মুম্বই: আরিয়ান খান মাদক মামলায় (Aryan Khan Drug Case) নিত্যদিন আসছে নতুন মোড়। এবার চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন এক সাক্ষীই। বিজয় পাগারে (Vijay Pagare) নামক ওই সাক্ষীর দাবি, মাদক মামলায় ইচ্ছাকৃতভাবেই ফাঁসানো হয়েছে শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খান(Aryan Khan)-কে। গত ৪ নভেম্বর মুম্বই পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের (Special Investigation Team) কাছে বয়ান দিতে গিয়ে তিনি এই কথা জানান।
বিজয় পাগারে নামক ওই ব্যক্তির দাবি, গত ২ অক্টোবর মুম্বইয়ের প্রমোদতরীতে যে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল এনসিবি (NCB), তা আগে থেকেই পরিকল্পনা করা ছিল। আরিয়ান খান ওই প্রমোদতরীতে উপস্থিত থাকবে জেনেই গোটা পরিকল্পনাটি বানানো হয়। শাহরুখ খান(Shahrukh Khan)-র থেকে মোটা টাকা আদায়ের লক্ষ্যেই আরিয়ান খানকে ফাঁসানো হয়েছিল বলে বয়ান দেন তিনি।
সুনীল পাটিল, যিনি এনসিবিকে প্রমোদতরীতে মাদকের আসর বসার খবর দিয়েছিলেন, তার সঙ্গেই বিগত কয়েক মাস ধরে থাকছিলেন তিনি, এমনটাই দাবি বিজয় পাগারের। তিনি সুনীলের কাছ থেকে টাকা পেতেন, সেই কারণে একসঙ্গে থাকছিলেন। সেই সময়ই তিনি গোটা ঘটনার পরকল্পনা সম্পর্কে জানতে পারেন।
শনিবারই মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা মোহিত কম্বোজ দাবি করেছিলেন যে, গোটা ঘটনার “মাস্টারমাইড” সুনল পাটিলই। তাঁর সঙ্গে ন্যাশনালিষ্ট কংগ্রেস পার্টির নেতাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী অনিল দেশমুখের ছেলে হৃষিকেশ দেশমুখের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার দাবিও করেছে বিজেপি। সরকারি দফতরে কাকে কোথায় বদলি করা হবে, সেটাও নাকি সুনীলই নিয়ন্ত্রণ করেন।
বিজেপির নেতার আরও অভিযোগ, এই মামলার অন্যতম সাক্ষী কিরণ গোসাভিও সুনীলেরই লোক। এটা বিজেপি-র বিরুদ্ধে একটা বড় ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, সুনীলের সঙ্গে তাঁদের কী সম্পর্ক, তা স্পষ্ট করতে হবে এনসিপি নেতাদের।
মুম্বই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিট(SIT)-র সামনে বিজয় পাগারে জানান, তিনি আদতে মহারাষ্ট্রের ধুলের বাসিন্দা হলেও বিগত কয়েক মাস ধরেই সুনীলের সঙ্গে থাকছিলেন। ২০১৮ সালে কিছু কাজের জন্য তিনি সুনীলকে টাকা ধার দিয়েছিলেন, সেই টাকা এখনও না মেটানোয় তিনি সুনীলকে অনুসরণ করতে শুরু করেন। এর আগে আহমেদাবাদ ও সুরাটেও তিনি সুনীলের সঙ্গে ছিলেন। মুম্বইয়ের ললিত ও ফরচুন হোটেলেও একইসঙ্গে ছিলেন তারা।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকেই নভি মুম্বইয়ের ফরচুন হোটেলে থাকছিলেন সুনীল পাটিল। ওই হোটেলেই আবার কেপি গোসাভির নামেও একটি ঘর বুক করা ছিল। উল্লেখ্য, কেপি গোসাভির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি শাহরুখ খানের ম্যানেজার পুজা দাদলানির কাছ থেকে প্রথমে ২৫ কোটি টাকা চেয়েছিলেন আরিয়ান খানকে মাদক মামলা থেকে নিষ্পত্তি দেওয়ার জন্য। পরে তা ১৮ কোটিতে রফা হয়, এরমধ্যে ৮কোটি টাকাই এনসিবি অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে দেওয়ার কথা ছিল।
বিজয় পাগারের দাবি, কর্ডোলিয়া নামক প্রমোদতরীতে তল্লাশি অভিযান চালানোর কয়েকদিন আগে হোটেলে মনীশ ভানুশালী, কেপি গোসাভি ও সুনীল পাটিল দেখা করেন। সেখানের মনীশ ভানুশালী সুনীল পাটিলকে বলেন, “অনেক বড় কাজ হয়ে গেল। আমাদের আহমেদাবাদ চলে যেতে হবে। কিন্তু পাগারেকে সঙ্গে আনবে না।”
৩ অক্টোবর মনীশ ভানুশালী ফের হোটেলে আসেন এবং বিজয় পাগারেকে দেখে তাদের সঙ্গে যেতে বলেন নিজের বকেয়া টাকা উদ্ধারের জন্য। এরপরই তাঁকে এনসিবির অফিসে নিয়ে আসা হয়। ওই সময় ভানুশালী ফোনে কারোর সঙ্গে কথা বলছিলেন। বার্তালাপে স্যাম ডি’সুজা, পুজা দাদলানির নামও উল্লেখ করা হয় বলে দাবি। কেপি গোসাভির ফোন সুইচ অফ আসায়, সে টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে, এই সন্দেহের কথাও ফোনালাপ থেকেই শুনতে পান বলে জানান বিজয় পাগারে।