রাস্তায় পড়ে রয়েছে মৃতদেহ। ছবি: টুইটার
পাকুর: সাতসকালেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা (Accident)। বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল ১৭ জনের, আহত আরও ২৬ জন। ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ড(Jharkhand)-র পাকুর জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ যশিডিগামী একটি বাসের সঙ্গে সিলিন্ডার বহনকারী একটি ট্রাকের মুখেমুখি সংঘর্ষ হয়।
দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে বাস:
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের সাহিবগঞ্জ থেকে দেওঘরের যশিডির উদ্দেশে যাচ্ছিল ওই বাসটি। দুর্ঘটনীর সময় বাসে কমপক্ষে ৪০ জন যাত্রী উপস্থিত ছিলেন। ঘন কুয়াশার জেরেই উল্টোদিক থেকে আসা ট্রাকটির আন্দাজ করতে পারেনি যাত্রীবাহী বাসটি, সোজা ট্রাকের সামনেই ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে গোটা বাসটিই দুমড়ে মুচড়ে যায়। ভিতরে আটকে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করতে পুলিশ ও উদ্ধারকারী দলকে গ্যাস কাটার ব্যবহার করতে হয়।
আরও বড় বিপত্তি হতে পারত:
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বাস ও ট্রাকটি দ্রুতগতিতে আসছিল। কিন্তু গোটা রাস্তা ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় বাস ও ট্রাকটির। তবে আরও বড় বিপত্তি হতে পারত, কারণ ট্রাকটি গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে যাচ্ছিল। যদি সেগুলির বিস্ফোরণ হত, তবে সমস্ত যাত্রীরাই পুড়ে মারা যেতেন।
বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা:
দুর্ঘটনায় এখনও অবধি ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ২৬ জন। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদের উদ্ধার করে পাকুরের একাধিক স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানের সিভিল সার্জন ডঃ আরডি পাসওয়ান বলেন, “এখনও অবধি ১৭টি মৃতদেহ আনা হয়েছে। আহতের সংখ্যা ২৬, তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা অত্যন্ত জটিল।”
সাব ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার অজিত কুমার বিমল জানান, সঙ্কটজনক রোগীদের মধ্যে একজনকে রাঁচীর রাজেন্দ্র ইন্সটিটিউট অব মে়ডিক্যাল সায়েন্সে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বাকিদেরও স্থানান্তকরণের কাজ চলছে। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে. এখনও অবধি ১৫ জন মৃতের পরিচয় জানা গিয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জন সাহিবগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন, তিনজন করে দুমকা ও পাকুরের বাসিন্দা ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গেরও এক বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায়। জেলা প্রশাসনের তরফে মৃতদের পরিবার পিছু এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে।
শোক প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর:
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই টুইটে শোক প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি লেখেন, “ঝাড়খণ্ডের পাকুরে বাস দুর্ঘটনার খবরে অত্যন্ত ব্যথিত আমি। এই দুঃখের সময়ে মৃতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। আহতদের দ্রুত আরোগ্য় কামনা করি। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারকে দুই লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।”
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও। তিনিও টুইট করে মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও টুইট করে মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। আহতদের যাতে সঠিক চিকিৎসা করা হয়, তা নিশ্চিত করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।