শিলং: ফের উত্তর পূর্বের রাজ্যে তৃণমূলী হানা। সব জল্পনাকে সত্যি করে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে (Trinamool Cngress) যোগ দিলেন মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা (Mukul Sangma) সহ ১২ জন কংগ্রেস বিধায়ক। কংগ্রেস শিবিরের জন্য এই ধাক্কা এক প্রকার অপ্রত্যাশিত ছিল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফর চলাকালীন, কাল রাতে এই বড় যোগদানের কথা সামনে আসে।
আজ, মেঘালয়ের (Meghalaya) রাজধানী শিলংয়ে (Shillong) সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন কংগ্রেস ত্যাগী বিধানসভার বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমা। সাংবাদিক সম্মলনে মুকুল বলেন, “২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে আমরাই সরকারে আসব। কিন্তু কোনও কারণে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পেলেও ভোটের ফলে সর্ববৃহৎ দল হিসেবে আমরাই আত্মপ্রকাশ করি। কিন্তু তারপর কোন পদ্ধতিতে মেঘালয়ে সরকার গঠন হয়েছিল তা আপনারা সকলেই জানেন। গণতন্ত্রে বিরোধী দলের ভূমিকা অপরিসীম। জনবিরোধী কাজকে বাধা দেওয়া ও সরকারে ভুল গুলি তুলে ধরাই বিরোধী দলের প্রধান দায়িত্ব। আমরা সেই দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করে গিয়েছি। কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমরা সঠিকভাবে বিরোধী দলের নীতি পালন করতে পারিনি। দলীয় নীতি মেনে চলতে গিয়ে জনস্বার্থের সঙ্গে আপোশ করতে হয়েছে। তাই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
২০১৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনে মেঘালয়তে মূল লড়াই ছিল কংগ্রেস ও ন্যাশানাল পিপলস্ পার্টির (National Peoples’ Party) মধ্যে। ন্যাশানাল পিপলস্ পার্টির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করেছিল বিজেপি। পাহাড়ে ঘেরা এই রাজ্যে ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে সবথেকে বেশি আসন পেয়েছিল মুকুল সাংমা নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস। ২১ টি আসনে নির্বাচিত হন কংগ্রেস প্রার্থীরা। অন্যদিকে ২০ আসন পায় এনপিপি, বিজেপির ভাগ্যে জোটে ২ টি আসন। এরপর বিজেপি ও আঞ্চলিক কিছু দলের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ে এনপিপি। কংগ্রেস সহ বিজেপি বিরোধী দলগুলির অভিযোগ ছিল, বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদনের মাধ্যমে ও বিজেপির সহায়তায় সরকার গড়েছে বিজেপি। মেঘালয়ে বিরোধী দলে ছিল কংগ্রেস। এরপর থেকে ৩ কংগ্রেস বিধায়ক শাসক শিবিরে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেসর বিধায়ক সংখ্যা কমে ১৭ হয়। সেই ১৭ জন বিধায়কের মধ্যে ১২ জনই তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিরোধী দলের মর্যাদা হারাবে কংগ্রেস। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে বিরোধী দলের মর্যাদা চেয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়েছেন মুকুল সাংমা।
ত্রিপুরায় সুস্মিতা দেবের মতো নেত্রী কংগ্রেস ছেড়েছেন। গোয়াতেও ক্ষমতা বাড়াচ্ছে তৃণমূল। তাছাড়া, কীর্তি আজাদের মতো নেতা যোগ দিয়েছেন ঘাসফুল শিবিরে। যদিও তাতে ভাঙলেও মচকাতে চাইছে না কংগ্রেস। অন্তত প্রকাশ্যে তারা তেমনটাই বোঝাচ্ছে। লোকসভার কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা অধীর চৌধুরি (Adhir Chaudhury) বলেন, “কংগ্রেসকে ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। সমগ্র উত্তর পূর্বাঞ্চল জুড়েই এই ষড়যন্ত্র চলছে। দিদি মোদী সমঝোতা হয়েছে। কংগ্রেসকে দুর্বল করার জন্য দল ভাঙাচ্ছে তৃণমূল। আমি তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ করছি ও বিধায়কদের পদত্যাগ করতে বলুক তাঁরা।”