প্রতিদিন ইমার্জেন্সিতে কতশত জটিল সমস্যা নিয়ে রোগীরা আসেন হাসপাতালে। ডাক্তারবাবুরা চিকিৎসাও করেন যথাসাধ্য। তবে এমন আপৎকালীন অবস্থার সম্মুখীন বোধহয় খুব কমই হন চিকিৎসকরা। সম্প্রতি এক ব্যক্তি পেটে ব্যথার (Stomach Pain) সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসার পরেই চক্ষু চড়কগাছ হল চিকিৎসকদের। রোগীর বয়স ৫০। পুরুষ এবং বিবাহিত। স্বামীকে নিয়ে অত্যন্ত চিন্তায় ছিলেন মধ্যবয়স্ক ওই রোগীর স্ত্রী। কারণ রোগীর খিদে কমে গিয়েছিল মারাত্মক রকম। ভুগছিলেন প্রবল কোষ্ঠকাঠিন্যের ( constipation) সমস্যাতেও। এছাড়া পেটে প্রচণ্ড ব্যথাও হচ্ছিল। তবে আসল ঘটনা বোধহয় এরচাইতেও রোমহর্ষক। বাস্তবে ব্যথা হঠাৎ করে শুরু হয়নি। আর ব্যথা কেন হচ্ছে বা উপসর্গ (Symptoms) কেন দেখা দিচ্ছে তা ওই ব্যক্তি বিলক্ষণ জানতেন। অথচ মূল কারণ তিনি স্ত্রীকে জানাননি।
সত্য ঘটনা তিনি স্ত্রী’র কাছে লুকিয়ে গিয়েছিলেন। কারণ তাঁর মনে হয়েছিল মূল কারণটি স্ত্রী জানতে পারলে তা অস্বস্তিকর ব্যাপার হবে। তাছাড়া ওই ব্যক্তি স্ত্রীকে অত্যন্ত ভয় পান বলেও জানিয়েছেন। অবশ্য অসুস্থতার পিচনে মূল কারণ লুকিয়ে গিয়েও শেষরক্ষা হয়নি। একসময় যন্ত্রণাদায়ক উপসর্গ সহ্যাতীত হওয়ায় তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে হাজির হন তাঁর স্ত্রী। চিকিৎসকরা সঙ্গে সঙ্গে রোগীর সিটি স্ক্যান করানোর সিদ্ধান্ত নেন। স্ক্যান করানোর পড়েই চিকিৎসকদের চোখ কপালে উঠে যায়!
ক্লিনিক্যাল কেস রিপোর্টস জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, স্ক্যানে দেখা যায় ওই ব্যক্তির মলদ্বারে প্রায় ১৯ সেন্টিমিটার বা সাড়ে ৭ ইঞ্চির একটি জলের বোতল ঢুকে আছে! ‘রেকটাল ফরেন বডি’ বা মলদ্বারে বাইরের বস্তু ঢুকলে অনেকসময়েই তা বেরতে চায় না। আপৎকালীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কোলোরেক্টাল সার্জারির প্রয়োজনও পড়ে। কিছু ক্ষেত্রে রোগী চিকিৎসা শুরু করাতেও দেরি করেন। সমস্যা আরও জটিল হয়ে যায়। রক্তপাতও হতে থাকে। তবে পঞ্চাশবর্ষীয় ব্যক্তিটি ভাগ্যবান ছিলেন। পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হওয়ার আগেই তিনি চিকিৎসা শুরু করাতে পেরেছিলেন।
চিকিৎসকরা সার্জারি ছাড়াই ওই জলের বোতল মলদ্বার থেকে গোটাগুটি বের করতে সক্ষম হন। ধীরে ধীরে বোতল বের করার ফলে অন্ত্রেরও কোনও ক্ষতি হয়নি। জানা যাচ্ছে, ঘটনাটি ঘটেছে ইরানের এক হাসপাতালে। তবে ওই ব্যক্তির রেকটামে কীভাবে বোতলের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল তা হাসপাতালের তরফে জানানো হয়নি। অনুমান করা হচ্ছে যৌন ইচ্ছে তৃপ্ত করার উদ্দেশ্যে ওই ব্যক্তি বোতলের মুখ হাতে ধরে পিছনের ভোঁতা অংশটি পিছনে প্রবেশ করিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন বোতলের খাঁজযুক্ত মুখটি ধরে বোতলটি বের করতে পারবেন। তবে একসময় তা নাগালের বাইরে চলে যায় ও বৃহদন্ত্রের মধ্যে ঢুকে যায়। ফলে বোতলটিও বের করতে পারেননি তিনি।
জানা যাচ্ছে বিশ্বের নানা প্রান্তের হাসপাতালে অনেকেরই রেকটাম থেকে বালব, বোতল, বল, ডিওড্রেন্টের বোতলের মতো বস্তু বের করার ঘটনা ঘটেছে। মুশকিল হল এই ধরনের বস্তু রেকটাম থেকে অন্ত্রে প্রবেশ করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যায়। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি তিনদিন পরে হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে গিয়েছেন। তাঁকে সাইকিয়াট্রিক ক্লিনিকে যাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।