নয়া দিল্লি: জাতীয় রাজনীতিতে সংগঠন বিস্তারের পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। আর সেই সঙ্গে চলছে একক অস্তিত্ব প্রমাণের লড়াই। এই সবের মধ্যেই মঙ্গলবার দিল্লিতে পৌঁছে যান তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। দলীয় সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের বাকি দিনগুলিতে দলের রণকৌশল কী হবে, তা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন অভিষেক। সংসদীয় রাজনীতির নীল নকশা তৈরি করে দেন।
মঙ্গলবার দিল্লিতে তৃণমূল সাংসদদের ওই বৈঠক সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সূত্রের খবর, মূলত দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে আজকের বৈঠকে। প্রথমটি খুব স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি বিরোধিতা। আগামী দিনে সংসদের ভিতরে বিজেপির বিরুদ্ধে আরও বেশি করে সরব হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, আগামী দিনে কেন্দ্রের ট্রেজ়ারি বেঞ্চের বিরুদ্ধে আরও বেশি করে সরব হতে চলেছেন তৃণমূল সাংসদরা।
আর দ্বিতীয় যে বিষয়টি নিয়ে আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বিরোধী ঐক্যের টালমাটাল পরিস্থিতি। মঙ্গলবারের বৈঠকে যা আলোচনা হয়েছে, তার থেকে এটা স্পষ্ট যে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলে দূরত্ব আগামী দিনে আরও বাড়তে চলেছে। দলীয় সাংসদদের অভিষেক স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, তাঁরা যেন কংগ্রেসের মুখ চেয়ে না থাকেন। যে কোনও ইস্যুতে কংগ্রেস কী করবে, তার জন্য অপেক্ষা করে বসে না থাকার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাফ কথা, কংগ্রেস একটি পৃথক দল এবং তৃণমূল একটি পৃথক দল। কংগ্রেসের কী রণকৌশল হবে, তার উপর নির্ভর করে তৃণমূলের রণকৌশল করা হবে – এটা কখনোই হতে পারে না। তৃণমূল একটি সম্পূর্ণ পৃথক রাজনৈতিক সত্ত্বা। সেই কারণে তৃণমূলের রণনীতিও হবে বাকিদের থেকে আলাদা। তাই প্রত্যেক সাংসদকে নিজস্ব স্ট্র্যাটেজি নিয়ে এগোনোর বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রতি সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকে কংগ্রেসের থেকে কিছুটা দূূরত্ব রেখেই চলতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। বিজেপির বিরোধিতা তৃণমূলও করছে বটে। কিন্তু একা। একা কারণ, বাকি বিরোধি দলগুলির বেশিরভাগই কংগ্রেসের সঙ্গেই চলছে। সব বিরোধী দল একসঙ্গে ওয়াক আউট করছে। অথচ তৃণমূল বসে রয়েছে। পরে অবশ্য বেরিয়ে এসে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে।
আপাতত জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ করে সংসদীয় রাজনীতিতে, কার্যত একাই লড়ছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডের এই বার্তা তৃণমূলের সাংসদদের কতটা চাঙ্গা করতে পারল, সেই দিকেই এখন তাকিয়ে থাকছেন জাতীয় রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।
আরও পড়ুন: TMC Meeting in Delhi: অভিষেকের বৈঠকে গরহাজির! শো-কজ় মিমি-নুসরতকে