Uttar Pradesh: ৫ ছেলে-মেয়ে কিছুই পেল না, উত্তরপ্রদেশ সরকারকে ১.৫ কোটির সম্পত্তি লিখে দিলেন বৃদ্ধ
Uttar Pradesh man wills his Rs 1.5 Crore to Govt: নিজের ৫ ছেলেমেয়ে থাকতেও যোগী সরকারকে ১.৫ কোটি টাকার সম্পত্তি লিখে দিলেন ৮৫ বছরের বৃদ্ধ।

লখনউ: উত্তর প্রদেশের মুজফফরনগরের বাসিন্দা নাথু সিং-এর বয়স এখন ৮৫। সারা জীবনে সঞ্চয় কম করেননি এই বৃদ্ধ। সব মিলিয়ে সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১.৫ কোটি টাকা! এই সম্পত্তির পুরোটাই তিনি উইল করে লিখে দিয়েছেন উত্তর প্রদেশ রাজ্য সরকারকে। এমনটা নয় যে সংসারে তাঁর কেউ নেই। পাঁচ-পাঁচজন সন্তান আছে তাঁর – এক ছেলে এবং চার মেয়ে। ছেলে সাহারানপুরে থাকেন, পেশায় স্কুল শিক্ষক। চার মেয়েরা সকলেই বিবাহিত। তারপরও কেন তাঁর সব সম্পত্তি সরকারকে লিখে দিলেন বৃদ্ধ? আসলে তাঁর মন ভেঙে গিয়েছে। সন্তান-সন্ততিদের প্রতি তৈরি হয়েছে গভীর অভিমান। সেই অভিমান থেকেই ছেলে-মেয়েদের তাঁর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে, সেই অর্থ সামাজিক কর্মকাণ্ডে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, নাথু সিং-এর ১.৫ কোটি টাকা মূল্যের একটি বসতবাড়ি এবং আরও কিছু জমি রয়েছে। বসতবাড়িটির পাশাপাশি জমিটিও তিনি উত্তর প্রদেশ সরকারের নামে লিখে দিয়েছেন। শর্ত দিয়েছেন, তাঁর মৃত্যুর পরে রাজ্য সরকারকে ওই জমিতে একটি হাসপাতাল বা একটি স্কুল তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে ৮৫ বছর বৃদ্ধ একটি মেডিকেল কলেজে তাঁর দেহ দানও করেছেন। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে তিনি বলেছেন, তাঁর ছেলে-মেয়েদের যেন তাঁর শেষকৃত্যে অংশ নিতে দেওয়া না হয়। উইলে নাথু সিং বলেছেন, গবেষণা এবং অ্যাকাডেমিক কাজে যেন তাঁর শরীর ব্যবহার করা হয়। তার জন্যই তিনি দেহ দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অশীতিপর বৃদ্ধ বলেছেন, “এই বয়সে, আমার ছেলে এবং পুত্রবধূর সঙ্গে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু ওরা আমার সঙ্গে একেবারেই ভাল আচরণ করেনি। সেই কারণেই আমি সম্পত্তি হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
কেন ছেলে-মেয়েদের প্রতি এত অভিমান বৃদ্ধের? জানা গিয়েছে, মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার পর, তাঁর ছেলেও কর্মসূত্রে সাহারানপুরে চলে গিয়েছিলেন। সেখানেই পরিবার নিয়ে থাকা শুরু করেন। বছর খানেক আগে মৃত্যু হয় নাথু সিং-এর স্ত্রীর। তারপর থেকে তাঁদের মুজফফরনগরের বাড়িতে একাই থাকতেন বৃদ্ধ। প্রায় সাত মাস আগে, তিনি তাঁর গ্রামেই অবস্থিত এক বৃদ্ধাশ্রমে চলে আসেন তিনি। তারপর থেকে তিনি সেখানেই থাকেন। বৃদ্ধাশ্রমটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর রেখা সিং বলেছেন, প্রায় ছয় মাস আগে থেকে নাথু সিং তাঁদের প্রতিষ্ঠানের বাসিন্দা। কিন্তু, এই ছয় মাসে কেউ তাঁর সঙ্গে একবারের জন্য়ও দেখা করতে আসেননি। এতে তাঁর হৃদয় ভেঙে গিয়েছে। আর সেই জন্যই তিনি তাঁর সম্পত্তি থেকে ছেলে-মেয়েদের বঞ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্থানীয় এলাকার সাব-রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, তাঁরা নাথু সিং-এর হলফনামা পেয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর ইচ্ছাপত্র কার্যকর করা হবে।
