়িং’ পদ্ধতি অনুসরণ কর হয়। অর্থাৎ চা পাতা বাজারজাত করার আগে নানা প্রক্রিয়ায় তাকে শুকনো করা হয়। এই প্রক্রিয়ার উপরেও অনেকখানি নির্ভর করে চায়ের বর্ণ, স্বাদ ও গন্ধ।

সাদা চায়ের অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্যগুণ

• ক্যান্সার, জরা, স্নায়ু, প্রদাহ: প্রত্যেক মানবদেহেই তৈরি হয় ফ্রি র্যা ডিকেলস। ফ্রি র্যা ডিকেলস মূলত কোষের কার্যকলাপের ফলে তৈরি হওয়া ক্ষতিকারক বর্জ্য। এই ক্ষতিকারক উপাদানের বৃদ্ধির কারণেই শরীরে প্রদাহজনক অসুখ হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। শরীরে ও ত্বকে দ্রুত বয়সের ছাপ পড়ে। স্নায়ু কোষেরও ক্ষতি করে। ক্যান্সার তৈরি হওয়ার পিছনেও ফ্রি র্যা ডিকেলস-এর বাড়বাড়ন্ত দায়ী। শরীরে তৈরি হওয়া ক্ষতিকারক ফ্রি র‍্যাডিকেলস ধ্বংস করতে সক্ষম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সাদা চায়ে রয়েছে পলিফেনল গোত্রের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যাটেচিন। মূলত উদ্ভিদেই মেলে এই ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ফলে সাদা চা পান করলে ফ্রি র্যা ডিকেলস ধ্বংস হয়। শরীর হয়ে ওঠে নীরোগ। এক স্টাডিতে দেখা গিয়েছে, হোয়াইট-এর নির্যাস কিছুটা হলেও কোলন ক্যান্সারের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে পারে।

• হার্ট: শরীরে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে সাদা চা। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে দিনে তিনবারের বেশি সাদা চা পান করলে তা এলডিএল-এর মাত্রা অনেকখানি কমাতে পারে। হার্ট ডিজিজ-এর পিছনে এলডিএল অন্যতম কারণ। ফলে সাদা চা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

• ওজন হ্রাস: মেটাবলিজম বা বিপাকক্রিয়া বাড়ায় সাদা চা। ফলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতেও সাহায্য করে। কমে ওজন।

• দাঁত: সাদা চায়ে থাকে ফ্লুরাইড। স্বাভাবিক মাত্রায় ফ্লুরাইড দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। সাদা চায়ে আছে বিশেষ উপাদান ট্যানিন। এমনকী ফ্লুরাইডের সঙ্গে মিলিতভাবেও দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষা করে ট্যানিন। এছাড়া দাঁতে প্লাক তৈরিতে বাধা দেয় ক্যাটেচিন। প্লাকের ফাঁকে বাসা বাধার সুযোগ পায় না ব্যাকটেরিয়া। ক্যাভিটি হওয়ার আশঙ্কাও কমে।

• টাইপ ২ ডায়াবেটিস: টাইপ টু ডায়াবেটিসের দু’টি ধরন আছে। প্রথমত শরীরে যথেষ্ট মাত্রায় ইনসুলিন তৈরি হয় না। দ্বিতীয়ত, ইনসুলিন তৈরি হলেই শরীরের রেজিস্ট্যান্সের কারণে ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমাতে পারে সাদা চা। ফলে রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।

• অস্টিওপোরোসিস: হাড়ের ঘনত্ব কমতে শুরু করলে অল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যায়। এই সমস্যার নাম অস্টিওপোরোসিস। কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে অস্টিওপোরোসিস হওয়ার হওয়ার প্রক্রিয়া প্রতিরোধ করতে পারে ক্যাটেচিন।

• জরা প্রতিরোধ: সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ, ধূমপান, মদ্যপান, শাকসব্জি ও ফল না খাওয়া, এক্সারসাইজে অনীহা ইত্যাদি নানা করণে ত্বকের কোলাজেন প্রোটিন নষ্ট হতে থাকে। ত্বকের টানটান ভাব নষ্ট হয়ে যায়। ত্বক দ্রুত বুড়িয়ে যায় ও ঝুলে যায়। বয়স বেশি মনে হয়। হোয়াইট টি-এ থাকা নানা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করতে পারে।

• জটিল স্নায়ুরোগ: পার্কিনসনস, ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝাইমার্স রোগে রোগীর মস্তিষ্কের কোষের কার্যকারিতা কমতে থাকে। ফলে সাধারণ চলাফেরার মতো কাজ রোগী করতে পারেন না। স্মৃতিও নষ্ট হতে থাকে। এই ধরনের জটিল স্নায়ুরোগের রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে সাদা চা।

কীভাবে তৈরি করবেন?

একটি পাত্রে ৭৫ থেকে ৮৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় জল গরম করুন। জল আর ফোটাবেন না। তাই জল গরম করা বন্ধ করে সাদা চায়ের পাতা জলে দিন। পাত্রের মুখে একটি ঢাকনা দিয়ে ৭ থেকে ৮ মিনিট অপেক্ষা করুন। ব্যস তৈরি আপনার স্বাস্থ্যের বন্ধু হোয়াইট টি।