এ বার কি ‘নরম’ হবেন নমো? প্রধানমন্ত্রীর মাকে চিঠি লিখলেন অন্নদাতা
চিঠিতে হরপ্রীত সিং অনুরোধ করেছেন, হীরাবেন যেন নিজের ছেলেকে আইন প্রত্যাহারের কথাটি বুঝিয়ে বলেন।
নয়া দিল্লি: প্রায় দুই মাস ধরে কৃষি আইন প্রত্যাহারের আবেদন করা হলেও প্রধানমন্ত্রী কথা শোনেননি, তাই বাধ্য হয়ে তাঁর মায়ের শরণাপন্ন হলেন আন্দোলনকারী এক কৃষক। নিজেদের দুঃখ-কষ্টের কথা উজাড় করে দিয়ে চিঠিতে অনুরোধ করলেন তিনি যেন কৃষি আইন (Farm Laws) প্রত্যাহার করার জন্য ছেলেকে বোঝান।
শতবর্ষ ছুঁতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)র মা হীরাবেন মোদী (Heeraben Modi)। প্রধানমন্ত্রীকে বারংবার কেন্দ্রের আরোপিত তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হলেও কোনও সুরাহা মেলেনি। প্রায় দু’মাস ধরে দিল্লির প্রবল ঠান্ডার মাঝেই আইন প্রত্যাহারের দাবিতে পথে বসে রয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকরা। কেন্দ্রের সঙ্গে ১১ বার বৈঠক হলেও সেখানে আইন প্রত্যাহার নয়, স্থগিত রাখার প্রস্তাবই দেওয়া হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে এবার প্রধানমন্ত্রীর মায়ের দারস্থ হলেন আন্দোলনকারী কৃষক।
পঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার বাসিন্দা হরপ্রীত সিং প্রধানমন্ত্রী মা হীরাবেন মোদীকে হিন্দিতে যে চিঠিটি লিখেছেন, তাতে নিজেদের দুঃখ দুর্দশার কথাই তুলে ধরেছেন। একইসঙ্গে তিনি অনুরোধ করেছেন, হীরাবেন যেন নিজের ছেলেকে আইন প্রত্যাহারের কথাটি বুঝিয়ে বলেন। চিঠিতে হরপ্রীত সিং লেখেন, “অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আপনাকে এই চিঠিটি লিখছি। আমি নিশ্চয়ই জানেন, যাঁরা সমগ্র দেশের খাবার সংস্থান করেন, সেই অন্নদাতারাই প্রবল শীতের মধ্যেও দিল্লির সড়কে শুতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষি আইনের কারণে। এদের মধ্যে ৯০-৯৫ বছরের বৃদ্ধরা যেমন রয়েছেন, তেমনই শিশু ও মহিলারাও রয়েছেন। প্রবল ঠান্ডায় তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, কয়েকজন মারাও গিয়েছেন। আমাদের সকলের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বিষয়টি।”
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে রাজধানীতে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান, আটক ৫
তিনি আরও যোগ করে লেখেন, “অম্বানি, আদানি সহ কয়েকজন কর্পোরেটের স্বার্থসিদ্ধির জন্য পাশ করা এই তিনটি কৃষি আইনের কারণেই দিল্লি সীমান্তে শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলন করা হচ্ছে।” চিঠির শেষে তিনি লেখেন, “আমি অনেক আশা নিয়ে আপনাকে এই চিঠিটি লিখছি। আপনার ছেলে নরেন্দ্র মোদী আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি যে কৃষি আইনটি পাশ করেছেন, তা প্রত্যাহার করার ক্ষমতাও রয়েছে তাঁর। আমি মনে করি, সকলের অনুরোধ খারিজ করলেও কেউ নিজের মায়ের অনুরোধ ফেলতে পারেন না। একমাত্র মা-ই তাঁর সন্তানকে আদেশ দিতে পারেন। আপনি যদি প্রধানমন্ত্রীকে এই নির্দেশ দেন, তবে গোটা দেশ আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে।”
চিঠির লেখক হরপ্রীত সিং নিজেও বিগত দেড় মাস ধরে দিল্লি সীমান্তে আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করছেন। কদিন আগে সিমলায় বিনা অনুমতিতে আন্দোলন করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়, যদিও কিছুক্ষণ পরেই তাঁকে জামিনে মুক্তিও দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সীমান্ত সমস্যা নিয়ে নতুন বছরে ফের মুখোমুখি ভারত-চিন, মিলবে সমাধান?