Climate Change: ২০৩০ সালে পেটে ভাত থাকবে না ৯ কোটি ভারতীয়র! সতর্ক করলেন বিজ্ঞানীরা

Climate Change: বৈশ্বিক খাদ্য নীতি রিপোর্ট ২০২২ অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষিজ উৎপাদন হ্রাস এবং খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলা ব্যহত হওয়ার জেরে, ২০৩০ সালের মধ্যেই আরও ৯.০৬ কোটি ভারতবাসী অনাহারের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

Climate Change: ২০৩০ সালে পেটে ভাত থাকবে না ৯ কোটি ভারতীয়র! সতর্ক করলেন বিজ্ঞানীরা
২০৩০ সালের মধ্যেই আরও ২৩ শতাংশ ভারতবাসীকে লড়তে হবে অনাহারের বিরুদ্ধে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 19, 2022 | 1:17 PM

নয়া দিল্লি: গত কয়েক দশক ধরেই জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ নিয়ে সতর্ক করে এসেছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। তবে, বর্তমানে একেবারে চোখের সামনে প্রকট হচ্ছে সেই বিপর্যয়। বর্তমান সময়ের কথাই ধরা যাক, একদিকে একের পর এক তাপপ্রবাহে জ্বলে যাচ্ছে পশ্চিম ভারত। অন্যদিকে, বন্যায় ভেসে যাচ্ছে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি। আর এই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে কৃষিজ উৎপাদনের, ব্যহত হচ্ছে খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলা। এর জেরে ২০৩০ সালের মধ্যেই আরও ২৩ শতাংশ বেশি ভারতবাসীকে অনাহারের মুখে পড়তে হবে। আন্তর্জাতিক খাদ্য নীতি গবেষণা কেন্দ্রের বৈশ্বিক খাদ্য নীতি রিপোর্ট ২০২২-এ (The Global Food Policy Report 2022)-এর গবেষণায় এমনই ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে এসেছে।

এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব না থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে ৭.৩৯ কোটি ভারতবাসীকে যুঝতে হত জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে। তবে, গবেষকদের দাবি, এর সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাবকে যদি ধরা হয়, সেই ক্ষেত্রে ৯.০৬ কোটি ভারতবাসী (২২.৬৯ শতাংশ বেশি) অনাহারের ঝুঁকিতে পড়বে। ভারতের খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ মাপা হয় ‘এগ্রিগেট ফুট প্রোডাকশন’ সূচক দিয়ে। এই সূচকের আওতায় খাদ্যশস্য, মাংস, ফল, শাকসবজি, তৈলবীজ, ডাল – সবই রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তন না থাকলে, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এই সূচক ২০৩০ সালে থাকত ১.৬২৭-এ। তবে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ধরলে এই সূচক নেমে যাবে ১.৫৪৯-তে।

এই অনুমানগুলি করা হয়েছে ইমপ্যাক্ট (IMPACT) মডেল অনুসারে। কী এই ইমপ্যাক্ট মডেল? জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক কৃষি বাজারের অনুকরণ করে এই মডেল। সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক, জল ব্যবস্থা এবং ফসল উৎপাদনের মডেলগুলি সমীক্ষা করে এই মডেলটি তৈরি করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে ভারতব্যাপী তাপমাত্রার বৃদ্ধির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। অনুমান করা হয়েছে, ২১০০ সালের মধ্যেই ভারতের গড় তাপমাত্রা ২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। একই সময়ে গ্রীষ্মকালে তাপপ্রবাহের পরিমাণ তিন থেকে চারগুণ বেড়ে যাবে বলে অনুমান করা হয়েছে।

গবেষকদের আশঙ্কা, এই গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির বড় প্রভাব পড়তে চলেছে কৃষিজ উৎপাদনে। তাদের দাবি, তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পর্যায়ক্রমে কমবে ভারতের কৃষি ফলন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৪১ থেকে ২০৬০ সালের মধ্যে কৃষিজ উৎপাদন ১.৮ থেকে ৬.৬ শতাংশ কমে যেতে পারে। ২০৬১ থেকে ২০৮০ সালের মধ্যে কৃষিজ উৎপাদন ৭.২ থেকে ২৩.৬ শতাংশ পর্যন্ত কমার আশঙ্কা রয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ একেবারে শিয়রে এসে হাজির হওয়ার পর, বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ দেশই এর মোকাবেলায় বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। তবে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা, সতর্ক করেছেন এরপরও পৃথিবীর বেশ কিছু অংশে তীব্র তাপপ্রবাহ চলতেই থাকবে। কারণ, সেই জায়গাগুলির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা আরও বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি সহজে দূর হবে না। ভারতেও এই জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব ক্রমে প্রকট হচ্ছে। রাজধানী দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন অংশ জুড়ে চলছে চাপপ্রবাহ। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৫০ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই। অন্যদিকে, অসম-মণিপুরের মতো উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যা। পাশাপাশি, বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে বছর বছর বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা।