Terror Attack India: ‘শামশের’-এর নেতৃত্বে নতুন বছরের আগেই ভারতে হামলার ছক? লস্কর-হিজবুলদের সঙ্গে জোট বাঁধছে পাক সেনা

India Pakistan Relation: এবারে হামলার আঁটঘাঁট তৈরি ISI ও পাক সেনার স্পেশ্যাল ফোর্সের। সেটাই ভারতীয় সেনার মাথাব্যথা। কারণ, এই আর পাঁচটা সাধারণ জঙ্গির চেয়ে সেনা প্রশিক্ষণ পাওয়া প্রাক্তন কমান্ডো-রা জঙ্গলের ভিতর লড়াই ও গা ঢাকা দিতে ওস্তাদ।

Terror Attack India: শামশের-এর নেতৃত্বে নতুন বছরের আগেই ভারতে হামলার ছক? লস্কর-হিজবুলদের সঙ্গে জোট বাঁধছে পাক সেনা
প্রতীকী ছবিImage Credit source: X

| Edited By: Avra Chattopadhyay

Nov 09, 2025 | 5:50 PM

নয়াদিল্লি: অপারেশন সিঁদুরের পর ৬ মাস কেটে গেছে। এবার মরণকামড় দিতে চাইছে পাকিস্তান। পহেলগাঁওয়ের চেয়েও ভয়াবহ হামলা করতে নতুন করে ছক কষছে লস্কর, জইশ-এর মতো জঙ্গি সংগঠন। তবে একটাও গুলি চললে, পাল্টা জবাব গুলিতেই দেওয়া হবে বলে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

নতুন বছরের আগে ভারতে নতুন করে হামলার ছক কষছে পাক জঙ্গিরা। কেন্দ্রীয় এজেন্সির নয়া রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, রীতিমতো আটঘাঁট বেঁধে গত এক মাস ধরে জম্মু-কাশ্মীরে হামলার ঘুঁটি সাজাচ্ছে পাকিস্তান। হামলার তীব্রতা পহেলগাঁওয়ের চেয়েও মারাত্মক হতে পারে। এবারে হামলার জন্য ড্রোনের মাধ্যমে সীমান্তের নিরাপত্তার পর্যবেক্ষণ করেছে লস্কর ও জইশ জঙ্গিরা। তবে পিছনে পাকিস্তানেরও প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। পাক গুপ্তচর সংস্থা ISI ও সেনার স্পেশ্যাল সার্ভিসেস গ্রুপ বা SSG পিছন থেকে মদত দিচ্ছে।

ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন লস্কর ও জইশ জঙ্গি সীমান্ত পেরিয়ে কাশ্মীরে ঢুকে পড়েছে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সন্দেহ। যার মধ্যে একটি LET ইউনিটের নেতৃত্ব দিচ্ছে ‘শামসের’ নামের এক জঙ্গি। যদিও শামসের আসলে ‘কোড’ নেম। ড্রোনের মাধ্যমে আকাশপথে রেকি করছে জঙ্গিরা। গত ১-২ মাস ধরে জম্মু-কাশ্মীরে কয়েকশোর-ও বেশি অপারেশন চালিয়ে সেনা-পুলিশের যৌথবাহিনী বহু অস্ত্র উদ্ধার করতে পেরেছে। এই সব অস্ত্রই ড্রোনের মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে ভারতে ফেলা হয়েছে বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ।

উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলারও মূল চক্রী ছিল পাক সেনার স্পেশ্যাল ফোর্সের প্যারা কমান্ডো হাশিম মুসা। মুসা-সহ পহলগাঁও হামলার মুলচক্রীদের খতম করে সেনা, কিন্তু সেই অভিযানে খানিকটা বেশি সময় লেগেছিল বাহিনীর। কারণ, মুসার মতো প্রাক্তন কমান্ডো-দের পাক এসএসজি-র অত্যন্ত কড়া প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। মুসাও সেই ট্রেনিং পেয়েছে। ‘আনকনভেনশনাল ওয়ারফেয়ার’-এ এরা দক্ষ, সহজে বললে অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও যুদ্ধ চালানোর ক্ষমতা ছিল মুসা-র মতো জঙ্গিদের। বছরের পর বছর পাক রেঞ্জার্সের ট্রেনিং পায় তারা। দিনের পর দিন খাবার না খেয়েও বেঁচে থাকতে পারে। প্রাক্তন পাক এসএসজি কমান্ডোরা আধুনিক সামরিক অস্ত্রের ব্যবহারেও দক্ষ। আর শুধু অস্ত্র কেন, হ্যান্ড টু হ্যান্ড ব্যাটেলেও পাক এসএসজি কমান্ডোরা নিপুণ। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কীভাবে কোনওরকম রসদ ছাড়া, যোগাযোগ ছাড়াও টিকে থাকতে হয়, স্পেশ্যাল ফোর্সের কমান্ডোদের সেই ট্রেনিং দেওয়া হয়। একজন প্রাক্তন প্যারা কমান্ডো হিসাবে মুসাও সেই ট্রেনিং পেয়েছিল। এবার শামসের-নামের যে জঙ্গিকে সেনা ভূস্বর্গে ট্র্যাক করতে পেরেছে, সেও কি মুসার মতোই স্পেশ্যাল ফোর্সের কম্যান্ডো? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সেনার অন্দরমহলে।

এবারের হামলা ‘ফিদায়েঁ’ বা আত্মঘাতী কায়দায় হতে পারে বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। জঙ্গিদের আত্মঘাতী বিস্ফোরণের প্রশিক্ষণ পাক অধিকৃত কাশ্মীরে শিবির করে হয়েছে। অপারেশন সিঁদুরে গুঁড়িয়ে যাওয়া জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাডগুলি আবার সক্রিয় হয়েছে। LET ও জইশ জঙ্গিদের পাশাপাশি পাক বর্ডার অ্যাকশন টিম বা ব্যাট, প্রাক্তন এসএসজি সেনা-রাও হামলায় শামিল হবে এবার। সেই মতোই ছোট ছোট জঙ্গিদের গ্রূপ তৈরি হয়ে রয়েছে। জঙ্গিদের গোপন মেসেজ আদানপ্রদানে আড়ি পেতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে, গত অক্টবরে POK-তে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক সেরেছে জামাত, হিজবুল ও ISI। ওই বৈঠকেই জঙ্গিদের স্লিপার সেল-দের আবার চাঙ্গা হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে কমান্ডো-দের জন্য মাসিক ভাতা চালু করেছে ISI, একইসঙ্গে ভারতীয় সেনা ও নেতাদের উপরে হামলার জন্যও মোটা অঙ্কের ইনাম ঘোষণা করা হয়েছে।

অপারেশন সিঁদুরের পর জঙ্গিরা প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি চরবৃত্তির আদিম মাধ্যমে ফিরে গেছে। কাশ্মীর জুড়ে পাক জঙ্গিদের প্রতি যারা সহানুভূতিশীল তাদের তালিকা ঝাড়াই বাছাই চলছে। যৌথবাহিনীর লাগাতার অভিযানে যাদের মধ্যে অনেকেই এখন ঘরছাড়া। মাদক পাচারের টাকা থেকে তাদের হাতে মোটা অঙ্কের বখরা তুলে দিয়ে এই চরদের আবার সক্রিয় করা হচ্ছে। পাঞ্জাব ও রাজস্থানের মতো সীমান্ত এলাকাতেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করছে জঙ্গিরা। পহলগাও হামলার পর সবে কাশ্মীর স্বাবাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে। পর্যটকরাও আবার ভূস্বর্গমুখী হচ্ছেন। সামনেই বড়দিন-নতুন ইংরেজি বছর। তার আগেই কাশ্মীরকে বেলাইন করতে জঙ্গিরা ঘুঁটি সাজাচ্ছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির এই নয়া রিপোর্টকে এখন ‘ক্রিটিক্যাল ওয়ার্নিং’ হিসাবে দেখছে দিল্লি। নর্দান কমান্ড জুড়ে সেনা ও গোয়েন্দাদের হাই অ্যালার্টে রাখা হয়েছে।